এস.কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে ঃ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় ঝিনাইগাতীতে এখন চলছে পানির জন্য হাহাকার! এতে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গ্রামাঞ্চলে কমপক্ষে ৭/৮ হাজার নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট এবং চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকদের সেচ সংকটও প্রকট থেকে প্রকটতর আকার ধারণ করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
এমনিতেই পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ ময়লাযুক্ত খাল-বিল, নদী-নালা ও কুয়ার পানি পান ও গৃহস্থালী কাজে ব্যবহার করে। তাও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। তার পর আবার নলকূপেও পানি না ওঠায় সাধারণ মানুষ পড়েছে মারাত্মক বিপাকে এবং বিশুদ্ধ খাবার পানীর সংকটে।
স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, গত বছরই গারো পাহাড়ি অঞ্চলে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর ৭০ ফুট নিচে ছিল। মনে হচ্ছে এ বছর আরো ১শ ফুট নিচে নেমে গেছে। এ অবস্থা হলে শত শত গভীর ও অগভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়বে।
তাছাড়া সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর উজানে শ্রীবরদীর বালিজুরীতে বেআইনী বাঁধ দিয়ে ওই এলাকায় ইরি-বোরো ক্ষেতে চুটিয়ে পানি বিক্রি করায় ভাটি অঞ্চলের বিশাল এলাকায় চরম পনি সংকট দেখা দেয়। এবারও ৬টি বেআইনি বাঁধ দেয়ার কাজ পুরোদমে চলছে বলে জানা যায়। ওই বেআইনি বাঁধগুলো দিয়ে পানি আটকানোর দরুন প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সেচ সংকটতো দেখা দেবেই পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানিরও হাহাকার আরো ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে বলে পর্যবেক্ষ কমহল আশংকা প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলাটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থিত এবং অন্যান্য যে কোন উপজেলার চেয়ে তুলনামূলকভাবে সর্বদিক দিয়েই অবহেলিত। ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলায় ১ লাখ ৬০ হাজার চির অবহেলিত লোকের বসবাস এখানে। তার মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই কৃষিজীবী।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ কোরবান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। চলতি মৌসুমে ঝিনাইগাতী উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমি ইরি-বোরোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেছে যে, ফি-বছর ইরি-বোরো মৌসুমে এখানে কৃষকদের সেচসহ বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন