বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

এক বছর নিষিদ্ধ মামুনুল, জাহিদ

প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, মাদক সেবন ও অনুমতি ছাড়া সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অপরাধে জাতীয় দল থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম ও মিডফিল্ডার জাহিদ হোসেন। মিডফিল্ডার সোহেল রানা ও ডিফেন্ডার ইয়াসিন খানকে করা হয়েছে ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ। এছাড়া ডিফেন্ডার আতিকুর রহমান মিশু, ইয়ামিন মুন্না ও গোলরক্ষক শহিদুল আলম  সোহেলকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
জাতীয় দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আগেই অভিযুক্ত ছিলেন এই ৭ ফুটবলার। একই কারণে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে জর্ডানের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে দলে রাখা হয়নি তাদেরকে। ভারতের কেরালায় সাফ সুজুকি কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে পড়ে জাতীয় ফুটবল দল। পরে দেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে বাহরাইন যুব দলের কাছে হেরে থেমে যায় মামুনুলদের পথ চলা। এ দুই টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার তদন্ত করে বাফুফের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটি সাত ফুটবলারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে ন্যাশনাল টিমস কমিটির কাছে প্রতিবেদন দেয়। সে অনুযায়ী ন্যাশনাল টিমস কমিটি ফুটবলারদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছিল। আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় ফুটবলারদের বক্তব্য তদন্ত কমিটির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এছাড়া মামুনুল তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্য কথা বলেছেন বলেও প্রমাণিত হয়েছে। যে অপরাধটি আমলে নিয়ে গতকাল ন্যাশনাল টিমস কমিটি মামুনুলদের  বিরুদ্ধে শাস্তির এই রায় দেয়। এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিলও করতে পারবেন না খেলোয়াড়রা। এমনকি ন্যাশনাল টিমস কমিটি তাদের যে শাস্তি দিয়েছে, তাতে বাফুফে নির্বাহী কমিটির অনুমোদনের কোনও প্রয়োজন নেই।
কাল বাফুফে ভবনে প্রায় দুই ঘণ্টার সভা শেষে বাফুফে সহ-সভাপতি ও ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ বিষয়গুলো মিডিয়াকে জানান। তিনি বলেন,‘’আমরা দশ দিন আগে এক সভায় জাতীয় দলের সাত খেলোয়াড়কে সাময়িক বহিষ্কার করেছিলাম। এরপর তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তাদের বক্তব্য তদন্ত কমিটি পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাই করে দেখে একটি প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দেয়। তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত সাত  খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপরাধের প্রমাণ মিলেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মামুনুল ও জাহিদ দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত। তারা মাদক সেবনের মতো অপরাধ করেছেন। তাছাড়া মামুনুল আচরণবিধি ভেঙে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। অথচ তিনি এসব অভিযোগ তদন্ত কমিটির কাছে অস্বীকারও করেন, যা গুরুতর অপরাধের মধ্যে পড়ে। সবদিক বিচার করে মামুনুল ও জাহিদকে জাতীয় দল থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’ কাজী নাবিল যোগ করেন, ‘ইয়াসিন খান ও সোহেল রানার আপরাধের গভীরতা কম বলে তাদের ছয় মাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরা চারজন তাদের শাস্তি চলাকালীন জাতীয় দলে খেলতে পারবেন না, তবে তারা ক্লাবের হয়ে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবল  খেলতে পারবেন। তবে ইয়ামিন মুন্না, শহিদুল আলম সোহেল ও আতিকুর রহমান মিশুকে সতর্কতামূলক চিঠি দেয়া হবে। তাদেরকে ভবিষ্যতে জাতীয় দলে নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে আরো সচেতন হতে বলা হয়েছে। যদি জাতীয় দলের কোচ তাদের ডাকেন তবে তারা উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন।’
এদিকে শাস্তির খড়গ মাথায় নিয়ে দারুণ হতাশ সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। ন্যাশনাল টিমস কমিটির রায় ঘোষণার পর তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমি এখনো জানিনা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটা আসলে কি? তদন্ত কমিটি আমাকে ডাকার পর আমি তাদের সঙ্গে দেখা করে জিঞ্জাসা করেছি, আমার অপরাধ কি? তারা কিছুই বলেনি। জাহিদ অন্যায় করেছে এটা সবাই জানেন। কিন্তু আমি কি অন্যায় করেছি। জাহিদের সঙ্গে আমাকেও একবছরের জন্য শাস্তি দেয়া হলো। কিন্তু আমি বলবো আমার কোন অন্যায় নেই। যদি আপিলের সুযোগ থাকতো, তাহলে তা করতাম। কিন্তু সেটাও তো নেই।’
ফুটবলারদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, ন্যাশনাল টিমস কমিটির সদস্য ইলিয়াস হোসেন, সত্যজিৎ দাস রুপু ও আমিরুল ইসলাম বাবু।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন