বিজ্ঞানের এই যুগে বিশ্বকে বলা হয় গ্লোবাল ভিলেজ। সে কারণেই মিয়ানমারের সঙ্কট কার্যত আন্তর্জাতিক সঙ্কটে রূপলাভ করেছে। ‘মানুষ হত্যা মহাপাপ’ ধর্মে দিক্ষিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মিয়ানমারে চলছে গণহত্যা। আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন বন্ধের দাবিতে দুনিয়াব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিশ্বের দেশে দেশে মিয়ানমারের মুসলিম হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ধিক্কার এবং অং সান সুচির নোবেল পুরস্কার বাতিলের দাবি উঠেছে। রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যার প্রতিবাদে সার্ক সদস্য মালদ্বীপ ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে। রোহিঙ্গা হত্যাকান্ড বন্ধের দাবিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো যখন মিয়ানমারের ওপর কঠোর চাপ প্রয়োগ করছে; তখন মিয়ানমারে সফরে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর মোদী। নরেন্দ্র মোদীর বন্ধুপ্রতীম দেশ মিয়ানমারে এই সফর শুধু আনন্দ-উদ্যমের নয়; সঙ্গে যাচ্ছে ৪০ হাজার লিটার জ্বালানী তেল। ভারত পেট্রোলিয়ামের আসাম ভিত্তিক সাবসিডিয়ারি নুমালিঘর তেল শোধনাগার বিপণন টার্মিনাল থেকে ৪০ হাজার লিটার ডিজেলের দুটি ট্যাঙ্কার মিয়ানমারের মণিপুরের সীমান্তবর্তী শহর মোরেহের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে ভারত কী চায়? ভারত কি বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে আলাদা? প্রতিবেশি দেশের আগুন কি তার দেশকে স্পর্শ করবে না? রোহিঙ্গা নিধন বন্ধের দাবিতে মালদ্বীপের মতো দেশ যখন মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেয়; তখন মোদীর মিয়ানমার সফর এবং সে দেশে তেল রফতানী কী বার্তা দিচ্ছে?
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যাযজ্ঞ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাথাব্যথার কারণ হয়ে গেছে। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সুচির দেশে মুসলিম নাগরিকদের বিভৎস্য হত্যাযজ্ঞ এবং তাদের তাড়িয়ে দেয়া কোনো ভাবেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মেনে নিতে পারছে না। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যাবন্ধ এবং তাদের ওপর যুদ্ধংদেহী আচরণ থেকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকালও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির আহবান জানিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিথিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনোর দেখা করতে এলে তিনি এ আহবান জানান। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেফ এরদোগান রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্নবা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ওপর ‘গণহত্যা’ চলছে বলেও অভিযোগ তুলে এরদোগান জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের ভরণপোষণ করতে প্রস্তুত তুরস্ক। গতকাল তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এরদোগান মিয়ানমারের সবচেয়ে ক্ষমতাবান রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সুচিকে ফোন করে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানান। তিনি সুচিকে বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট পুরো মুসলিম বিশ্বের জন্য গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। এরদোগান এর আগে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদকে ফোন করে কথা বলেন এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানান। এরদোগানের ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের পর তিনিই হয়তো ভবিষ্যতে মুসলিম বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জকো উইদোদো রোহিঙ্গা হত্যাকান্রডে নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সা¤প্রতিক সহিংস আচরণের জন্য আমি এবং ইন্দোনেশিয়ার জনগণ দুঃখ প্রকাশ করছি। এই সহিংসতা বন্ধের জন্য ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই হত্যাযজ্ঞে নিন্দা জানাতে কেবল বিবৃতি নয়; বরং ইন্দোনেশিয়ান সরকার এই মানবিক সঙ্কট সমাধানে সাহায্য করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার দাবি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত এবং তাদের সাহায্য করার জন্য বিশ্ব স¤প্রদায়ের মধ্যে সমন্বয় থাকা উচিত। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি গত সোমবার মায়ানমার সফর করে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট থিন কিউ, সেনা প্রধান এবং দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতা বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। ৩ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে অং সান সুচির প্রতি রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুরতা অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গা নিধনের ভয়াবহ চিত্র দেখে নোবেল জয়ী সুচির ওপর ঘৃর্ণা প্রকাশ করে সর্বকনিষ্ঠ নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, গত কয়েক বছর ধরে চলা এ নিষ্ঠুর ও ঘৃণ্য কাজের সমালোচনা করে এসেছি। আমি এখনো অপেক্ষায় আছি আমার সহযোদ্ধা নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি কিছু একটা করবেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট দ্রæত ঘনীভূত হচ্ছে উল্লেখ করে রাখাইন রাজ্যের মানবিক সমস্যা নিরসন করার লক্ষ্যে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনিফাহ আমান অং সান সু চির নীরবতাকে সরাসরি প্রশ্ন করে বলেন, স্পষ্ট করে বলতে গেলে অং সান সু চির ওপর আমি অসন্তুষ্ট। পূর্বে তিনি মানবাধিকারের নীতির ওপর দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি কিছুই করছেন না। রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যা যেন ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। মায়ানমারে মানবাধিকারের বর্তমান অবস্থা দেখার দায়িত্বে থাকে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি গত সোমবার জানান, গত কয়েক বছরের মধ্যে সম্ভবত বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে। হাজার হাজার লোক কঠিন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছেন।
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানসহ জাতিসংঘের কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফর করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন। রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুর্দশা মানবিক ভাবে বিবেচনার এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য ঢাকায় রয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন। রেতনো মারসুদি বাংলাদেশে আসার আগে মায়ানমার সফর করেন। তিনি সেখানে দুদিন অবস্থান করেন। তিনি রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মায়ানমা সংঘাতে বিপর্যস্ত রোহিঙ্গা স¤প্রদায়ের মানুষের অবস্থা দেখতে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন। তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদলু জানায় রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে এবং কথা বলতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু আজ বাংলাদেশ আসছেন।
রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে মায়ানমারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছেদ করেছে মালদ্বীপ। চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটে পাকিস্তান তার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর সহিংসতার পুনরাবৃত্তি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে, মায়ানমার রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন চলছে। মায়ানমার সেনাবাহিনী ও বিজিপি গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ছারখার করে দিচ্ছে। মায়ানমারের রাখাইনে নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উদ্ধারের জন্য জাহাজ পাঠাচ্ছে দ্য মাইগ্রেন্ট অফশোর এইড স্টেশন (মোয়াস) নামের এক সংগঠন। ২০১৪ সালে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সাগরপথে ইউরোপে পালিয়ে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি শরণার্থীকে উদ্ধারের করা মোয়াস তাদের কার্যক্রম মায়ানমারে সরিয়ে নেয়ার কথা জানিয়েছে। মোয়াস বলছে ফিনিক্সের মাধ্যমে রোহিঙ্গা গোষ্ঠীকে যতদূর সম্ভব মানবিক সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সাহায্য দেয়া হবে।
গত ২৩ আগস্ট জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকারের গঠিত কমিশন যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতেও এই নাগরিকত্ব আইন সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে ১১ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৩৬তম অধিবেশনে মিয়ানমার নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন পরিষদের নতুন সভাপতি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এরদোগান ঘোষণা দিয়েছেন জাতিসংঘের বৈঠকে তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরে ইস্যুটি নিয়ে আলোচনার আহবান জানাবেন। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে মিয়ানমারের অমানবিক ও জাতিগত নির্মূল নীতির বিরুদ্ধে নৈতিক অবস্থান গ্রহণ সময়ের দাবি। এই যখন অবস্থা তখন মিয়ানমারের ওপর রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন বন্ধের জন্য চাপ না দিয়ে উল্টো দেশটিতে সফরে গেলেন নরেন্দ্র মোদী? শুধু সফর নয় সে দেশের সামরিক বাহিনীর বর্বরোতায় শক্তি যোগাতে সঙ্গে নিয়ে গেলেন জ্বালানী তেল? নরেন্দ্র মোদি যখন মায়ানমার সফর করছেন তখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা বিরোধী জোর কথাবার্তা শুরু হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয় ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারত সবসময় মিয়ানমারের পাশে থাকবে।’ তারও আগে ভারতের বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজুজু ঘোষণা করেন ভারতে বসবাসরত ৪০ হাজার রোহিঙ্গার সবাইকে বহিষ্কার করা হবে। উল্লেখ ভারতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৬ হাজার জাতিসংঘ নিবন্ধিত শরণার্থী। তবুও মি রিজুজু বলেন, জাতিসংঘের নিবন্ধনের কোনো অর্থ নেই। আমাদের কাছে ওরা সবাই অবৈধ।’ বিবিসির খবরে বলা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরের ঠিক আগে দিল্লির পক্ষ থেকে এসব বক্তব্য বিবৃতির মূল্য উদ্দেশ্য বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের সাথে অধিকতর ঘনিষ্ঠতা সৃষ্টি করা। ভারত চাইছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বার্মিজদের রোহিঙ্গা বিরোধী কট্টর মনোভাবের সাথে একাত্ম হতে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে চীনের মৌনতার সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি সরকার। ভারতের বুদ্ধিজীবীদের অভিযোগ রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রশ্নে বার্মিজ জাতীয়তাবাদী এবং কট্টর বৌদ্ধরা নরেন্দ্র মোদি এবং তার দল বিজেপির সাথে একাত্মবোধ করে। ভারত যে স¤প্রতি বিশেষ অভিযানের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা বলেছেন সেটা রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের প্রতি সমর্থন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সাথে ভারত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে চায়। বিসিসির খবরে বলা হয়েছে ভারতে আশ্রয়ের সন্ধানে যাওয়া প্রায় ৫শতাধিক রোহিঙ্গাকে বন্দী করা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে সারাবিশ্ব যখন রোহিঙ্গা সঙ্কট সমধানের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ; তখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যাকান্ড ইস্যুতে কী চায় ভারত?
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন