ইউক্রেনে রুশ হামলার বর্ষপূর্তিতে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে ২ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে। যতক্ষণ না ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে না পারে, ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত গঠন করতে পারে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদের পাশে থাকবো।’
নতুন এই সামরিক সহায়তার প্যাকেজে রয়েছে হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (হিমার্স), আর্টিলারি রাউন্ড, ড্রোন, নিরাপদ যোগাযোগ সরঞ্জাম। সামরিক সহায়তার প্যাকেজ নিয়ে এন্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, 'যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র ও অংশীদারদের সাথে নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা সহায়তার প্রয়োজনীয়তা মেটাতে যতদিন সময় লাগে ততদিন পর্যন্ত সক্ষমতা প্রদান করতে কাজ চালিয়ে যাবে।'
এদিকে রাশিয়ার ভেতরে এবং বাইরে ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইউক্রেইন যুদ্ধে সমর্থন দেওয়া ১০০ টির বেশি প্রতিষ্ঠানকে নিশানা করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার যুদ্ধ চালানোর সক্ষমতা কমাতে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি দেশটির বিরুদ্ধে শুল্ক এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের সেক্রেটারি জেনেট ইয়েলেন শুক্রবার সকালে মার্কিন গণমাধ্যম এমএসএনবিসিকে বলেন, ‘রাশিয়ান ব্যক্তি, সংস্থা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তারা যেন ফাঁকি দিতে না পরে সেজন্য আমরা নিষেধাজ্ঞাগুলোকে আরও জোরদার করব।’
জেনেট ইয়েলেন আরও বলেছেন, যতদিন এই যুদ্ধ চলবে, ততদিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়ার অর্থনীতি এবং প্রতিরক্ষা শিল্পে "উল্লেখযোগ্য প্রভাব" ফেলছে। তিনি বলেন, 'আমরা তাদের যুদ্ধ করার জন্য যে রাজস্বের প্রয়োজন তা থেকে তাদের বঞ্চিত করেছি।' ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হলো। গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক পিপল’স রিপাবলিক ও লুহানস্ক পিপল’স রিপাবলিককে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি এবং সেই সঙ্গে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে রুশ সেনাবাহিনীর রাজধানী কিয়েভ অভিমুখে অভিযান এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরোধ লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সংঘাত।
এক বছর পরও পুরোদমে চলছে এই সংঘাত। এখন পর্যন্ত থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধে শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহসহ সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো। অন্যদিকে কারো সহযোগিতা ছাড়াই একাই অভিযান অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন