স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে হকি ফেডারেশন। সোমবার বিসিবি’র সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে,এখন থেকে হকির বিদেশি কোচের বেতন-ভাতাসহ সব দায়িত্বই বহন করবে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। বিসিবি’র এই সিদ্ধান্তে যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছে হকি ফেডারেশন। তাই তারা বিদেশী কোচ আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল হকি ফেডারেশন (এফআইএইচ) ও ব্যাক্তিগত সম্পর্কের জের ধরে বিভিন্ন ইউরোপিয়ান কোচদের সঙ্গে ই-মেইলে চিঠি চালাচালি শুরু করেছেন হকি ফেডারেশন কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে গতকাল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খাজা রহমতউল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, ‘বিসিবির ঘোষণায় আমরা খুবই খুশী। হকির বিদেশী কোচ আনার ব্যাপারে তারা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমি ধন্যবাদ জানাই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপিকে। উনার আশ্বাসেই বিদেশী কোচ আনার ব্যাপারে আর কোন বাধা থাকলো না। এখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করবো, কোন দেশ থেকে ভালো মানের কোচ আনা যায়।’
উচ্ছ¡সিত খাজা রহমতউল্লাহ আরো বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য বিসিবি প্রধানের সহযোগিতা বাংলাদেশের হকিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। হকির বিদেশী কোচের ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত প্রথম পছন্দ বেলজিয়ামের কোচ মিশেল কিনানকে। আমি ফেডারেশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বলবো, কিনানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। যদি কোন কারণে তাকে আমরা না পাই, তাহলে দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের কোন কোচকে আনা হবে জাতীয় দলের জন্য। তবে সব সিদ্ধান্ত হবে সম্মিলিতভাবে। হকি ফেডারেশনের সব কর্মকর্তারা এক সঙ্গে বসেই জাতীয় দলের জন্য বিদেশী কোচ নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো।’
এদিকে হকি ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আনভীর আদিল খান বলেন, ‘বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন এমপিকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই। তিনি দেশের হকির জন্য যা করতে যাচ্ছেন, তা ইতিহাস হয়েই থাকবে। আমরা সত্যিই উচ্ছসিত তার সিদ্ধান্তে।’ তিনি আরো বলেন,‘খন্দকার জামিল উদ্দিনের দায়িত্বকালে ২০১০ সালে জার্মানির কোচ পিটার গেরহার্ড জাতীয় দলের দায়িত্বে এসেছিলেন। ওই সময়েই আমাদের খেলোয়াড়রা ইউরোপিয়ান কোন ক্লাবে প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পায়। তার প্রশিক্ষণে সন্তুষ্ট ছিল খেলোয়াড়রা। তার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। বর্তমানে তিনি কেনিয়ার কোচ। আমরা যদি ওদের চেয়ে বেশি বেতন দিতে পারি তাহলে পিটার আবার আসতে পারেন বাংলাদেশে। তাছাড়া জার্মানির অলিভার মাইকেলও রয়েছেন তালিকায়। তিনিও বাংলাদেশে এসেছিলেন ২০১০ সালে। অলিভার বর্তমানে ওমান জাতীয় দলের কোচ। তার প্রশিক্ষণে অনেক উন্নত করেছে ওমান। অলিভারের কল্যানে ওমানী খেলোয়াড়রা ইউরোপে গিয়ে নিয়মিত অনুশীলন ম্যাচ খেলতে পারে। আমাদের প্রিমিয়ার লিগ শেষ হবে এপ্রিলের শেষের দিকে। ওইসময় ওমানে কোন খেলা নেই। তার দিকেও চোখ রয়েছে। বেলজিয়ামের মিশেল কিনানও চমৎকার একজন কোচ। তিনি জানেন কিভাবে খেলোয়াড়দের মোটিভেট করতে হয়। ২০১৪ সালে স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশে এলেও কিনান মন জয় করেছেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের। তবে উপমহাদেশের কোন কোচের দিকে আমরা ঝুকছি না। কোচের ব্যাপারে সব সিদ্ধান্তই হবে আগামি সভায়। যেটি হতে পারে আগামি বৃহস্পতিবার।’
এর আগে বাংলাদেশের হকিতে বিদেশী কোচ হিসেবে পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার, মোহাম্মদ আশফাক, কামার ইব্রাহিম, তাহির জামান, নাভিদ আলম ও গোলরক্ষক কোচ মনসুর এসেছিলেন। এদের নাভিদই দীর্ঘসময় জাতীয় হকি দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া মালয়েশিয়ান কোচ গোবিনাথান কিছু সময়ের জন্য জাতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন। জার্মানীর ইয়র্ক শুমাখার, পিটার গেরহার্ড ও অলিভার মাইকেল, হল্যান্ডের বার্ড বার্নিক ও বেলজিয়ামের মিশেল কিনানও এসেছিলেন জাতীয় হকি দলের কোচ হয়ে। তবে পিটার গেরহার্ড ও মিশেল কিনানে হকি খেলোয়াড়রা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন বেশী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন