নতুন দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের হেড কোচ হয়ে আবারও এসেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। আগেরবার সিনিয়রদের সঙ্গে তার বিরোধের বিষয়টি ছিল ‘ওপেন সিক্রেট’। দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব দেবার পর তার কাছে বিসিবির প্রধান চাওয়া একটি স্বাস্থ্যকর ড্রেসিংরুমের। পোড় খেয়ে ‘খাঁটি’ হয়ে ফেরা এই অভিজ্ঞ লঙ্কানও বোর্ডকে আস্বস্ত করেছেন, আটা তিনি ঠিক করে দেবেন। তবে অনেক কানাঘুষা থাকলেও সমস্যাটা আসলে কোথায় তা একটি ‘সিক্রেট’ হয়েই ছিল ক্রিকেটপাড়ায়। অবশেষে তা প্রকাশ্যে আনলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। বেশ অনেকদিন ধরেই টানপোড়েন চলছে বাংলাদেশের শীর্ষ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও সফলতম ওপেনার তামিম ইকবালের মধ্যে। এই কারণে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুম আর স্বাস্থ্যকর না।
গতকাল ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ বোর্ড সভাপতি নাজমুলের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। তাতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে উঠে আসে সাকিব-তামিমের সম্পর্কের ইস্যু। যোগাযোগ করা হলে পরে বিসিবি সভাপতি জানান, এই দুজনের বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। নাজমুল জানান দুই শীর্ষ ক্রিকেটারের বিরোধে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দলের পরিবেশ, ‘এটা স্বাস্থ্যকর ড্রেসিংরুম না, এটা আপনাকে নিশ্চিত করে বলতে পারি। এই জিনিসটা (সাকিব-তামিমের মধ্যে ফাটল) এমন না যে আমি মেটানোর চেষ্টা করিনি। আমি তাদের দুজনের সঙ্গেই কথা বলেছি, এবং বুঝতে পেরেছি এই মুহূর্তে এটা সহজে সমাধান করার মতো বিষয় না। এটা হচ্ছে আমার পর্যবেক্ষণ। আমরা দুজনকেই একটা বার্তা দিয়েছি- “আমরা জানি না তোমাদের মধ্যে কি আছে। কিন্তু কোন খেলা বা সিরিজের সময় এই সমস্যা যেন প্রকাশ্য না হয়।” তারা দুজনেই এটা নিশ্চিত করেছে খেলার সময় এটা হবে না।’
খেলার বাইরে সাকিব ও তামিমের মধ্যে স্বাভাবিক কথাবার্তা চালু নেই। কয়েকদিন আগে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বিএসজেএর অ্যাওয়ার্ড নাইটে হাজির হলেও কেউ কারো সঙ্গে সৌজন্যতা বিনিময় করেননি। খেলার মাঠে বোলিং, ফিল্ডিং বা ব্যাটিংয়ে জুটির সময় প্রয়োজনীয় কথা বলতে দেখা গেছে দুজনকে। বিসিবি সভাপতি চান ড্রেসিংরুমেও তারা যেন থাকেন স্বাভাবিক। খেলা শেষ হয়ে গেলে নিজেরা কি করবেন সেটা তাদের একান্ত বিষয়, ‘তাদের খেলার মাঠে ও ড্রেসিংরুমে কথা বলতে হবে। ড্রেসিংরুমের আবহও খুব খারাপ ছিল কিন্তু এখন কিছুটা উন্নত হচ্ছে। এই সিরিজ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে) থেকে আমি এটার বদল চাই (তাদের সম্পর্কের)। অন্তত ড্রেসিংরুমে। খেলার বাইরে তারা কি করবে তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই।’
সাকিব-তামিম বিরোধ ছাড়াও দলের ভেতর একাধিক গ্রুপের অস্বস্তি খোঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। এই মুহূর্তে তার উদ্বেগের জায়গাও সেটাই, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই মুহূর্তে বড় সমস্যা হচ্ছে গ্রুপিং, এটা বাস্তবতা। আমার অন্য কোন কিছু নিয়ে সমস্যা নাই। আমি এই গ্রুপিং নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। মাত্র কদিন আগে আমি এটা জানতে পেরেছি। আমরা ভালো আগামী চাইলে এটার শেষ দেখতে চাই। সবাইকে বুঝতে হবে গ্রুপিং করার জায়গা এখানে নাই।’ পরে আরো কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিসিবি প্রধান বলেন, ‘যদি নতুন করে কেউ গ্রুপিং বা নিজেদের দ্বন্দ্ব মাঠের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে তাহলে তাকে দল থেকেই বের করে দেয়া হবে। হাথুরুসিংহেও এগুলো টলারেট করবে না।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন