শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গাবতলী পশুর হাটে অগ্নিকান্ডের সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও নীরব ডিএনসিসি

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটের অগ্নিকান্ডের ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। এ নিয়ে চরম হতাশা বিরাজ করছে গাবতলী পশুর হাট (ইজারাদার) পরিচালনা কমিটি ও নিরীহ পশু ব্যবসায়ীদের মাঝে। এখনো গাবতলী পশুর হাটের ৩টি পোড়া শেডে আগুনের ধ্বংস স্তূপ পড়ে রয়েছে। আর এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) পক্ষ থেকেও কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার গাবতলী পশুর হাটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। হাটটির ইতিহাসে এ অগ্নিকান্ড নজিরবিহীন ঘটনা। দিনের বেলায় ঘটা ওই অগ্নিকান্ডে বেশ কিছু গরু, ছাগল ও ভেড়া পুড়ে অঙ্গার হয়েছে। এ সময় আগুনে আংশিক পোড়া ১৪টি গরু তাৎক্ষণিকভাবে জবাই করেন ব্যবসায়ীরা।
কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী আবু তৈয়ব বলেন, গত ২৯ জুন সকাল ১০টার দিকে হাটের সামনের ৩টি শেডে আগুন লাগে। আগুনে ছোট বড় মিলে ১৯টি গরু, ২টি বাচ্চাসহ ৩টি ভেড়া এবং ৩ থেকে ৪টি ছাগল পুড়েছে। এ ছাড়া আরো বেশ কয়টি গরু আংশিক পুড়েছে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখনো কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়নি।
ডিএনসিসি অঞ্চল-৪ এর (মিরপুর-গাবতলী) নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাল সিংহ বলেন, এ অগ্নিকান্ডের ব্যপারে এখনও কোন ধরনের তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কিনা তিনি তা জানেন না। তিনি বলেন, গত ২৯ জুন গাবতলী পশুর হাটে আগুনের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যাই। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিতভাবে কোনো অভিযোগ করেনি। কেউ যোগাযোগও করেনি।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৪ এর বর্জব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামন চৌধুরী বলেন, অগ্নিকান্ডের পরই পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিয়ে দ্রুত পোড়া গরু, ছাগল ও আর্বজনা পরিষ্কারে অভিযান চালান তিনি। গাবতলী পশুর হাটের অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গাবতলী পশুর হাট পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো ডিএনসিসির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। অগ্নিকান্ডের দিন ডিএনসিসির অঞ্চল-৪ এর নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাল সিংহ এবং নির্বাহী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান সাহেব এসেছিলেন। তারা সব কিছু দেখে গেছেন। কিন্তু এত বড় ঘটনার পর মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নিতেও আসেননি।
তিনি বলেন, গত রোববার হাট পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মেয়র বরাবর অগ্নিকান্ডের ঘটনাসহ পুরো বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে। মেয়রকে দেয়া আবদেনের অনুলিপি সংশিষ্ট সবাইকে দেয়া হবে।
কিভাবে আগুন লেগেছে- এ প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেননি সানোয়ার হোসেন। পশুর হাটে অগ্নিকান্ড নাশকতা নাকি বৈদ্যুতিক তার থেকে আগুন লেগেছে- সে বিষয়েও পরিষ্কার কিছু বলতে পারেননি তিনি।
সানোওয়ার হোসেন বলেন, হাটে প্লাস্টিকের তৈরি ছাউনিতে বেঁধে রাখা ছিল পশুগুলো। ফলে আগুন লাগার পর তা দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। দড়ি দিয়ে বাঁধা পশুগুলোকে কোনোরকমে বাঁচানো গেছে। তবে শেকল দিয়ে বাঁধা পশুগুলো বাঁচানো যায়নি। ছোট-বড় মিলে ১৫ থেকে ১৭টি গরু পুড়েছে। আর ছাগল ও ভেড়া পুড়েছে ৫ থেকে ৬টি। পুড়ে যাওয়া ছাউনিগুলো দ্রæত মেরামত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরণ দিতে হলে ডিএনসিসির সহযোগিতা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
এই হাটে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আছে সে ব্যপারে তিনি বলেন, হাটের ভেতর কোনো ধরনের চাঁদাবাজির অভিযোগ নেই। যেসব অভিযোগ রয়েছে তা মিথ্যা অভিযোগ। আর এসব অভিযোগ কথিত গোশত ব্যবসায়ী নেতা রবিউল আলম, শামীম আহম্মেদ আর মন্টুদের। মূলত তারাই বড় মাপের চাঁদাবাজ। বাকিতে গরু নিয়ে ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকা মেরে দিয়েছে তারা। তারা এখন আর এ হাটে আসে না। হাটে আসলে গরু ব্যবসায়ীরা দড়ি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন