বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের অধিকার সুরায় জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকার তিগ্রস্থ জনগোষ্ঠীর টেকসই জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দিতে না পারলে শহর এবং গ্রামের বৈষম্য বাড়তেই থাকবে। যেটি জাতীয় উন্নয়ন নীতিমালার বিরোধী বলেও তারা উল্লেখ করেন।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যা- ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি)’র উদ্যোগে এবং ডিয়াকোনিয়া ও রিয়েলিটি অব এইড’র সহযোগিতায় এক আলোচনাসভায় এ সব কথা বলেন তারা।
সিপিআরডি’র নির্বাহী প্রধান মো. শামছুদ্দোহার সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টে’র নির্বাহী প্রধান আমিনুর রসূল বাবুল, সুন্দরবন ও উপকূল সুরা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, ইপসা’র পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান প্রমুখ। সভায় গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন সিপিআরডির রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অফিসার আল ইমরান।
সভায় মো. শামসুদ্দোহা বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে বাংলাদেশ ‘ছোট বড়’ অনেক প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সেটি কাঙ্খিত সেবা প্রদান করবে কিনা সেটি নির্ভর করে প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং প্রকল্প পরিচালনা ও রণাবেণ ধাপগুলোর যথোপযুক্ত ভাবে সম্পাদন হয়েছে কিনা তার উপর। প্রকল্পের সকল স্তরে প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন এলাকার জনগোষ্ঠী, উপকারভোগী জনগোষ্ঠী এবং বিভিন্ন অংশীজনদের যথোপযুক্ত অংশগ্রহণ ও পর্যবেণের সুযোগ না থাকলে প্রকল্পগুলো শেষ পর্যন্ত সফলতার মুখ দেখে না বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। ‘টেকসই পানি সরবরাহ প্রকল্প’ এবং ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বর্ধিতকরণ প্রকল্প’ বিশ্লেষণ করে প্রকল্পগুলোতে অংশীজনদের যথোপযুক্ত সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। প্রকল্পগুলোর পরিবেশগত তি এবং সেই তি পুষিয়ে নেওয়ার বিকল্প পদ্ধতি বিষয়েও মনোযোগ নজরে আসেনি।
বাপা নেতা মিহির বিশ্বাস বলেন, সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে না পারলে সে উন্নয়ন দেশের সকল মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। নাগরিক সমাজের প থেকে বরাবরই বন ও পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়নের বিরোধিতা করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশকে ভেবে-চিন্তে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই ধরনের গবেষণা দেশের উন্নয়নকে সঠিক পথে পরিচালনা করবে বলে মনে করেন আমিনুর রসূল। তিনি বলেন, সিপিআরডির গবেষণায় উঠে এসেছে ‘টেকসই পানি সরবরাহ প্রকল্প’ এবং ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বর্ধিতকরণ প্রকল্প’ দুটি প্রণয়নে নদী ও জলাভূমি রার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নে জলাশয়ের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে পদক্ষেপ গহণের আহ্বান জানান তিনি।
সভায় বক্তারা বলেন, আমরা নাগরিক সমাজ উন্নয়নের বিরোধী নই। আমরা চাই উন্নয়ন কাজ অব্যাহত থাকুক কিন্তু সেই উন্নয়ন যেন আমাদের ভবিষ্যতকে নষ্ট করে না দেয়। গবেষণার ফলাফলগুলোকে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তারা।
সভা শেষে ডিআরইউতে একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বোতলকে নিরুৎসাহিত করার জন্য সিপিআরডির পক্ষ থেকে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিকে একটি পানি পরিশোধক যন্ত্র হস্তান্তর করা হয়। ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হাসান সোহেল উপস্থিত থেকে তা গ্রহণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন