বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

অন্যরকম সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান

প্রকাশের সময় : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা: সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল জয় দিয়ে। ২০০৬ সালের ২৮ আগস্টে ব্রিস্টলে  ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। টুয়েন্টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১৮ মাস ১০ দিন পর অভিষেক পাকিস্তানের। সেই পাকিস্তানই এখন সংক্ষিপ্ত ভার্সনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে। আরব আমিরাতের বিপক্ষে আজকের টুয়েন্টি-২০ ম্যাচটি পাকিস্তানের শততম ম্যাচ। সবার আগে টি-২০তে সেঞ্চুরিটা হতে যাচ্ছে পাকিস্তানের। যেখানে পাকিস্তানের পেছনে ছোটা নিউজিল্যান্ড পার করেছে ৮৮ টি ম্যাচ। আশির ঘরে আছে দ.আফ্রিকা (৮৪ ম্যাচ), অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের ম্যাচ সংখ্যা সেখানে ৮১টি করে।
টি-২০ আন্তর্জাতিক অভিষেকে পাকিস্তান দলে যারা করেছেন প্রতিনিধিত্ব, তাদের তিনজন আফ্রিদি,শোয়েব মালিক এবং হাফিজ দলের শততম ম্যাচেও আছেন। এমন এক ল্যান্ডমার্কের সামনে দাঁড়িয়ে শততম ম্যাচটি জয় দিয়ে উদযাপনে মুখিয়ে পাকিস্তান।  নিজ দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরবাসী যে দলটি ক্রিকেটে সেকেন্ড হোম বানিয়ে ফেলেছে, ২০০৯ থেকে হোমের সিরিজগুলো আয়োজনে যে দেশের আতিথ্য পাচ্ছে সেই সংযুক্ত আরব আমিরাতকে সেঞ্চুরি ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের ইতিহাসময় ম্যাচেও যে অংশ তারা।  পাকিস্তান-আরব আমিরাতের এই ম্যাচটিকে ২ ভাইয়ের লড়াই বলছেন অনেকে। তবে সম্প্রীতির লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ ভাই হলেও সেই লড়াইয়ে জিততে চায় পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যের কথাই জানিয়েছেন শোয়েব মালিকÑ ‘যদি দু’জন নিজের ভাই পরস্পরের বিরুদ্ধে খেলতে নামে সেক্ষেত্রেও উভয়েই জিততে চায়। আমাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা এমনই।
মরুর দেশ আরব আমিরাতে ১৯৮৪ সাল থেকে ক্রিকেট চর্চায় মূল অবদান পাকিস্তানের। এখনো ওয়ানডের সর্বোচ্চ ম্যাচে (২২৪) সারজা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। নিজ দেশে নিরাপত্তাহীনতার কারনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনটি আন্তর্জাতিক ভেন্যুতে পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চর্চা, গত ৬ বছরে শুধু ২২টি টি-২০ এই আরব আমিরাতেই খেলেছে পাকিস্তান। পাকিস্তান ক্রিকেটারদের আইডল মেনে, এক দল পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দিয়ে,দলে টেনে তাদেরকে নিয়ে স্বপ্ন যাত্রা আরব আমিরাতের। এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ২ ম্যাচে হারের পরও প্রিয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতে পারার আগাম সুখানুভুতি তাই চোখে-মুখে লেপ্টে আছে আরব আমিরাতের। পাকিস্তানের সাবেক পেস বোলার আকিব জাভেদ দলটির কোচ বলে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শক্তিটাও বোলিংয়েই। প্রিয় প্রতিপক্ষকে পেস বোলিং দিয়েই হতভম্ব করতে চান আমিরাত অধিনায়ক আমজাদ জাভেদ। পাকিস্তানের প্রথম টি-২০ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করে, দলটির শততম টি-২০ ম্যাচেও দলের অংশ হতে যাচ্ছেন বলেই গর্বটা একটু বেশিই শোয়েব মালিকের। ভারতের কাছে হার দিয়ে শুরু করা আসরে ফিরতে আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সেরাটা খেলতে সংকল্পবদ্ধ দলটি, তা জানিয়ে দিয়েছেন শোয়েব মালিকÑ ‘এই টুর্নামেন্টে সব খেলাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের বিরুদ্ধে খেলাটা আমি বলব উভয় দলের জন্যই একটা চাপের ম্যাচ। আমরা কিছু ভুল করেছি। আমরা জানতাম না এখানে কন্ডিশনটা কেমন হতে পারে। এখন আমরা খেলেছি এবং জেনেছি কিভাবে এটাকে মানিয়ে নিতে হবে। আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে চমৎকার একটি ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’  শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট সম্পর্কে ধারনা না থাকার মাশুল দিতে হয়েছে প্রথম ম্যাচে, ভারতের তিন পেসারের আক্রমনে ৮৩ রানে ইনিংস গুটিয়ে ফেলতে হয়েছে, তা এখনো পীড়া দিচ্ছে শোয়েব মালিককেÑ ‘হ্যাঁ শনিবার ব্যাট করাটা কঠিণ ছিল। আমরা কিছু বিষয়ে হিসেব-নিকেশে গরমিল করেছিলাম।  কন্ডিশন সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা ছিলনা। টি-২০ ক্রিকেটে ১৭০-৮০ করার মতো স্বাভাবিক উইকেট ছিলনা এটি। বিশেষ করে খুব ভাল একটি ব্যাটিংসমৃদ্ধ দলের বিরুদ্ধে খেলাটা আরও কঠিণ এখানে। অবশ্যই, সবাই ভুল থেকে শিক্ষা নেয় এবং সে কারণেই আমরা এখন অনুশীলন করছি।’
ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাঁ হাতি পেস বোলার আমিরের সঙ্গে ওয়াহাব রিয়াজ ও ইরফানÑ এমন এক পেস ত্রয়ী আছেন যাদের দলে, তাদের ব্যাটসম্যানদেরও তো কিছু একটা করতে হবে। সে কারনে পেস ফ্রেন্ডলী উইকেটে ১৪০ থেকে ১৫০ রান স্কোর চাই পাকিস্তানের। অবশিস্ট ম্যাচগুলোতে সেটাই লক্ষ্য পাকিস্তানের। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে শ্রীলংকার জয় ১৪ রানের, বাংলাদেশের জয় সেখানে ৫১ রানের। অপেক্ষাকৃত দুবর্ল প্রতিপক্ষকে এর চেয়েও বড় ব্যবধানে হারানোর ছক আকঁছে পাকিস্তান। টি-২০’র অভিষেক জয় দিয়ে করেছে উদযাপন পাকিস্তান, ৪ বছর ৯ মাস আগে হাফ সেঞ্চুরি উদযাপনেও জয়। কাকতালীয় হলেও সত্য, হাফ সেঞ্চুরির ভেন্যুতেই সেঞ্চুরি উদযাপন করছে পাকিস্তান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন