গফরগাঁও উপজেলা সংবাদদাতা : গফরগাঁও উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে বোরো ধান কাটার ধুম পড়েছে। তবে সর্বত্র কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়ায় ধান কাটতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বাম্পারফলন হলেও অসময়ে বৃষ্টির ফলে নিন্ম এলাকায় ধানের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার ফলে কৃষকের মুখে এখন আর হাসি নেই। তার পরেও কৃষি শ্রমিকের মূল্য খুবই চড়া। দৈনিক তিন বেলা খাবার দিয়ে ও ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে ও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এতে করে নির্ধারিত সময়ে ধান কেটে ঘরে আনা সম্ভব হবে না। এখন পুরোদমে ধান কাটার মৌসুম চলছে ।
গফরগাঁও উপজেলা কৃষি অফিসার এস এস ফারহানা হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার হেক্টর। এ গুলোর মধ্যে ৬ হাজার ২শত ৪০হেক্টর জমিতে বিদ্যুতের মাধ্যমে আবাদ হয়েছে। এ বারে কৃষকদের মধ্যে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। একবার গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে ফলন ভাল হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারে আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুক‚লে থাকার ফলে ইরি বোরো ফসল ভালো হয়েছে। ফলে কৃষকরা এখন আধা পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় অসময়ে ভয়াবহ সর্বনাশা বৃষ্টির ফলে নিন্ম এলাকায় পাকা ধান তলিয়ে গেছে। ফলে ধান ঘরে তোলা নিয়ে কৃষককুল ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। একমণ ধান উৎপাদন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে। তাও উঠবে না। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গফরগাঁও সালটিয়া, দত্তেরবাজার, কান্দিপাড়াসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে নতুন ধান উঠলে ও বেচা-কেনা খুবই কম। চিকন ধান প্রতিমণ ৮শত টাকা থেকে ৯শত টাকা টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা ধান প্রতিমণ ৬শত টাকা থেকে ৭শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গফরগাঁও উপজেলা সদর শিবগঞ্জ রোডের চালের ব্যবসায়ী মো. মজিবর রহমান খান জানান, নতুন চিকন চাল (৫০) কেজী প্রতিবস্তায় ২৮ বিক্রি হচ্ছে ২হাজার ২শত টাকা থেকে দুই হাজার ৩শত টাকা। নতুন মোটা চাল ৫০ কেজি প্রতিবস্থায় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার আটশত টাকা থেকে একহাজার নয়শত টাকা। পাঁচবাগ ইউনিয়নের উত্তর হারিনা গ্রামের মো. কামরুল হাসান রাসেল জানান, বড় আশা নিয়ে বোরো ফসল করে ছিলাম। কিন্তুু অসময়ে বৃষ্টির ফলে বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ এ ফসল করতে প্রচুর টাকা ব্যয় হয়েছে। বোরো ফসল করতে যে টাকা খরচ করেছি তা উঠবে না। ফলে আগামীতে অনেকেই বোরো ফসল করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সার বেশি দামে কিনে দিয়েছিল। তার পরে আবার বেশি দামে মজুরি দিয়ে ধান রোপণসহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যা করা হয়। বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে যে, কৃষি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটা যাচ্ছে না। শ্রমিকের অভাবের কারণ হচ্ছে যে, অনেকেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে র্কমস্থানে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ বিদেশে চলে গেছে। এক সময়ে গফরগাঁও রেল স্টেশনে বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত শ্রমিক আসত কৃষি কাজ করার জন্য। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যে, কালের বিবর্তনের সে দৃশ্য এখন আর চোখে পড়েনা। দিন বদলের পালার সাথে সাথে সব কিছু পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন