বিশেষ সংবাদদাতা : আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মুস্তাফিজুরের এক বছর পূর্ণ হয়নি। বর্ষপূর্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো ২ মাস। খেলেছেন মাত্র ৯ ওয়ানডে, ৮ টি-২০ এবং ২ টেস্ট। এরই মধ্যে বিস্ময়ের ঝাঁপি ফেলেছেন খুলে। তবে যে দলটির বিপক্ষে ৮ মাস আগে নিজেকে চিনিয়েছেন অন্যভাবে, সেই ভারতের বিপক্ষে গত বুধবার কেটেছে খুব বাজেভাবে। টুয়েন্টি-২০ ক্যারিয়ারে এটাই প্রথম উইকেটহীন ম্যাচ নয় বাঁ হাতি কাটার মাস্টারের। তবে এর আগে টি-২০ তে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উইকেটশূন্য কাটানো ম্যাচে ওভারপ্রতি ৭.৫০ রান খরচা ছিল যেখানে, সেখানে ভারতের বিপক্ষে উইকেটহীন ম্যাচে মুস্তাফিজুরের খরচা ওভারপ্রতি ১০.০০! টুয়েন্টি-২০ তো নয়ই, ওয়ানডে কিংবা টেস্টÑ সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ারে এরকম বাজে দিন কাটেনি এর আগে মুস্তাফিজুরের।
টপাটপ উইকেটের পরও যে ছেলেটি উচ্ছ¡াসহীন থাকতে পছন্দ করেন, চুপচাপ থাকতে পছন্দ করা সেই ছেলেটি রোহিত শর্মা, হারদিক পান্ডের প্রতি আক্রমণে ভেঙ্গে পড়বেন কেন? কাজটা তার মাঠে নেমে খেলা, নিজের উদ্ভাবনী বোলিং দিয়ে প্রতিপক্ষকে ধাঁধাঁয় ফেলা। কাছ থেকে দেখে গত ১০ মাস মুস্তাফিজুরকে এতোটাই চিনেছেন যে, ভারতের কাছে মার খেয়ে হতোদ্যম হবার পাত্র নন মুস্তাফিজুর, সে ধারণাই পোষণ করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফিÑ ‘ও একশ’ ভাগ ঠিক আছে মুস্তাফিজুর। ও আসলে খেলাটা নিয়ে এতো কিছুভাবে না। ওর কাছে পারফরম্যান্স সবার অপ্রত্যাশিত। কারণ বিগত দিনগুলোতে ও অনেক ভালো পারফর্ম করেছে। একজন খেলোয়াড়ের এমন খারাপ দিন আসতেই পারে। তাছাড়া এই বিষয়টিকে ও খুব স্বাভাবিকভাবে নিয়েছে। আমার বিশ্বাস এটা ও খুব ভালোভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারবে। তাই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’
ভারতের বিপক্ষে গত বুধবার ডেথ ওভারে ভাল বল করতে পারেনি মুস্তাফিজুর। শিশিরের কারণে বলের গ্রিপিংটাই হয়নি নিজের পছন্দমতো। কাটার ডেলিভারীর জন্য তার নিজস্ব স্টাইলের গ্রিপিংয়েও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে শিশির। ভারতের কাছে ৪৫ রানে হেরে মুস্তাফিজুরের বোলিং সম্পর্কে এ বিশ্লেষণই ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কের। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে মুস্তাফিজুরকে নিয়ে উচ্চ ধারণা পোষণ করেছেন মাশরাফি। শিশির প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে নতুন উদ্ভাবনী বোলিং করার ক্ষমতা রাখেন মুস্তাফিজুর, সেটাই মনে করছেন মাশরাফিÑ ‘শিশির পড়লেও কিছু করার নেই। ওর আরো কিছু ডেলিভারী আছে, যেগুলো ও করতে পারে। এমন কিছু সময় আসবে যখন শিশির থাকবে। সেখানেও মুস্তাফিজুরকে খেলতেই হবে।’
সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে উইকেটের চেয়েও মিতব্যয়ী বোলিংটা বেশি প্রয়োজন বোলারদের। তবে মুস্তাফিজুরকে মিতব্যয়ী বোলার হিসেবে দেখতে চান না মাশরাফি। দলের বোলিং লাইন আপে মুস্তাফিজুর অস্ত্র প্রয়োগে চান তিনি উইকেট! সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে কুঁড়ি বছরের ছেলেটি সম্পর্কে এ কথাই বলেছেন মাশরাফিÑ ‘মুস্তাফিজ আরও ১০-১২ বছর ক্রিকেট খেলবে। অনেক কঠিন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাবে সে। ওকে আমরা উইকেট টেকিং অপশন হিসেবে রাখি। যদি প্রয়োজন হয় আগে ব্যবহার করার আমরা করবো। কারণ আমরা জানি ওর বলে শটস খেলা সব সময় কঠিন। তার জন্য পরিকল্পনা করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
প্রকৃত কালবৈশাখী ঝড় হয়ে ভারতকে লÐভÐ করেছেন ৮ মাস আগে। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ছন্দহীন কেটে যাওয়া মুস্তাফিজুরের বোলিংয়ে এই ফাল্গুনে সেই কালবৈশাখী ঝড় কামনা করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাশরাফির বিশ্বাস, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সেই চেনা রুপেই মুস্তাফিজুরকে দেখবে বিশ্ব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন