কিলিয়ান এমবাপ্পে করলেন জোড়া গোল। দুই গোলেই অবদান রাখলেন লিওনেল মেসি। তিনি নিজেও করলেন গোল, তাতে আবার অবদান এমবাপ্পের। সত্যি কথা বলতে সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারাও কখনো এতটা সুষম হয় না, গতপরশু রাতে ফ্রান্সে যতটা সুষম ছিল মেসি-এমবাপ্পের গোল ভাগাভাগি। এদিন লিগ ওয়ানের ফরাসি ‘লো ক্লাসিকো’তে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মার্শেইয়ের বিপক্ষে পিএসজির জয় ৩-০ ব্যবধানেই। প্যারিসের জায়ান্টদের দারুন জয়ের রাতে মহাতারকা মেসি স্পর্শ করেছেন আরেকটি মাইলফলক। ক্লাব ফুটবলে ৭০০তম গোলের দেখা পেয়েছেন আর্জেন্টাইন জাদুকর। এমবাপ্পেরও হয়েছে একটা রেকর্ড। সেটি অবশ্য ক্লাব রেকর্ড। পিএসজির জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোলদাতার নাম লিখতে গেলে এই মুহূর্তে একটি নয়, দুটি নাম লিখতে হবে। এডিনসন কাভানির ২০০ গোলের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন এমবাপ্পেও।
নেইমার চোটের কারণে মাঠের বাইরে, এমন সময়ে পিএসজি গোলের খোঁজে যে দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকার কথা, এদিন তারা দুজনই ছিলেন অবিশ্বাস্য ছন্দে। তর্কসাপেক্ষে লিগে পিএসজির সবচেয়ে বড় ম্যাচে, ফরাসি লিগের ইতিহাসে রেকর্ড ৬৮ হাজার ৫০০ দর্শকের সামনে মেসি ও এমবাপ্পে দেখালেন জাদু। ম্যাচের ২৫ মিনিটে মেসির দারুণ থ্রু ধরে এমবাপ্পের জোরাল শটে গোল, চার মিনিট পর এমবাপ্পের বুদ্ধিদীপ্ত ক্রসে পা ছুঁইয়ে গোল মেসির। তাতেই ক্লাব ক্যারিয়ারের ৭০০তম গোলের ছোঁয়া পেয়ে গেলেন আর্জেন্টাইন জাদুকর। ক্লাবে মেসির ৭০০ গোলের ৬৭২টি পেয়েছেন বার্সেলোনায় থাকাকালীন। বাকি ২৮টি এসেছে পিএসজিতে আসার পর। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ৭ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ীর মোট গোল ৭৯৮টি।
পিএসজি বিরতিতে যায় ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে। মেসি আর এমবাপ্পেই একটি করে সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে মার্শেইয়ের হাই লাইন ডিফেন্স নিয়ে খেলার কৌশল আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হতো। বিরতির দশ মিনিট পর এবার মেসি-এমবাপ্পের দারুণ সমন্বয়। বক্সের বাইরে মেসির কাছে বল দিয়েই দৌড়ে বক্সে ঢুকে গেলেন এমবাপ্পে। মেসি তা বুঝতে পেরে প্রথম স্পর্শেই দারুণ এক লব পাঠান এমবাপ্পের দিকে, বল মাটিতে পড়ার আগেই এমবাপ্পের বাঁ পায়ের ভলি! মার্শেই গোলকিপারের সাধ্য কী এ শট ঠেকায়!
অন্যদিকে স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা দৌড় থেকে প্রায় ছিটকে পড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। দুইদিন আগে ঘরের মাঠে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারাতে পারেনি তারা। বার্সেলোনার সুযোগ ছিল দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ব্যবধান ১০ করে ফেলার। কিন্তু অবনমন অঞ্চলে থাকা আলমেরিয়ার বিপক্ষে ১-০ হেরে বসেছে বার্সেলোনা। এতে রিয়াল সঙ্গে বার্সার ব্যবধান কমে এসেছে ৭ পয়েন্টে। ইউরোপা লিগ থেকে ছিটকে পড়ার ক্ষতে নতুন করে জ্বলুনি বেড়েছে। এর মধ্যেই এল দুঃসংবাদ, চোটে পড়েছেন মূল স্ট্রাইকার রবার্ট লেভান্ডোভস্কি।
ইউরোপে যত বাজে পারফরম্যান্সই হোক না কেন, লিগে দাপট ছিল বার্সেলোনার। এই মৌসুমে এদিন পর্যন্ত মাত্র এক ম্যাচ হেরেছে দলটি। গত ১৬ অক্টোবর মাদ্রিদের কাছে হারের পর স্পেনে কারও কাছে হারেনি তারা। অবনমন অঞ্চলে থাকা আলমেরিয়াও পরশু চমকে দিয়েছে কালাতান জায়ান্টদের। ম্যাচের ২৪ মিনিটে এল বিলাল তোরের গোল বাকি সময়ে ফেরাতে পারেনি বার্সেলোনা। ম্যাচেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছেন লেভান্দোভস্কি। ৩৪ বছর বয়সীর চোট কতটা গুরুতর সেটা জানায়নি বার্সেলোনা। তবে গণমাধ্যমের দাবি এ চোটে দুই সপ্তাহর জন্য বাইরে থাকবেন পোলিশ স্ট্রাইকার। যার অর্থ আগামী ২ মার্চ কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালে রিয়ালের বিপক্ষে নামা হবে না তার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন