বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বিদায়বেলা ম্যাককালামের রেকর্ড উপহার

প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে শেষ ম্যাচ ম্যাককালামের। ম্যাচটি যেভাবে রাঙিয়ে তুললেন তিনি এর চেয়ে অন্য কোনভাবেই সম্ভবত আর এটা সম্ভব হত না। দলের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন ২২ গজে নামেন দল তখন দাঁড়িয়ে ধ্বংস্তূপের সামনে। দলীয় ৩২ রান তুলতেই ফিরে গেছেন শীর্ষ ৩ ব্যাটসম্যান। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটে নেমেই প্রতি আক্রমণ শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের ওপর। মাত্র ৫৪ বলেই করে ফেললেন সেঞ্চুরি! টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রæততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা এতদিন যৌথভাবে ছিল ক্যারিবীয়ান কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস ও পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান মিসবাহ-উল-হকের দখলে। দু’জনেই শতক হাঁকিয়েছিলেন ৫৬ বলে। ২ বল কম খেলে এখন সেই রেকর্ড শুধুই ম্যাককালামের! সাথে ইনিংসের ৬টি ছক্কায় চড়ে টেস্টে এখন তাঁর মোট ছক্কা ১০৬টি। টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডটি অস্ট্রেলিয়ার গিলক্রিস্টের সাথে এতদিন ভাগাভাগি করে আসছিলেন ‘ম্যাক’। এখন এই রেকর্ডও শুধুই ম্যাককালামের!
তাঁর নামের প্রভাবেই ‘ট্রান্স-তাসমান ট্রফি’টাও অঘোষিত নাম নিয়েছে ‘ম্যাককালামের বিদায়ী সিরিজ’। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ছিল কিউই অধিনায়কের শততম ম্যাচ। সেখানেও জন্ম দিয়েছিলেন আরেক রেকর্ডের। অভিষেকের পর থেকে দলের প্রতিটা ম্যাচে অংশ নিয়ে টানা একশ ম্যাচ খেলা একমাত্র খেলোয়াড় তিনি। কিন্তু এমন রেকর্ডের ম্যাচ রাঙ্গাতে পারেননি ব্যাট হাতে (০ ও ১০)। বিদায়টা রাঙাতে ‘বি ম্যাক’ বেছে নিলেন ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। দিন শেষে যখন পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন তাঁর নামের পাশে তখন ৭৯ বলে ১৪৫ রান! দলীয় স্কোরও মাত্র ৪৫.১ ওভারে ফুলে-ফেঁপে হয়েছে ২৫৩!
ক্রাইস্টচার্চে গতকাল ব্যক্তিগত ১০১তম টেস্ট ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ম্যাককালাম ছিলেন আক্রমণাত্মক। রানের খাতা খোলেন দ্বিতীয় বলেই চার হাকিয়ে। যদিও ৪৫ রানে প্যাটিনসনের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন মিচেল মার্শের হাতে। কিন্তু বলটি ‘নো’ বল হওয়াতে সে যাত্রা বেঁচে যান ম্যাককালাম। ঐ মার্শের ওপরই তিনি চড়াও ছিলেন বেশি। মার্শের এক ওভারেই নেন ২১ রান। ৩৪ বলে পূর্ণ করেন অর্ধশতক। এর পরে ছিলেন আরো বিধ্বংসী। ক্রিকেট যার কাছে স্রেফ একটা খেলা সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে স্নায়ু চাপের কথা তার ক্ষেত্রে অমূলক। জশ হ্যাজেলউডের এক ওভারেই ১৮ রান নিয়ে পূর্ণ করেন শতক। পরের অর্ধশতক মাত্র ২০ বলে। এ সময় ক্রাইস্টচার্চে বিদায়ী ম্যাককালামকে সংবর্ধনা জানাতে দাঁড়িয়ে পড়েন হ্যাগলি ওভালের দর্শকরা। শেষ অবধি ম্যাক তাÐব থামে ৭৯ বলে ২১টি চার ও ৬টি ছয়ে ১৪৫ রান করে। সেই প্যাটিনসনের বলেই। টেস্ট ক্রিকেটে দ্রæততম দ্বিশতকের রেকর্ডও (১৫৩ বলে) নিউজিল্যান্ডের আরেক ব্যাটসম্যান নাথান অ্যাস্টলের। এমন রেকর্ড গড়ে সম্ভাবতই খুশি কিউই অধিনায়কÑ ‘এমন রেকর্ড সবাই-ই করতে চায়, রেকর্ডটি করতে পেরে খুশি।’ তবে এর চেয়ে যে জয়টাই বেশি প্রয়োজন সেটাও জানিয়েছেন তিনিÑ ‘আমরা প্রথম ম্যাচটি হেরে যাওয়া পিছিয়ে আছি। এই ম্যাচে তাই আমাদের জয় পেতেই হবে। ৩৭০ ভালো সংগ্রহ।’
ম্যাককালাম আউট হওয়ার পর বাকি ৫ উইকেটে কিউইরা তুলতে পারে ১১৭ রান। শেষ পর্যন্ত ৬৫.৪ ওভারে ৩৭০ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ম্যাককালামের উত্তাপ মনে হয় লেগেছিল কোরি অ্যান্ডারসন ও ওয়াটলিংয়ের ব্যাটেও। এন্ডারসন করেন ৬৬ বলে ৭২ ও ওয়াটলিং ৫৭ বলে ৫৮ রান। অজিদের হয়ে ৩টি উইকেট নেন নাথান লায়ন। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন হ্যাজেলউড, প্যাটিনসন ও বার্ড। জবাবে প্রথম দিন শেষে ২০ ওভারে ওয়ার্নারের উইকেট হারিয়ে ৫৭ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন