বিশেষ সংবাদদাতা : পৃথক দু’টি ঘটনায় পর্নোগ্রাফি ভিডিও নির্মাতা ও জিন-ভূত তাড়ানোর নামে তরুণীদের সঙ্গে পর্নো ভিডিও ধারণকারী দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-পুলিশ।
দেশের একমাত্র বাণিজ্যিক পর্নো ওয়েবসাইট নির্মাতা ফুয়াদ বিন সুলতানকে উত্তরার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ফুয়াদ বাংলাদেশি নারী-পুরুষর অবৈধ মেলামেশার ভিডিও ফুটেজ ৮টি পর্নো ওয়েবসাইটে প্রচার করতো। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে ফুয়াদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে জিন-ভূত তাড়ানোর নামে তরুণীদের সঙ্গে পর্নো ভিডিও ধারণ করে বø্যাকমেইল করার অভিযোগে আহসান হাবিব পিয়ার নামে এক ভন্ডপীরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তাকে গ্রেফতার করে। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত ফুয়াদের বাবা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি। ফুয়াদের কাছ থেকে পাইরেটেড সিডি ও পর্নোগ্রাফি বিস্তারের কাজে ব্যবহৃত ১টি ল্যাপটপ ও ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ফুয়াদকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে র্যাব কর্মকর্তারা জানান, ২০১১ সালে কমিশনের বিনিময়ে বাসা ভাড়া করে দেয়ার ব্যবসা শুরু করে এবং বিভিন্ন ওয়েব সাইটে এ বিষয়ে বিজ্ঞাপন দেয়। ফুয়াদ বৈধ পন্থায় দেশি ও বিদেশি নাগরিকদের গুলশান ও উত্তরায় বিভিন্ন বাসা ভাড়া দিয়ে কমিশন নিত। ২০১৪ সালের দিকে তিনি ইন্টারনেটের ব্যবসা শুরু করেন। এ সময়ে তিনি বিভিন্ন পর্নোসাইট এ বিচরণ করেন এবং তার নেশাকে (মেয়েদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করা) পেশায় পরিণত করার চিন্তা ভাবনা করেন। দুটি বৈধ ব্যবসার অন্তরালে তিনি ২টি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফির ব্যবসা শুরু করেন। এই দুটি ওয়েব সাইটের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে সংগৃহিত মেয়েদের আপত্তিকর ছবি, মোবাইল নম্বর এবং দৈহিক মিলনের বিনিময়ে নির্ধারিত মূল্য উল্লেখ করে বিভিন্ন জনকে আকৃষ্ট করতেন। ফ্ল্যাটে দেহ ব্যবসা পরিচালনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে ফুয়াদ বলেন, পুরো বাড়িটি তাদের নিজেদের। বাড়ির দুইটি ফ্ল্যাটে ব্যবসা করার কারণে প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। উক্ত ফ্ল্যাট দুটিতে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য ভাড়া দিতেন। বিভিন্ন মেয়ে সরবরাহ করতেন। শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া ছেলে-মেয়েদের দৃশ্য গোপন ভিডিও ক্যামেরার মাধ্যমে ধারণ করেন। পরে বø্যাক মেইলিং করে আরো শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন। ওই সব ভিডিও ফুটেজ তিনি তার পর্নো ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিতেন। ওই ফ্ল্যাট হতে অশালীন অবস্থায় মেয়েদের পাশে বসিয়ে নিজে মুখোশ পরিহিতাবস্থায় ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করত যা অপ্রাপ্ত বয়স্কসহ অনেক লোক প্রত্যক্ষ করতেন। ফুয়াদ আরো জানান, ৮টি ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন। এছাড়াও বিভিন্ন যুবকদের নিকট হতে গোপনে ধারণনকৃত অশ্লীল ভিডিও কিনে নিতেন। পরে তা তার সাইটে উপস্থাপন করতেন। তার এই সাইটগুলো থেকে ভিডিও বিদেশি অনেক পর্নোগ্রাফি সাইটে উচ্চমূল্যে বিক্রয় হত। অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহসান হাবিব পিয়ার স¤প্রতি নিজেকে পীর দাবি করে জিন তাড়ানোর কথা বলে মেয়েদের নির্যাতন করত বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় মেয়েদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌন উত্তেজক কথা বলে এবং পরে এদের অনেককে নিজ বাসায় এনে বø্যাকমেইল করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করত। পীর দাবি করা ভন্ড হুজুর মেয়েদের সঙ্গে যৌনকর্ম করার সময় ভিডিও করে তা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করত। পরে সুযোগ মতো ভিডিওর কথা বলে বø্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা আদায় করত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন