ইনকিলাব ডেস্ক : আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাটে এবারও আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে শতভাগ আলু তোলা শেষ হয়েছে ফলে বাজারে আমদানীও বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, গত বছর মৌসুমের শুরুতে দাম না পেলেও পরবর্তীতে আলুর ভাল দাম পাওয়ায় আশান্বিত হয় ওঠেন আলু উৎপাদনে বৃহত্তম জয়পুরহাট জেলার কৃষকরা। ফলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে অধিক লাভের আশায় এবার অধিকহারে আলু চাষে ঝাঁপিয়ে পড়েন জেলার আলু চাষিরা। জেলায় এবার আলুর চাষ হয়েছে ৪০ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদরে ৭২০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭৩০০ হেক্টর, আক্কেলপুরে ৫২০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯০১০ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় ১২০০০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে আগাম জাতের আলু ছিল ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। জেলায় এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন। আলু লাগানোর পর মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল থাকায় আলু উৎপাদন হয়েছে ৯ লাখ মেট্রিক টন। হেক্টর প্রতি ২২ মে: টন আলুর উৎপাদন হয়েছে। এবার বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মণ ফলন পেয়েছেন বলে জানান, কালাই উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের আলু চাষি আজাদ হোসেন। তিনি এবার ১ একর ১৬ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছেন বলে জানান তিনি। বর্তমানে প্রকার ভেদে আলু প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। বাজারে বর্তমানে আলুতে ভরে গেছে। আমন ধানে লোকসান হলেও আলুর দাম ভাল পেয়ে কৃষকরা খুশি। পাইকারী ক্রেতা হানিফ জানান, প্রতি হাটে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক আলু কেনা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য।
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় উৎপাদিত ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, গ্যানোলা ও এস্টোরিক জাতের আলু দেশের সীমানা পেরি০েয় বর্তমানে ৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে- নেপাল, শ্রীলংকা, অস্ট্রেলিয়া, সিংগাপুর ও মালয়েশিয়া। বিগত তিন বছর ধরে আলু রপ্তানি হচ্ছে বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, জেলার পাঁচ উপজেলাতে ১৪ টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এর ধারন ক্ষমতা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯শ’ মেট্রিক টন। কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা বেশী লাভের আশায় স্টোরেজগুলোতে আলু রাখতে শুরু করেছেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এ জেড এম সাব্বির ইবনে জাহান বাসসকে জানান, ৪০ হাজার ৭শ’ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এবার জয়পুরহাটে ৪০ হাজার ৭শ’ ১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যা অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বিএডিসি উন্নতজাতের বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ করেছে কৃষকের মধ্যে এবং কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেছেন বলেও জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন