দেশের বিভিন্ন জেলায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ৬টি টেক্সটাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে এ টেক্সটাইল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেন তিনি। রাজধানী আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠান হয়।
নতুন উদ্বোধন করা ৬টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট হচ্ছে, ‘শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ’; ‘শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, গৌরনদী, বরিশাল’; ‘শহীদ কামারুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মান্দা, নওগাঁ’; ‘বেগম আমিনা মনসুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ’, ‘ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট’ এবং ‘শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মাদারগঞ্জ, জামালপুর’।
জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন ও বাজার খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যারা পোশাক এবং তা রফতানি নিয়ে কাজ করছেন তাদের নতুন বাজার খুঁজতে হবে। বিভিন্ন দেশের পছন্দ ভিন্ন ভিন্ন হয়। তা মাথায় রেখে নতুন পণ্য তৈরি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের পুরনো ঐতিহ্যের সঙ্গে নতুন চিন্তাধারার সম্মিলন ঘটানোরও আহŸান জানিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে দেশে একটি ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ফ্যাশন ডিজাইন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন সময়ে কোন রঙ ও ডিজাইন ব্যবহার হবে, কোনটার চাহিদা বেশি এটা একটা ঘ‚র্ণায়মান অবস্থা এবং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। তাই এই পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের গার্মেন্ট শিল্পের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট বা রফতানিকারক তাদের আমি অনুরোধ করবো, আপনাদের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করতে হবে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পোশাক ব্যবহার হয়ে থাকে। সেভাবে আমরা নতুন বাজার খুঁজে বের করতে পারি।
আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার বড় বড় ভ‚মিকা রাখবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এজন্য সরকার দেশের জনগণকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে। দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তুলছে। বাংলাদেশের যুব সমাজ অত্যন্ত দক্ষ। তাদের একটু প্রশিক্ষণ দিলেই তারা উন্নতমানের কাজ করতে পারে। তিনি বলেন, দ্রæততর সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বস্ত্র অধিদফতরে ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রবর্তন করা হয়েছে এবং ই-নথির মাধ্যমে বস্ত্রশিল্পের উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর ফলে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা এখন সহজে এবং স্বল্প সময়ে তাদের প্রয়োজনীয় সব সেবা গ্রহণ করতে পারছেন।
পাশাপাশি বস্ত্র খাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য তার সরকার বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) ১৬টি বন্ধ মিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে (পিপিপি) চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতীক) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন