শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের অপেক্ষায় মোটা চালের রফতানি

প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক ঃ মিসর, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, মরোক্ক, দক্ষিন আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ থেকে মোটা চাল আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মোটা চাল রফতানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে খাদ্য, কৃষি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে মোটা চাল রফতানি পুরোপুরি উন্মুক্ত না করলেও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের ভিত্তিতে (কেস-টু-কেস) বাংলাদেশ থেকে মোটা চাল রফতানির অনুমোদন দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণলায়।
বাংলাদেশের রফতানি নীতি অনুযায়ী, বেসরকারিভাবে মোটা চাল রফতানি নিষিদ্ধ। ফলে চাল রফতানি করতে হলে ২০১৪ সালের ১৫ জুন জারি করা এসআরও (অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন) সংশোধন করতে হবে। ওই এসআরও অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সুগন্ধি চাল ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রফতানি নিষিদ্ধ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গত বুধবার অতিরিক্ত সচিব জহির উদ্দিন আহমেদের (এডিসি) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘বেসরকারিভাবে মোটা চাল রফতানি’ বিষয়ক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সভায় খাদ্য, কৃষি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সরকারের ভা-ারে চালের মজুদ যথেষ্ট। দেশে এ মুহূর্তে কোনো খাদ্য ঘাটতিও নেই। তাই সীমিতভাবে প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টন চাল বেসরকারিভাবে রফতানি করা যেতে পারে। আর চাল রফতানি করা হলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে এবং মূল্য বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকবে না। যদি চাল রফতানি না করা হয়, তাহলে উৎপাদিত চালের দাম কমে যাবে। ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ জন্য আপৎকালীন চাল মজুদ রেখে বাকি চাল রফতানি করা যেতে পারে। সরকারি ভা-ারে বর্তমানে ১০ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন চালের মজুদ রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ হাইকমিশন, নাইরোবি কর্তৃক বাংলাদেশ হতে চাল রফতানি নিয়ে কেনিয়া, উগান্ডা, তানজানিয়া ও নাইজেরিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে নাইজেরিয়ার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে চাল আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং চালের নমুনা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের আমদানি নীতি অনুযায়ী মোটা চাল রফতানি নিষিদ্ধ পণ্য। খাদ্য মন্ত্রণালয় যদি চাল রফতানি করতে চায় তাহলে তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে বলেছি। তাদের প্রস্তাব এলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা বিবেচনা করবে।
তিনি আরও বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের হাতে চাল মজুদ আছে। কিন্তু দেশে চালের চাহিদা কত, চাল আছে কত, কি পরিমাণ রফতানি করা সম্ভব- এসব বিষয়ে কোনো প্রস্তাব তারা দেয়নি। মোটা চাল রফতানি উন্মুক্ত করে দিলে যদি দেশের অভ্যন্তরে ঘাটতি দেখা দেয় তখন সমস্যার সৃষ্টি হবে। এ জন্য বলেছি, কেস-টু-কেইস ভিত্তিতে মোটা চাল রফতানির আবেদন জানালে সেটা বিবেচানা করা হবে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, চাল রফতানির পুরো বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের। তারা যদি মনে করে চাল রফতানিতে দেশের বাজারে কোনো প্রভাব পড়বে না, তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। যেহেতু মোটা চাল রফতানি নিষিদ্ধ পণ্য, তাই এটা রফতানি করতে হলে আগে এসআরও জারি করতে হয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে তিন কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হয়। আর প্রতিদিনের চাহিদা ৯০ হাজার মেট্রিক টন। সে হিসেবে বছরে তিন কোটি ২৮ লাখ মেট্রিক টন চাল প্রয়োজন। এ ছাড়া সরকারের গুদামে মোট খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে ১৪ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল ১০ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টন এবং গম তিন লাখ ৭৬ হাজার মেট্রিক টন। ২০০৬ সালের নীতি অনুযায়ী আপৎকালীন সময়ের জন্য ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রাখতে হয়। অর্থাৎ আদর্শ মজুদের লক্ষ্যমাত্রা থেকে চার লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বেশি রয়েছে। সূত্র ঃ দ্য রিপোর্ট

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন