স্পোর্টস রিপোর্টার : সব সংশয় দূরে ঠেলে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। গতকাল এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই তফসিল ঘোষণা করে তারা। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে বাহফে’র নির্বাচন। এই ফেডারেশনের নির্বাচনী প্রজ্ঞাপন জারি নিয়ে বেশ ক’দিন ধরে আলোচনা-সমালোচনা ছিল দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। আগামী অক্টোবরে দশম এশিয়া কাপ হকি টুর্নামেন্টের আগে বাহফের নির্বাচন হবে কী না তা নিয়ে ছিল সংশয়ও। তারউপর গতকালই শেষ হয়েছে হকি ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ। এমন অবস্থায় এনএসসি কি করে? তারা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে, নাকি সাম্প্রতিক সময়ে অন্য ফেডারেশনগুলোর মত অ্যাডহকের যাতাকলে ফেলে এই ফেডারেশনকে, তা দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলেন দেশের হকিবোদ্ধারা। শেষ পর্যন্ত কোন বিতর্কে না গিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনী প্রজ্ঞাপনই জারি করেছে। পাঁচ সহ-সভাপতি, এক সাধারণ সম্পাদক, দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, এক কোষাধ্যক্ষ ও ১৯ সদস্য নিয়ে ২৮ পদে এবার বাহফের নির্বাচন হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ খসড়া এবং ৯ আগষ্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৭ আগষ্ট মনোনয়ন পত্র দাখিল ও ২৩ আগষ্ট মনোনয়ন প্রত্যাহার এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিন ধার্য করা হয়েছে। ২৭ আগষ্ট নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে এনএসসি পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথকে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
হকি ফেডারেশনের এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর সংখ্যা ৮৬ জন। ইতোমধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। এই পদে লড়তে নির্বাচনী ময়দানে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন সর্বশেষ কমিটির দুই সহ-সভাপতি খাজা রহমতউল্লাহ ও আব্দুর রশিদ শিকদার।
২০১৩ সালের জুলাই মাসের শেষ দিকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলো হকি ফেডারেশনের সর্বশেষ নির্বাচিত কমিটি। তখন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খাজা রহমতউল্লাহ। এরপর নির্বাচনী জটিলতায় বিদ্রোহী হয়ে ওঠে প্রিমিয়ার লিগের পাঁচ দল যথাক্রমে ঢাকা মোহামেডান, মেরিনার ইয়াংস, বাংলাদেশ স্পোটিং, ওয়ারী ও ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব। তাদের সিদ্ধান্ত ছিলো খাজা রহমতউল্লাহ’র অধীনে ফেডারেশনের কোন কার্যক্রমে অংশ নিবে না পাঁচ ক্লাব। যে কারণে দুই বছর গভীর সংকটে ছিলো দেশের হকি। এই সময় বিদ্রোহীরা (ওয়ান্ডারার্স বাদে) প্রিমিয়ার লিগসহ ঘরোয়া সব টুর্নামেন্টেই বর্জন করে। ফলে দেশে হকির জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। তবে দেরীতে হলেও সংকট কেটে যায়। অনেকটা বাধ্য হয়েই সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান রহমতউল্লাহ। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি পদত্যাগ করলে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হন আব্দুস সাদেক। খাজা রহমতউল্লাহ বসেন সহ-সভাপতির চেয়ারে। এরপরেই বিদ্রোহীরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে। বেগবান হয় হকির কার্যক্রম। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মধ্যদিয়ে এই কমিটিরই মেয়াদ শেষ হয়েছে কাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন