রাজশাহী ব্যুরো : শীত মানেই পিঠা-পুলির আয়োজন। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে পিঠা-পুলির স্বাদ ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর বিভিন্ন সংগঠন আয়োজন করে পিঠা মেলার। চলে প্রতিযোগিতাও। খাওয়ার সাথে দেখার মজাও কম নয়। পরিচিতি ঘটে নানান রকম ও স্বাদের পিঠা-পুলির সাথে। এখন চলছে পিঠা মেলার আয়োজন। একটি শেষ না হতেই আরেকটি শুরু হচ্ছে।
গতকাল বাহারি পিঠার সমাহার নিয়ে শাহ মখদুম কলেজ চত্বরে রাজশাহী মহিলা চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে শেষ হল দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসবের। হরেক রকম পিঠার পসরা নিয়ে বসেছিল পিঠা মেলা। শুরু থেকেই ভিড় করেছে তরুণ-তরুণী আর পিঠা রসিকরা। কত নামের পিঠা পুলি তার ইয়াত্তা নেই। বাহারি নামের এসব পিঠা কিনতে ভিড় করছে ক্রেতারা। বাড়িতে এতো সব পিঠা তৈরি করার ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতেই এখান থেকে পিঠা বাসায় নিয়ে যেতে দেখা যায় অনেককেই।
আয়োজকরা বলছেন, পিঠার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই ছিল এই পিঠা মেলা। বিভিন্ন নামধারী এসব পিঠার নাম হয়ত কারো জানা নেই, তাই রান্না করে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব পিঠা পরিবেশন করে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেয়াই মেলার উদ্দেশ। মেলায় দক্ষতা দেখিয়ে রকমারি পিঠা পরিবেশন করতে পেরে আনন্দিত অংশগ্রহণকারীরাও।
পিঠা মেলায় অংশগ্রহণকারী মাদারবকশ গারস্থ্য অর্থনীতি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা সাহাদত বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্যের অনেক কিছুই এখন বিলুপ্তির পথে। কিন্তু বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র আছে যা বাঙ্গালিরা কখনো বিলুপ্তি হতে দেয়না। তারই একটি অংশ হলো এ পিঠা। শহরাঞ্চলে এসব পিঠার প্রচলন না থাকলেও এখন এসব পিঠা সবাই দেখতে পারছে।
মেলার দর্শনার্থীরা বলেন, শহরে এসব পিঠার নাম কখনো শুনিনি। খুব ভালো লাগছে যে একদিনের জন্য হলেও গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী পিঠার আয়োজন সামনে দেখতে পারছি আর স্বল্প মূল্যে এসব পিঠা পেয়ে আরো ভালো লাগছে।
মেলার আয়োজক মহিলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রোজেটি নাজনীন বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারো আমরা নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ মেলার আয়োজন করেছি। তবে এবার একটু ভিন্নভাবে। এবারে কলেজসমূহকে অন্তর্ভুক্ত করেছি; যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে ভালো কিছু করতে শেখে, বাইরের ফাস্ট ফুডের দিকে না ঝুঁকে, নিজেদের ঐতিহ্যবাহী খাবার নিজেরা তৈরী করে খায় এবং অপরকে শেখায়।
মনে করেন বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্য তুলে ধরে রাজশাহী হবে দেশের মানচিত্রে অন্যতম একটি নাম। আর সে কারণে প্রতি বছর এভাবেই বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদেও তৈরী করা হচ্ছে। নারীরা তাদের সৃজনশীলতার মধ্যে দিয়ে একে অপরকে শেখানোর মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরী করতে পারছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়। শাহমাখদুম কলেজ মাঠের পিঠা মেলা শেষ হতে না হতেই আজ থেকে আবার পানীয় ও মোজোর উদ্যোগে নগরীর বর্ণালীর মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মোজো পিঠা উৎসব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন