ছারছীনা দরবার শরীফের হযরত পীর ছাহেব কেবলা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লুাহ বলেছেন, আমরা মুসলমান। আমাদেরকে মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর ইবাদত বন্দেগী করতে দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন। তাঁর ইবাদত বন্দেগী করবো কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণ ও অনুকরনের মাধ্যমে। অনুসরণ করবো হক্কানী আলেমদের দেখে দেখে। কারণ হক্কানী আলেমগণ নবীদের ওয়ারিশ তথা উত্তরাধীকারী। শুধুমাত্র লম্বা জামা পাগড়ী থাকলেই হক্কানী আলেম হয় না। কারণ আজকাল হক্কানী আলেম নামধারী বহু ধোকাবাজ বের হয়েছে। রাসূল (সা.) বিভিন্ন হাদীসে এদের সম্পর্কে তার উম্মাতকে সজাগ ও সতর্ক করেছেন- এক হাদীসে বলেছেন এদের মুখের ভাষা চিনির চেয়ে মিষ্টি কিন্তু কলবগুলো বাঘের মত হিংস্র। অপর হাদীসে রাসূলে পাক (সা.) এরশাদ করেছেন- আখেরী জামানায় এমন একদল আলেম বের হবে যারা পূর্ব জামানায় লোকদেরকে তথা ছাহাবায়ে কেরাম ছলফে ছালেহীন, মুজতাহেদে শরীয়ত ও তরীকতকে অভিশাপ করবে, তাদেরকে গালি দিবে। সেই যামানা আসছে। পূর্ববর্তী আলেমগণ, মাশায়েখে তরীকত আমাদেরকে হাদীসের আলোকে যে সমস্ত আমল করতে নির্দেশ করেছেন এখন একদল আলেম নামধারী ব্যক্তিবর্গ বলতেছে এগুলো সব জাল হাদীস। তাহলে আমাদের ছলফে ছালেহীন পীর মাশায়েখ কি মুর্খ ছিলেন? জাহেল ছিলেন?।গতকাল রবিবার (২৬ফেব্রুয়ারী) রাতে ছাগলনাইয়া পৌরসভার পূর্ব ছাগলনাইয়া
বাগানবাড়ি খানকায়ে ছালেহীয়া মোহেব্বীয়া দীনিয়া কমপ্লেক্সের উদ্যোগে ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
পীর ছাহেব বলেন, আজকাল অনেক মানুষকে দেখা যায় যাদের লেবাছে পোষাকে মনে হয় ফেরেশতা অথচ তারা মানুষকে বলছে রাসূল (সা.) হায়াতুন্নবী নয় মুর্দা নবী। অথচ রসূল (সঃ) হায়াতুন্নবী। আবার কিছু কিছু লোক বলতেছে রাসূল (সা.) গুনাহ করতে পারে। রাসূল (সা.) কে মুর্দা নবী জেনে নামাজ, রোজা সহ ইবাদত বন্দেগী করলে সেই নামাজ রোজা কি কবুল হবে? সুতরাং সকলকে সাবধান হতে হবে। সজাগ থাকতে হবে। অন্ধ বিশ্বাসী হওয়া যাবে না।
পীর ছাহেব কেবলা আরও বলেন- আমাদের জীবনে চলার পথে হক্কানী আলেমের কোন বিকল্প নেই। আর যদি হক্কানী আলেম থাকে তাহলে দ্বীন থাকবে, আর যদি হক্কানী আলেম না থাকে তাহলে দ্বীন থাকবে না। বে আমলী আলেম দ্বারা কখনও দ্বীন কায়েমের আশা করা যায় না। কারণ তার মধ্যেই তো দীনের অভাব, তাকে অনুসরণ করলে কিভাবে দ্বীন কায়েম হবে। বাগানবাড়ি খানকায়ে ছালেহীয়া মোহেব্বীয়া দীনিয়া কমপ্লেক্সের সভাপতি, পোর্টল্যান্ড গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মজুমদার'র সভাপতিত্বে কমপ্লেক্সের পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ছারছীনা দরবার শরীফের পীর শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লুাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা সাব্বির আহমেদ মোমতাজী, ফেনী জেলার সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, ছারছীনা দারুস সুন্নাহ নেছারিয়া আলিয়া মাদ্রাসার মোহাদ্দিস মাওলানা রুহুল আমিন আফসারি।ছারছীনা জামেয়া নেছারিয়া মাদ্রাসার মোহাদ্দেস মাওলানা মুফতি হায়দার হোসাইন, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ আল মাহমুদ, বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান মোহাদ্দিস মাওলানা আবু সালেহ পাটোয়ারী প্রমূখ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা সাব্বির আহমেদ মোমতাজী বলেছেন ছারছীনা দরবার এদেশের দ্বীনি শিক্ষার জন্য হাজার হাজার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে ধর্মীয় এবং সামাজিকভাবে আমাদেরকে ইসলামী ভাব গাম্ভীর্য বজায় রাখার যে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এজন্য আমি ছারছীনা দরবার শরীফের পীর সাহেব কেবলাকে মোবারকবাদ জানাই। সাথে সাথে তিনি সকলকে দ্বীনিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার সার্বিক সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং সন্তানদেরকে নীতি-নৈতিকতা শিক্ষায় গড়ে তোলার জন্য অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
কুরআন তেলাওয়াত, হামদ-নাত, দরূদ শরীফ, ক্বাসীদা, মর্ছিয়া ও মিলাদ-ক্বিয়াম শেষে হযরত পীর ছাহেব কেবলা রাতে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন এবং বাগানবাড়ী দ্বীনিয়া মাদ্রাসায় সহযোগিতা করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান। প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপী মুনাজাতে হাজার হাজার মুসল্লিদের ক্রন্দনে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে যায় সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন