লোকমান তাজ
তরুণ চিত্রশিল্পী সুলতান ইসতিয়াক। চিত্রকলায় তার পদচারণা শৈশবকাল থেকে। তখন থেকেই তিনি পেন্সিল, জলরং ও তেলরং মাধ্যমে কাজ করে আসছেন। শুরুতে তার কাজের বিষয়বস্তুতে ছিল প্রকৃতি। নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশে রৌদ্র-ছায়ার খেলা। আর নদীতে নানা আকৃতির নৌকা। যেন বাংলাদেশের পরিচয় এই নদী আর নৌকা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই নৌকার জায়গা নিচ্ছে জাহাজ, ট্রলার। শিল্পীর ক্যানভাসে এই পালাবদলের চিত্র। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে জীবন। কিন্তু এতে থেমে থাকেনি জীবনধারা। মানুষের কর্মব্যস্ত জীবনও উঠে এসেছে সেই পালাবদলের সঙ্গে। প্রতিভাবান এই শিল্পীর কাজ পরিচ্ছন্ন। ঢাকাতে স্থানীয়ভাবে বাস করার ফলে এ শহর ও তার আশেপাশের অঞ্চলের মানুষ, তাদের জীবন যাত্রা, শহরের বিভিন্ন স্থান, ঢাকার যানজট, অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থা, শব্দ, রং বৈচিত্র্য ইত্যাদি তাকে বেশি প্রভাবিত করেছে। এছাড়া শহুরে জীবনে রিকশার শহরে, বিদ্যুতের তারের ভিড়েও শিল্পী দেখেন রৌদ্র-ছায়ার খেলা। দেখেন বিকালের রাঙা আলো, দেখেন সন্ধ্যার আলো মিলিয়ে যাওয়া। কিন্তু সবকিছুই খুব শান্ত আর নিরাসক্ত ভঙ্গিতে তিনি তুলে ধরেন তার ক্যানভাসে। শিল্পরসিকদের সেসব ছবি আকৃষ্ট করে। মোহিত করে। সব মাধ্যমে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও জলরং তার প্রিয় মাধ্যম। তেলরঙয়ের ক্ষেত্রে, ঐতিহ্যবাহী ফ্যাট ওভার লিন পদ্ধতিতে কাজ করেছেন। মাধ্যমের প্রয়োগ ও নিরীক্ষা করার ক্ষেত্রে নিজস্বতা বজায় রাখতে চেষ্টা করছেন শিল্পী। ১৪ জুলাই ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হয়েছে এই শিল্পীর ‘ফিগারেশন অফ কম্প্লেক্সিটি এন্ড আরবান এক্সপ্লোরেশন’ শীর্ষক প্রদর্শনী। প্রধান অতিথি হিসাবে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী। সভাপতিত্ব করেন স্থপতি অধ্যাপক সামসুল ওয়ারেস। রফিকুন নবী বলেন, শিল্পীর ক্যানভাসের বিষয় খুব পরিচিত। কিন্তু বলবার ভাষা ভিন্ন। যা শিল্পরসিকদের আকৃষ্ট করবে। ১২ দিনের এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ৪০টি চিত্রকর্ম। আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। সুলতান ইসতিয়াক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ দ্বারা ভ‚ষিত জল রঙের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার -২০১২ এবং তেল এবং পেন্টিং মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার -২০১৫ অর্জন করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন