স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে জন্মগত রক্ত রোগ হিমোফিলিয়া রোগীর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে প্রতি ১০ হাজারে একজন হিমোফিলিয়া রোগী আছে। সে হিসাবে বাংলাদেশে কমপক্ষে ১৬ হাজার হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছে। যাদের অধিকাংশই এখনো শনাক্তের বাইরে। এ পর্যন্ত মাত্র চার শতাংশ রোগীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। পাশপাশি অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণজাতীয় বংশগত রোগ হিমোফিলিয়া। যে রোগ হলে রক্ত সহজে জমাট বাঁধে না। এ রোগ পুরুষদের হয়, তবে নারীরা এ রোগের জিনের বাহক।
বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস উপলক্ষে ‘তাদের কথা শুনুন’ প্রতিপাদ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে আলোচনা সভা ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এরআগে সকাল ৯টায় দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত জন্মগত এ রোগটির বিষয়ে গণসচেতনতামূলক প্রচারের লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারেও বাংলাদেশ সোসাইটি অব হেমাটোলজি’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. এহতেশামূল হক চৌধুরী দুলাল।
বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (গবেষণা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও রক্তরোগ ও হিমোফিলিয়া বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব হেমাটোলজি’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মাসুদা বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব হেমাটোলজি’র সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. মাহবুবুর রহমান।
চিকিৎসকরা এ রোগের শনাক্তকরণের প্রধান বাধা হিসেবে রক্তদাতার স্বল্পতা, ফ্যাক্টর এইট-নাইনের দুষ্প্রাপতা ও উচ্চমূল্য, সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকা, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের স্বল্পতা, পঙ্গু রোগীদের পরিচর্যা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না থাকাকে দায়ী করেছেন। পাশপাশি এ সমস্যা সমাধানে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণার উপর গুরুত্বারোপ করেন। হিমোফিলিয়ার লক্ষণ সম্পর্কে চিকিৎসকরা জানান, অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টের অভ্যন্তরে বা মাংসপেশির অভ্যন্তরে কোনো রকম আঘাত ছাড়া বা সামান্য আঘাতেই রক্তপাত ঘটা। এতে সংশ্লিষ্ট স্থান ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। পাশপাশি প্রসাব, পায়খানার সঙ্গে রক্তপাত হওয়া। এ ছাড়া মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের কারণে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া হিমোফিলিয়া রোগের লক্ষণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন