শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

অসুস্থতাকে পুঁজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কতিপয় চিকিৎসক

গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারা

| প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে অথরিটি গঠনের মাধ্যমে সকল প্রকার ওষুধ, মেডিকেল ডিভাইস, এক্সেসরিজ প্রভৃতির আদর্শ মূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে হেলথ কনজুমারস রাইটস ফোরাম। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ফার্মাসিউটিক্যাল এন্ড মেডিকেল ডিভাইস প্রাইসিং অথরিটি সবধরণের ওষুধ, মেডিকেল ডিভাইস এবং এক্সেসরিজের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর পান্থপথে একটি কনফারেন্স হলে হেলথ কনজুমারস রাইটস ফোরাম আয়োজিত ‘চিকিৎসাসেবায় মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণ: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়।
বৈঠকে প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা এবং হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, বছরের পর বছর মানুষের বিশ্বাস, অজ্ঞতা আর অসুস্থ্যতাকে পুজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নীতি বিবর্জিত কতিপয় চিকিৎসক ও ব্যবসায়ী। যা জাতির জন্য কলঙ্কজনক। সে কারণে প্রাইসিং অথরিটি গঠনের মাধ্যমে সকল মেডিকেল ডিভাইসের মূল্য নির্ধারণের পাশাপাশি চিকিৎসকদের নীতি-নৈতিকতায় শিক্ষিত হওয়ার পরামর্শ দেন তিন। এক্ষেত্রে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মানকে উন্নত করতে বিএমডিসি আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ার উপরে জোর দেন। তা না হলে এ সকল চিকিৎসক চিকিৎসাসেবা প্রদানের পরিবর্তে কমিশন বাণিজ্যে বেশি মনোযোগী হয়ে পড়বে। একইসাথে তিনি নীতি নৈতিকতার খাতিরেই কোন চিকিৎসককে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি মেডিকেল ব্যবসায় সম্পৃক্ত না হওয়ারও আহবান জানান।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) ও যুগ্মসচিব ড. মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, রিং বাণিজ্যে যদি কেউ প্রতারিত হয় সেক্ষেত্রে ভুক্তভোগী প্রমানাদিসহ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক মেডিকেল ডিভাইসের এমআরপি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে সেহেতু তা যথাযথ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনঅধিকার ফাউন্ডেশনের অনারারী এডভাইজার এম রফিকুল ইসলাম মিলন। ফোরামের সমন্বয়কারী ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, থিওলজিক্যাল সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ড. আলমাসুর রহমান, স্বচ্ছ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুমন শেখ, অরুনোদয়ের তরুণ দলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবু প্রমুখ। এছাড়াও বৈঠকে আয়োজক সংগঠনসমুহের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বক্তারা অবিলম্বে প্রাইসিং অথরিটি গঠনের পাশাপাশি হৃদয়বিদারক রিং বানিজ্যের সাথে জড়িত শতাধিক চিকিৎসক ও ২১টি প্রতিষ্ঠানকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, ঔষধ প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, রিং বানিজ্যের মাধ্যমে সিন্ডিকেট কর্তৃক রোগীদের নিকট হতে আত্মসাৎকৃত ৫৯৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ, সরকারিভাবে পর্যাপ্ত রিং আমদানি করে ভর্তুকি প্রদানপূর্বক রোগিদের সরবরাহ করে সেবা প্রদান, মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য পর্যাপ্ত মনিটরিং ব্যবস্থা করা এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত রোগী ও চিকিৎসক কর্তৃক নির্ধারিত ডিভাইস স্থাপনের অপারেশনকালীন ভিডিও প্রদর্শন ও ভিডিও সরবরাহের পদ্ধতি চালুর দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন