রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

২ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন

| প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য দুই হাজার ৩৮৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২১ জুন) বিকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আনিসুল হক প্রস্তাবিত এই বাজেট ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে গত অর্থবছরের (২০১৬-১৭) এক হাজার ২৩১ কোটি ২৬ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয় ৯৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য আয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্প থেকে এক হাজার ১৭৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে।
গত অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ ধরা হয়েছিল দুই হাজার ৮৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সংশোধিত বাজেটে ডিএনসিসির প্রায় ৬০ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে।
বাজেট বক্তব্যে মেয়র অনিসুর হক জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিজস্ব আয়ের অন্যতম খাত হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে ৪৮০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া মহাখালী ও আমিনবাজারে সিটি কর্পোরেশনের বাজার থেকে সেলামি বাবদ ১৬০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। মোট রাজস্ব আয়ের ৫০ দশমিক ছয় শতাংশ ধরা হয়েছে এ খাত থেকে। কিন্তু গত অর্থবছরে হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে এসেছে ২৯০ কোটি টাকা এবং বাজার সালামি থেকে এসেছে পাঁচ কোটি টাকা। এ খাতসহ অন্যান্য খাতে আয় কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরে ৩৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কম এসেছে।
এদিকে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৬০ কোটি টাকা এবং সম্পত্তি হস্তান্তর বাবদ ১৮০ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক খনন ফি বাবদ ৫০ কোটি টাকা, গরুর হাট ইজারা বাবদ ২১ কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন বাবদ ছয় কোটি, বিদ্যুৎ বিল বাবদ ১২ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে ডিএনসিসির।
অন্যদিকে, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ডিএনসিসি হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ ৪৮৬ কোটি টাকা, বাজার সালামি ১২০ কোটি টাকা, বাজার ভাড়া ১০ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স ৬০ কোটি টাকা, রিক্সা লইসেন্স ফি ৩০ লাখ টাকা, প্রমোদ কর দুই কোটি টাকা, সম্পত্তি হন্তান্তর কর ১৮০ কোটি টাকা, নগর ট্যাক্স এক কোটি টাকা, ক্ষতিপূরণ (অকট্রয়) দুই কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন ছয় কোটি টাকা, বাস ট্রাক টার্মিনাল ১০ কোটি টাকা, গরুর হাট ২১ কোটি টাকা, ইজারা (টয়লেট, ঘাট) ৫০ লাখ টাকা, পুরাতন অকেজো মালামাল বিক্রি ২৫ লাখ টাকা, জবাইখানা ইজারা ৪০ লাখ, সড়ক খনন ফি ৫০ কোটি, ঠিকাদার তালিকাভূক্তি ফি ১০ লাখ টাকা, যন্ত্রপাতি ভাড়া ১০ লাখ, সিডিউল ও অন্যান্য ফরম বিক্রি ৫০ লাখ, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া দুই কোটি, কবরস্থান, শ্মশানঘাট চার কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিল আদায় ১২ কোটি টাকা, বিবাহ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন পাঁচ কোটি টাকা, অন্যান্য ভাড়া দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে চার কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
এছাড়া অপ্রয়োজনীয়, অব্যবহার্য সম্পদ বিক্রিয় ও অন্যান্য পাঁচ কোটি টাকা, ঋণ গ্রহণ এক কোটি টাকা, ঋণ আদায় ৫০ লাখ এবং বিলুপ্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের স্থিতি থেকে প্রাপ্ত পাঁচ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে।
বাজেটে সরকারি অনুদান থোক ১০০ কোটি টাকা, সরকারি বিশেষ অনুদান ৫০ কোটি টাকা এবং সরকারি ও বৈদেশিক সাহার্য্যপুষ্ট প্রকল্প এক হাজার ২৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
বাজেটের ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য খাতগুলো হচ্ছে- বেতন, পারিশ্রমিক ও ভাতা ১৭৫ কোটি টাকা, যা গতবছর ছিল ১৩৫ কোটি টাকা। জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুৎখাতে ৫৬ কোটি টাকা, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ৬০ কোটি টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণে ২০ কোটি টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, গত আড়াই বছরে ডিএনসিসির উন্নয়নে আমাদের চেষ্টার কোনও কমতি ছিলো না। এর মধ্যে আমরা অনেক কাজ করেছি। উত্তরার চেহারা বদলে গেছে, ফুটপাত বাড়িয়ে এখন ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত হয়েছে। কাজের কোয়ালিটির বিষয়ে আমাদের কোনও ছাড় নেই।
আনিসুল হক আরও বলেন, আমরা এরই মধ্যে দেশিয় প্রজাতির ১৬ হাজার ৩৩৮টি গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আর চার লাখ ৬৯ হাজার ৬০৮টি ছোট ফুলের গাছ লাগানো হবে। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের উপযোগী ফুটপাত নির্মাণ করেছি। বিদেশি যেসব দূতাবাস ফুটপাত দখল করে রেখেছে তাদের উচ্ছেদ করেছি। উত্তরা-গুলশানের চেহারা বদলে যাচ্ছে। অধিকাংশ এলাকায় সিসি টিভি স্থাপন করেছি।
পানিবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এরই মধ্যে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছি। যেসব খাল বেদখল রয়েছে সেগুলো উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে। বড় বড় ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ডিএনসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিসবাহুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ ভূঁইয়া প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন