শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খালেদা জিয়া নির্বাচনও করবেন আগামীতে প্রধানমন্ত্রীও হবেন : সমমনা জোট

১২ দল, জাতীয়তাবাদী সমমনা ও পেশাজীবী জোটের পদযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২৩, ১২:০১ এএম

সরকার পতনের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপির সঙ্গে একই দিনে কর্মসূচি পালন করছে সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো। গতকাল শনিবার সারাদেশের মহানগরের থানায় থানায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায় এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পদযাত্রা করেছে জোট দলগুলো। রাজধানীতে পৃথকভাবে এই কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), সমমনা পেশাজীবি গণতান্ত্রিক জোট।

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট গতকাল সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে পুরানা পল্টন মোড় হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শেষ হয়। পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ক্ষমতাসীনরা এখন বলছেন- বেগম জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন। আমরা বলব, খালেদা জিয়া শুধু রাজনীতি কেন, নির্বাচনও করবেন এবং তিনি আগামীতে এদেশের প্রধানমন্ত্রীও হবেন।
তিনি বলেন, সরকারের দুঃশাসনে দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতিতে মানুষ আজ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে তাদের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। তারা ব্যস্ত দুর্নীতি ও লুটপাটে। লুটপাটের মাধ্যমে দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এসব টাকা ফেরত আনতে হবে, দুর্নীতির বিচার করতে হবে।

সমমনা জোটের সমন্বয়ক বলেন, সরকার আবারো ২০১৮ সালের মতো একটি প্রহসনের নির্বাচন করার দিবাস্বপ্ন দেখছে। সরকারকে বলবো, ওই ধরনের নির্বাচন করার স্বপ্ন ভুলে যান। দলীয় সরকারের অধীনে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ এ ধরনের কোনো নির্বাচন হতে দেবে না।
সরকারের উদ্দেশ্যে ড. ফরহাদ বলেন, এখনো সময় আছে। জনগণের দাবি মেনে অবিলম্বে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাদের পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

ড. ফরহাদের সভাপতিত্বে এবং জাগপার সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাতের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুল আমিন বেপারী, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী ও মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারিক, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন- এনপিপির মো. ফরিদ উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ তোতা মিয়া, জাগপার সাইফুল আলম, আওলাদ হোসেন শিল্পী প্রমুখ।
১২ দলীয় জোট: আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানো সহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গতকাল রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন রাস্তায় পদযাত্রা করেছে ১২ দলীয় জোট। জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবের সঞ্চালনায় পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গনি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ন্যাপ- ভাসানী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আবু হানিফ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তারিকুল ইসলাম।

পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম সহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের ইচ্ছা ও আকাক্সক্ষা তুলে ধরছি। সরকারের মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে না সরকার সমস্যা সমাধানের দিকে যাচ্ছে! জনগণের ভোটাধিকার আদায়ে বিরোধী দলের আন্দোলনে ভ্রুক্ষেপ না করে ২০১৪ সালের বিনা ভোটের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের জালিয়াতি ভোটের মতো কোনো অসৎ উপায় উদ্ভাবনের নেশায় বিভোর হয়ে আছে। জনগণ সরকারের এই অশুভ চিন্তা ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন হতে দেবে না।
বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দাবী করে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের অনমনীয় মনোভাব সামগ্রিকভাবে আন্দোলনকে এক দফা সরকার পতনের দাবির দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করছে। জনগণ রাজপথে নেমে সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে। এমন একটা পরিস্থিতির দিকেই দেশবাসী ও দুনিয়া তাকিয়ে আছে।

সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট: ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় থেকে শুরু হয়ে, দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট। পদযাত্রার প্রাক্কালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোটের প্রধান সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, দেশের জনগণ এই জুলুমবাজ সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। অবৈধ সংসদ বিলুপ্ত করে অবিলম্বে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তিনিসহ সকল রাজবন্দিকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- সহকারী সমন্বয়কারী এডভোকেট মাইনুদ্দীন মজুমদার, সংবিধান সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ-৭১ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার রহমান সিকদার, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের সভাপতি শেখ আলিম উল্লাহ আলিম, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি ওমর ফারুক সেলিম, জিয়া নাগরিক সংসদের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক অহিদুল, সংবিধান সংরক্ষণ পরিষদের সহ-সভাপতি এডভোকেট মাহফুজার রহমান ইলিয়াস, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরীফুল ইসলাম (শরীফ) সহ জোটের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন