শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দারুণ শুরু ম্লান করেছে ক্যাচ ড্রপ

প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী : ভারতকে হতভম্ব করে ৮ মাস আগে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের নেপথ্যে একাদশে ৪ ফাস্ট বোলার! মাশরাফির সঙ্গে তাসকিন, রুবেল এবং মুস্তাফিজুরÑ এই চার পেসারের দারুণ কম্বিনেশনটাই ওই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ৭৯ রান এবং ৬ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। আশ্চর্য হলেও সত্য, টেস্টে যেখানে ৪ পেস বোলারকে নিয়ে খেলার সাহস পায় না বাংলাদেশ দল, সেখানে টুয়েন্টি-২০ ম্যাচে ভারত যখন প্রতিপক্ষ, তখন ৮ মাসের সেই কৌশলটাই বেছে নিলেন বাংলাদেশ কোচ হাতুরুসিংহে! টুয়েন্টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছর পূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে এই প্রথম একাদশে চার পেস বোলার ব্যবহারের নজির রাখলো বাংলাদেশ দল। উপমহাদেশে টুয়েন্টি-২০ ম্যাচে যেখানে পেস বোলারদের দেখা হয় সৎভাইয়ের দৃষ্টিতে, সেখানে ৪ পেস বোলারকে নিয়ে একাদশ! জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষেও একাদশে চার ফাস্ট বোলার নিয়ে খেলার কৌশলকে দেয়নি গুরুত্ব বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট, সেখানে টুয়েন্টি-২০’র নাম্বার ওয়ান র‌্যাংকিংধারী দলের বিপক্ষে ৪ পেসার!
প্লেয়ার্স লিস্ট দেখে অবাক হওয়ারই কথা। তবে এমন সিদ্ধান্তের পেছনে অন্যতম কারণ, ফাল্গুন মাসে ঢাকায় দুপুরে বেরসিক বৃষ্টি। বৃষ্টিটা আবার ঝির-ঝির নয়, মুষলধারে। পুরোপুরি ফিট নন বলে তাসকিনের খেলার সম্ভাবনা ছিল না ম্যাচের দিন সকাল পর্যন্ত, অথচ বৃষ্টিটাই ফিরিয়ে এনেছে তাকে। ম্যাচের আগে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মাঠে ঘন্টাখানেকের অনুশীলনে হাত ঘুরিয়ে তাসকিনকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে একাদশে। ২ বছর আগে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ওয়ানডে অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেটের রেকর্ডটা আছে তাসকিনের, এটাও যে কারণ। ৮ মাস আগে ভারতকে হতভম্ব করা ৪ পেসারের মধ্যে এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ছিলেন না রুবেল। হাতুরুসিংহের  চার পেসার তত্ত্বে  রুবেলের অভাবটা ভালই পূরণ করেছেন আল আমিন (৩/৩৭)।  
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজের শেষ ২ টুয়েন্টি-২০ ম্যাচে বড্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। অপরিহার্যদের বিশ্রামে রেখে একাদশ সাজানোর মাশুল দিতে হয়েছে ওই দুই ম্যাচে। সর্বশেষ ম্যাচের একাদশ থেকে এই ম্যাচে পরিবর্তন চারটি! পেস বোলার আবু হায়দারের জায়গায় আল আমিন, উইকেট কিপার নূরুল হাসান সোহানের পরিবর্তে ফিরেছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম, বাঁ হাতি স্পিনার আরাফাত সানির পরিবর্তে বাঁ হাতি ফাস্ট বোলার মুস্তাফিজুর এবং বাঁ হাতি ওপেনার তামীম ইকবালের পরিবর্তে মিঠুন।
টস ভাগ্যে জিতে  শুরুতেই চোট দিতে পেরেছে বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপ ভারতকে। স্যাতঁসেতে পিচ, ভেজা আউটফিল্ডের সঙ্গে চার পেসারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাধ্যতামূলক পাওয়ার প্লেতে ওভারপ্রতি ৫কেই বেশি মনে করেছে ভারত (৩১/২)। প্রথম ১০ ওভার পর্যন্ত ভারত ব্যাটসম্যানরা ধুঁকেছে রানের জন্য (৫২/৩)। নতুন বলে এক এন্ডে তাসকিন দিয়েছেন চাপ, অন্য এন্ডে হেসেছেন আল আমিন! ড্রাইভ খেলতে যেয়ে  শিখর ধাওয়ানের স্ট্যাম্প উড়ে যাওয়ার সে দৃশ্যে মেতেছে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম। মুস্তাফিজুরকে খেলতে সতর্ক ভারত টপ অর্ডাররা, অন্য এন্ডে বিরাট কোহলীকে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে আসতে বাধ্য করেছেন মাশরাফি। অফ স্পিনার মাহামুদুল্লাহকে নিয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা করেননি মাশরাফিও। মূলত পেস বোলারদের বিশ্রাম দিয়ে দিয়ে বল করানোর জন্যই মাহামুদুল্লাহ’র হাতে তুলে দিয়েছিলেন বল মাশরাফি। ভুল শট সিলেকশনে, ব্যাট-প্যাডের মধ্যে বিশাল ফাঁক দিয়ে বোল্ড আউট রায়না।
অথচ, শুরুর চাপ সামলে ঠিকই চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়েছে ভারত। শেষ ১০ ওভারে ১১৪ রান যোগ করায় ভারত স্কোর টেনে নিতে পেরেছে ১৬৬/৬-এ। তবে তার জন্য সাকিবের প্রতি কৃতজ্ঞ হতেই পারে ধোনির দল। কারণ, ১১তম ওভারে তাসকিনের বলে পয়েন্টে দেয়া রোহিত শর্মার ক্যাচটি সাকিবের হাত থেকে ফসকে যাওয়ায় যে ম্যাচে ফিরতে পেরেছে ভারত। ২১ রানে বেঁচে যাওয়া রোহিত শেষ পর্যন্ত ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৮৩ পর্যন্ত। বাংলাদেশের ৫১তম আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে রোহিত শর্মা উদযাপন করেছেন নবম ফিফটি। কাকতালীয় ব্যাপারই বটে, এই ম্যাচটি রোহিত শর্মার ও কিন্তু টি-২০ ক্যারিয়ারে ৫১তম ম্যাচ।  যে পার্টনারশিপ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা ৫৪তে, সেই পার্টনাশিপ ভেঙ্গেছে ৯৭এ। ৮ মাস আগে বিস্ময়কর উত্থান যে ছেলেটির, ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ৫ উইকেট, পরের ম্যাচে ৬ উইকেটে দু’দলের মধ্যে ব্যবধান তৈরি করা  বাঁ হাতি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর না জানি কতোটা ভয়ংকর হয়? এশিয়া কাপের উদ্বোধনী  ম্যাচকে সামনে রেখে সেই জুজুই ভর করেছিল ভারত ব্যাটসম্যানদের উপর। কোহলী পর্যন্ত ম্যাচের আগের দিন মুস্তাফিজুর আতঙ্কের কথা শুনিয়েছিলেন। তবে  সেই মুস্তাফিজুর জুজু কাটাতে পেরেছে ভারত। তবে আল আমিন নামের আর এক পেস বোলার কিন্তু ঠিকই ভুগিয়েছে ভারতকে (৩/৩৭)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন