শিবগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা ঃ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আবারো পাথর আমদানি নিয়ে জটিলতার দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দেশীয় আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে নেয়া সিদ্ধান্ত ভারতীয় রপ্তানীকারকরা না মানায় এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওই বৈঠকে পাথরের রপ্তানী মূল্য পুনঃনির্ধারণ, উন্নতমানের পাথর রপ্তানী ও পাথর মেট্রিক টনের পরিবর্তে সিএফটির পরিমাণে রপ্তানী সিদ্ধান্ত হয়।
বন্দর সূত্র জানায়, সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানীদের নিম্নমানের পাথর পাঠানো ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ইচ্ছে মতো মূল্যবৃদ্ধির কারণে ৬ ফেব্রুয়ারী থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করে দেয়া হয়। টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর দু’দেশের আমদানি-রপ্তানীদের সমঝোতা বৈঠকের পর আবারো শুরু হয় পাথর আমদানি। পাথর আমদানি-রপ্তানী নিয়ে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সর্বশেষ বৈঠক হয় ২১ ফেব্রুয়ারী। সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানি গ্রুপের সঙ্গে ওই বৈঠক ভারতের পাথর রপ্তানীকারকরা আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান পাথরের মূল্য কমানোর। বন্দর সূত্র জানায়, ৭ মাস আগে ভারতের রপ্তানীকারকরা রকম ভেদে যে পাথরের দাম নিত প্রতি সিএফটি ১৮-২২ রুপি। কিন্তু দুই মাস আগে হঠাৎ করেই তা বাড়িয়ে করা হয় ২৮-৩০ রুপি। সম্প্রতি পাথরের দর পুনঃনির্ধারণ করা হয় ৩৬-৩৭ রুপিতে। সে কারণে পদ্মা সেতু ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পাথর সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না আমদানিকারকদের। এতে করে চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তারা। বাধ্য হয়ে ৬ ফেব্রুয়ারী থেকে ৫ দিন পাথর আমদানি বন্ধ রাখেন আমদানিকারকরা। ২১ ফেব্রুয়ারীর বৈঠকে দর কমানোর আশ্বাস দিয়ে যান ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি উন্নতমানের পাথর দেয়ারও আশ্বাস দেন। কিন্তু তিনদিন পরই ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ২৪ ফেব্রুয়ারী ভারতের রপ্তানীকারকরা চিঠি দেন বাংলাদেশি আমদানিকারকদের। ওই চিঠিতে পাথরের মূল্য কমানোর হবে না বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি পাথর আমদানি সিএফটিতেই রপ্তানী করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়া হয। আর এ নিয়ে মহাসঙ্কটের আবর্তে পড়তে যাচ্ছে দেশীয় আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারীরা। সোনামসজিদ স্থলবন্দর আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব এমন চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেন। সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার সাঈদ আহম্মেদ রুবের জানান, প্রতিদিন ভারত থেকে আড়াইশ ট্রাকে ১০ হাজার মেট্রিক টন পাথর আমদানি হয়। সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে জানুয়ারী মাসে ৬ হাজার ৮০৪ ট্রাকভর্তি অর্থাৎ ২ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন পাথর আমদানি হওয়ার সরকার রাজস্ব আয় করে প্রায় ২২ কোটি টাকা। সোনামসজিদ পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড ও আমদানিকারক গ্রুপ জানিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে ৫ হাজার ৩৯৭ ট্রাকে ১ লাখ ৮৯ হাজার মেট্রিক টন, ডিসেম্বর মাসে ৭ হাজার ১০২ ট্রাকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন ও ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে ৫ হাজার ৭৫০ ট্রাকে প্রায় ২ মেট্রিক টন পাথর আমদানি হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন