জীবনের ইতি নয়, নয় মৃত্যু বিনাশ সত্তার
অবারিত করে মৃত নব এক জীবনের দ্বার
মৃত্যু-বিষ- বিষ নয়, পিয়ালা সে অমীয় সুধার
জঞ্জাল অসার থেকে মরণ বিমুক্ত করে সার।
বিরহীর বিচ্ছেদের যবনিকা করে মৃত্যু দূর
বন্ধুকে পৌঁছিয়ে দেয় সন্নিধানে পরম বন্ধুর।
নশ্বর থেকে অবিনশ্বরে, স্থূল থেকে সূ²ে, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগত থেকে অতিন্দ্রিয় জগতে, সান্ত থেকে অনন্তে রূমীর অভিযাত্রা। সন্দেহ নেই, এ পথ দুর্জ্ঞেয়-দুর্গম, অভীষ্ট বহু দূর। তবে পৌঁছা অসম্ভব নয়। অবশ্য সাফল্য অর্জনের জন্য চাই কঠোর কঠিন সাধনা, রিয়াজত। চাইÑ দুর্জয় মনোবল, সুদৃঢ় আত্মবিশ্বাস। মাওলানা সে হিম্মত জাগিয়ে তোলার লক্ষে অভিযাত্রীদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেনÑ
‘শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি তুমি, সম্মান তোমার অসীম
‘সূরা তীন’ পড়ে দ্যাখো
তোমাকে বলেছে খোদা ‘আহ্সানে তাকভীম’।
অনুপম এ মর্যাদা। অতি মূল্যবান
এ ঘোষণা। হে মানব কর অবধান
তোমার মর্যাদা পাশে নিখিল জগত অবনত
খোদার আরশ হতে সে মর্যাদা উচ্চ সমুন্নত।
জিন ও ফেরেশ্তাকুল পায়নি যে দান
তুমিই লভেছ সেই খলিফার দুর্লভ সম্মান।
কে আমি? কী এই মহাবিশ্ব? কে স্রষ্টা আমার? কে স্রষ্টা মহাবিশ্বের? কী সম্পর্ক তার সাথে আমার? কী সম্পর্ক তাঁর সাথে মহাবিশ্বের? মহাবিশ্বের সাথে আমারই বা সম্পর্ক কী? আমি কোথায় ছিলাম? কোথা হতে এখানে এলাম? আবার যাবই বা কোথায়? যা কিছু হয়, হচ্ছে তার পেছনে সক্রিয় রয়েছে যেই নির্দিষ্ট কার্যকরণÑ সেই কার্যকারণ কি? কি সর্বকার্যকারণের মূল কার্যকারণ? এসব জিজ্ঞাসা স্বতঃই মানব-মনকে আলোড়িত করে। এসব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে রূমীর মসনবীতে। তিনি কুরআন হাদীসের আলোকে সূ²াতি সূ² এসব বিষয়ের বিশ্লেষণ করেছেন ক্ষুরধার যুক্তির মাধ্যমে, কখনো গল্পের রূপকে, নান্দনিক কাব্যিক সুষমায়। জড়বাদ বস্তুবাদ, সারহীন মুতাজেলী যুক্তিবাদ, কর্মহীন জাবরী মতবাদ খন্ডন করেছেন অপূর্ব দক্ষতায়। অহদাতুল অজুদ নাÑ অহদাতুশ শুহুদ, হামা উস্ত নাÑ হামা আজ উস্ত, দ্বৈতবাদ নাÑ অদ্বৈতবাদ আমরা সে সব তাত্তি¡ক আলোচনায় যেতে চাই না। আমরা মসনবীর কাছে যাব, মাওলানা রূমীর কণ্ঠেই শুনব তৎকৃত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন