শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

পবিত্র জুমার মাসয়ালা-মাসায়েল

প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাওলানা মুফতী মোহাম্মদ আবদুচ্ছমদ
॥ দুই ॥
২। এ ঘটনাটি শুধুমাত্র হযরত সালিক আল গাতফানী (রা.)-এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল।
৩। যেহেতু উক্ত হাদিসটি আল্লাহতায়ালার কোরআনের আয়াতের বিপরীত হয়েছে, তাই উভয়ের মধ্যে সামাঞ্জস্য কল্পে বলা যায় যে, এর অর্থ হবে ইমাম খুতবা দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। সুতরাং আর কোনো প্রশ্নের অবকাশ রইল না।
সারকথা : জুমার দিন খুতবা প্রদানকালে তাহিয়্যাতুল মাসজিদ নামাজ পড়া জায়েজ নেই।
গ্রামাঞ্চলে জুমার সালাত ওয়াজিব হবে কিনা? বর্ণনা কর-
উত্তর: গ্রামাঞ্চলে জুমার নামাজ ওয়াজিব হবে কিনা? সে বিষয়ে ইমামগণের অভিমত নি¤েœ প্রদত্ত হলো-
ইমাম মালিক (রা.)-এর অভিমত : ইমাম মালিক (রা.) বলেন, এমন গ্রাম যেখানে মসজিদ ও বাজার আছে সেখানে জুমা ওয়াজিব হবে। এ হিসাবে বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে জুমার নামাজ ওয়াজিব হবে।
ইমাম শাফেয়ীর অভিমত : ইমাম শাফেয়ী ও আহমদ (রা.) বলেন, এমন গ্রাম যেখানে কমপক্ষে ৪০ জন স্বাধীন, বালেগ, আকেল ও মুকিম পুরুষ থাকে, সেখানে জুমার নামাজ ওয়াজিব হবে। এ হিসেবে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই জুমার নামাজ ওয়াজিব হবে।
তাদের দলিল ও জবাব : গ্রামে জুমার নামাজ জায়েজ মত পোষণকারী ফকিহগণের প্রথম দলিল আল্লাহর বাণী- সূরা জুমা। যার মধ্যে শহর অথবা গ্রাম কোনো কিছুই বিস্তারিত উল্লেখ নেই। কিন্তু আমার ওস্তাদ শায়খুল ইসলাম আল্লামা আজিজুল হক (মা: জি: আ:) একবার তাফসিবের ঘাটায় উক্ত আয়াত থেকে হানাফী মতামতকে প্রমাণ করেছেন। তিনি বলেন, ভাই আমি তেমন বেশি কিছু জানি না, তবে এটুকু বলতে পারি যে, গ্রামের মধ্যে জুমার নামাজ জায়েজ নেই এটা কোরআন মাজিদ দ্বারা প্রমাণিত।
জুমার জন্য সায়ীর হুকুম দিয়েছেন, “দৌড়িয়ে আসা বা লাফ দিয়ে চল”। সায়ী তথা দ্রুত চলার কথা তখনই আসবে যখন দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হবে। অথচ গ্রামের মধ্যে এ রকম নয়। অতঃপর আল্লাহ আরও বলেন, ক্রয়-বিক্রয় ক্ষেত্রে অনেক প্রচার প্রসার করতে হবে। গ্রামের মধ্যে এই রকম প্রচার প্রসারযুক্ত বাজার কোথায়? পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ার এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করার হুকুম দিয়েছেন। ইহা থেকে বোঝা যায় যে, জুমা এমন স্থানে হতে হবে যেখানে অধিক মানুষ সমাগম হতে হবে এবং অধিক প্রসিদ্ধ হতে হবে।
তাদের দ্বিতীয় দলিল হলো : হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসটি ইসলামে প্রথম জুমার নামাজ যা মদিনা শরিফে নবী করিম (সা.)-এর মসজিদে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাহরাইনের একটি গ্রাম জাওয়াছা নামক স্থানে কায়েম হয় (আবু দাউদ ১ম খ- পৃ. ১৫৩) ইহার মধ্যে জাওয়াছাকে একটি গ্রাম বলে অবহিত করা হয়েছে। যার থেকে বোঝা গেল যে গ্রামের মধ্যেও জুমা হয়ে থাকে।
দলিল : আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত হাদিস হতে, অর্থাৎ আবদুর রহমান ইবনে কাব ইবনে মালেক (রা.) তিনি তাঁর পিতা হযরত কাব ইবনে মালেক থেকে বর্ণনা করিতেছেন এবং এই আবদুর রহমান ইবনে কাব নিজ পিতা কাব ইবনে মালেকের কাযেদ ছিলেন (অর্থাৎ প্রয়োজনীয় সময়ে হাতকড়া দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যক্তি ছিলেন) ওই আবদুর রহমান নিজ পিতা কাব ইবনে মালেক সম্পর্কে বর্ণনা করেন, যখনই হযরত কাব জুমার আজান শুনতেন তখন তিনি আসাদ ইবনে জারারাহ-এর জন্য দোয়া করতেন। হযরত আবদুর রহমান (রা.) বলেন, একদিন আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, আপনি যখন আজান শোনেন, তখন কেন আসাদ ইবনে জারারাহ-এর জন্য দোয়া করেন? তিনি আমাকে উত্তর দিলেনÑ হযরত আসাদ ইবনে জারারাহই সর্বপ্রথম হাজামুন নাবীত-এর মধ্যে জুমার নামাজ পড়েছিলেন। হাজামুন নাবীত হলো মদিনার একটি এলাকার (মহল্লার) নাম।
জবাব (১) প্রথমত “হাজামুন নাবীত” কোনো স্বতন্ত্র বস্তি বা এলাকার নাম নয়, এটি মদিনার সংলগ্ন একটি মহল্লা। এর থেকে উদ্দেশ্য হলো হাজামুন নাবীত মদিনার পার্শ্ববর্তী সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় তথায় জুমার নামাজ পড়া জায়েজ হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন