নীরব কোনো ঘরে
সাদিক আল আমিন
অতি বেশি নীরব কালো রাতে শহরের চোখে কালি ছুঁড়ে দিয়ে জেগে থাকো নিশ্চুপ।
চোখ টানটান কাজলে আঁটা ঠিকঠাকভাবে।
শুধু বেঠিকে গা মেলে দিয়েছে শূন্যে ভাসানো ওড়না।
বেলকনির গ্রিল বেয়ে উঠে আসা অপত্য জোনাকির পুচ্ছ ছুঁয়ে দেখে নিয়েছো জোনাক পৃথিবীর অবাধ মুগ্ধতা।
সেই সাথে সেলফের তাকে তাকে সাজানো কবিতার ঘ্রাণ টেনে নিয়ে পাঠ করেছো নজরুল, জীবনানন্দ।
আমাকে পাঠ করোনি তুমি
তাই এ নিশিঘেরা কামরার হঠাৎ নিভে যাওয়া জোনাকির অন্ধ স্পন্দনের মতোই চোখ মেলে বসে আছি অপাঠ্য পাÐুলিপির সাদা পাতায়।
নক্ষত্রগুলো
মীম মিজান
রাস্তার পাশের ময়লা ভাগাড়ে;
আঁধার রাতের উজ্বল নক্ষত্রগুলো জীর্ণ বস্তা স্কন্ধে;
কুড়ে কুড়ে বের করছে বড়বাবুর শপিংমলের তরতাজা ইলিশের উচ্ছিষ্ট।
পাচ্ছে একটু আধটু খুঁজে স্বপ্ন বা মিনা বাজারের বৃহদাকার হিমাগারে রক্ষিত হাঁসের হাড়।
কিন্তু একটি খাদ্যকণা কিংবা কোনো ক্ষুদ্রাণু মাছের শকল;
যা হয়েছিল কম তেল-পেঁয়াজে পাক।
না, এই রকম কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই এই খাদ্য দস্তরখানায় নক্ষত্রদের।
পিছে পিছে ছুটছে গৃহ পরিচারিকা হাতে নিয়ে পুষ্টিকর ভরপুর সাংকি;
কাঠপুতুল পালায়,
খাওয়া তো দূরের কথা;
গন্ধও শুঁকতে চায় না ঐ গরল পুষ্টির।
সে জানে এর জন্য যে বিনিময় এসেছে...
তা আমার জনক মস্ত বড় কর্মকর্তা ভিক্ষা চেয়ে এনেছে টাই গলবন্ধ হয়ে।
যে দিয়েছে ভিক্ষা---
রাতে পারেনি ক্ষুধার্ত মানিকের মুখে দিতে একটি দানা।
পারেনি নিতে বয়ঃবৃদ্ধ জননীর কাশির সিরাপখানা।
পথ চলতে চলতে
রওশন মতিন
পথ চলতে চলতে চলতে চলতে সমস্ত পথ ফুরিয়ে যায়
মুছে যায় পথের ঠিকানা, মুছে যায় পথের নিশানা,
স্বপ্নময় বসন্তের আলোময় বালিকার গোধূলিবেলায়
পথ চলতে চলতে পথে পথে পথ থেকে পথে
অন্য এক পৃথিবীর প্রণয় পথ তো ফুরিয়ে যায় না;
রঙের ঝাপি খুলে এই পথে খুঁজি ভালবাসার আস্তানা
এখন জ্যোৎস্নার গ্রীবায় গাঢ় রক্তের প্লাবন
এ যেন ঘুমের ভিতরে গাঢ় জাগরণ,
শান্ত জলের আয়নায় পাতালপুরীর রূপকথার আকাশ
ডাকে তার অপার্থিব হাত বাড়িয়ে
জানি না, ডাইনিরা এ পথে ওঁৎপেতে আছে কিনা,
কেননা পথগুলো চেনা নয় ছলনার বিরহী কাঁকরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন