লোকমা ন তাজ : সাহিত্য জাতির গর্বিত সম্পদগুলোর একটি। একটি জাতি মেধা-মননে কেমন, তার সার্বিক পরিচয় ফুটে ওঠে তাদের সাহিত্য ও শিল্পকর্মে। পৃথিবীর বিখ্যাত লেখকরা তাদের সর্বোচ্চ মেধা ও শ্রম দিয়ে লিখে শেষ করেন একটি গল্প, কবিতা, উপন্যাস। যার মধ্যে কিছু স্থান করে নেয় কালজয়ী হিসেবে, যা তার জাতিকে শুধু গর্বিত করে না, কখনও কখনও তা হয়ে ওঠে বিশ্ব মানবিকতার দর্পণও। স¤প্রতি জাপানে একটি সাহিত্য বিষয়ক প্রতিযোগিতায় মানুষের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করেছে রোবট-লেখক। রক্তমাংসের লেখকের সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা রোবট যৌথভাবে রচনা করেছে একটি ছোটখাটো উপন্যাস। শুধু তাই নয়, বিজয়ী হতে না পারলেও প্রতিযোগিতার চারটি ধাপের প্রথম ধাপটি অনায়াসে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে মানুষ আর রোবটের সমন্বয়ে রচিত উপন্যাসিকাটি। রোবট মানুষের অনেক উপকারে আসলেও লেখালেখিতে মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারটা এই প্রথম। আর এই অভিনব কাজটি করে দেখিয়েছেন জাপানের একদল গবেষক। জাপানে অনুষ্ঠিত ‘নিক্কেই হোশি সিনঝি’ সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মানুষের পাশাপাশি সফটওয়্যার দ্বারা রচিত সাহিত্যও গ্রহণ করা হয়। জাপানের বিখ্যাত সায়েন্সফিকশন লেখক হোশি সিনঝি’র নামেই নামকরণ করা হয়েছে এই সাহিত্য পুরস্কারটি। প্রতিযোগিতায় রোবটের ১১টি লেখা থেকে একটি লেখা প্রথম রাউন্ড অতিক্রম করতে পারে। প্রথম রাউন্ড অতিক্রম করা রোবটের লেখা উপন্যাসিকার শিরোনাম ছিল ‘দ্য ডে কম্পিউটার রাইটস আ নভেল’। এখন অনেকেই এরকমটি ভাবতে পারেন যে হয়তো দূর ভবিষ্যতে রোবট মানুষকে সাহায্য করা বাদ দিয়ে গল্প উপন্যাস লেখা শুরু করবে। অথবা জনপ্রিয় লেখক হবে কোনো আধা-মানুষ আধা-রোবট যাকে আমরা সাইবর্গ বলি তেমন কিছু যা কিনা ভবিষ্যতের মানুষদের জন্য সাহিত্য রচনা করবে। কিন্তু আধা রোবটিয় লেখনীর মানবিক ব্যাপারগুলো মানুষ লেখকের মানবীয় মস্তিষ্কের উপরই নির্ভর করবে। তবে আমরা হয়তো আর কখনোই মহান ফরাসি লেখক ভিক্টর উগোর মতো দীর্ঘ আঠার বছর ধরে লেখা ‘ল্য মিজারেবল’-এর মতো কোনো চিরায়ত রচনা পাব না। তাহলে মানুষ সাহিত্যিকদের কিছুটা আতঙ্কগ্রস্ত হতেই হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন