রংপুর জেলা সংবাদদাতা ঃ রংপুরে জাপানী নাগরিক হোসি কোনিওর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের ৭ম দিনে গতকাল মঙ্গলবার ময়না তদন্তকারী ৪ চিকিৎসক, জেএমবি সদস্য সাঈদের বাড়ি ও দোকান-পাটের ৩ প্রতিবেশীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন বিজ্ঞ আদালত। শর্টগানের গুলিতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই হোসি কোনিওর মৃত্যু হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদানকালে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক দল আদালতকে নিশ্চিত করেন। তার বুক, গলা ও ডান হাতে গুলিবিদ্ধ ছাড়াও তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আটটি ইনজুরি ছিল।
রংপুর স্পেশাল জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার এই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২ ও ৫ ফেব্রæয়ারী।
স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক জানিয়েছেন, আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তকারী ৪ চিকিৎসক তৎকালীন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রফিকুল ইসলাম, এনাটমি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা, রবি শংকর মন্ডল ও হরেন্দ্র নাথ এবং জঙ্গি আবু সাঈদের পীরগাছার কালিগঞ্জের স্টুডিও ব্যবসার এলাকাবাসী জমসেদ আলী, মতিয়ার রহমান এবং মঞ্জু মিয়া সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্য দেয়ার সময় ময়না তদন্তকারী ৪ চিকিৎসক আদালতকে জানান, হোসি কোনিওর বুকে, গলায় ও ডান হাতে গুলি লেগেছিল। গুলিগুলো ছিল শর্টগানের। বুলেটবিদ্ধ হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মোট ৮টি ইনজুরি ছিল।
অপর সাক্ষী মঞ্জু মিয়া আদালতকে জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের ২৬ মে পুলিশ পীরগাছার কালিগঞ্জ বাজারে আবু সাঈদ-এর স্টুডিও দোকান থেকে কম্পিউটার, মনিটর ও সিডি জব্দ করে। আমি দেখেছি। আমি আবু সাঈদকে চিনি এবং জানি। সে ওই স্টুডিওর মালিক। সেখান থেকে পুলিশ অনেকগুলো মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেটও উদ্ধার করে। তিনি আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আসামিদের দেখিয়ে দিয়ে বলেন, তারা প্রায়ই ওই দোকানে যাতায়াত করতো। অন্যান্য সাক্ষীরাও আবু সাঈদকে শনাক্ত করেন।
পিপি জানান, এই মামলায় এ পর্যন্ত ৭ দফায় মোট ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে ৪০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ২ ও ৩ ফেব্রæয়ারী আরও সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। সাক্ষ্য গ্রহণের আগে সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে মামলার চার্জশিটভুক্ত গ্রেফতারকৃত আসামি জেএমবির উত্তরাঞ্চলের স্কোয়াড লিডার মাসুদ রানা, এছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ, সাখাওয়াত হোসেনকে আদালতে আনা হয়।
চার্জশিটভুক্ত ৮ জনের মধ্যে রাজশাহীতে নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক হাসান পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে এবং সাদ্দাম হোসেন ঢাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। আর অপর চার্জশিটভুক্ত আসামী রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ আনছারী এখনো পলাতক রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন