ইনকিলাব ডেস্ক : সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার ১২০টি হাওরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার একশ’ ২০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। সুনামগঞ্জ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৫ হাজার ৯শ’ ১৭ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষ হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার ৮শ’ ৫ হেক্টর বোরো জমি। মাঘ মাসের শেষে ও ফাল্গুনের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা উল্লসিত হয়েছেন। তবে প্রকৃতি বিরূপ না হলে এবার বোরো ফসলের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল। তবে এ জেলায় বছরে চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার ৯শ’ ২৬ মেট্রিক টন চাল। উদ্বৃত্ত থাকবে ৯৯ হাজার ১শ’ ১১ মেট্রিক টন চাল।
সুনামগঞ্জ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ফিরোজ খান জানান, এবার মাঘ মাসের শেষে ও ফাল্গুনের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভাল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি জানান, এখন বোরো কৃষকরা জমিতে নিড়ানি, আগাছা বাছাই, সার সেচ দিচ্ছেন।
ফাল্গুনের শুরুতে বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের কৃষকরা উল্লসিত হয়েছেন। সুনামগঞ্জে হাল্কা বৃষ্টিপাতকে বোরো চাষাবাদে কৃষকদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে বলে তারা আনন্দে উল্লসিত হচ্ছেন।
দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের কলিয়ার কাপন গ্রামের কৃষক গোলাম কিবিয়া চৌধুরী জানান, তিনি গ্রামের পার্শ্ববর্তী চাপতির হওরে প্রায় এক একর বোরো জমি রোপণ করছেন। ফাল্গুনের শুরুতে হাল্কা বৃষ্টি হওয়ায় রোবো ফসল ফলনে অত্যন্ত সহায়ক হবে। একই বক্তব্য একই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের খাগাউড়া গ্রামের কৃষক নিলিখ তালুকদার জানান, এ বছর তিনি ২ একর জমি চাষাবাদ করেছেন। বৃষ্টি হওয়ায় বোরো ফসলে ভাল ফলন হবে এমন আশায় তারা উল্লসিত। জামালগঞ্জ উপজেলার শাহপুর গ্রামের কৃষক রশিদ মিয়া জানান, তিনি ৩ একর বোরো জমি চাষা করেছেন। বৃষ্টি হওয়ায় ভাল ফসল হবে এমন আশায় স্বপ্ন বুনছেন। একই বক্তব্য উপজেলা তেলিয়া গ্রামের বর্গাচাষি নূরুল ইসলামের।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচার হওর পারের পলাশ ইউনিয়নের পদ্মনগর গ্রামের কৃষক বদরুজ্জামান জানান, এবার ৭ একর বোরো জমি চাষাবাদ করেছেন। বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে না। এতে শুধু ডিজেল খরচই কমবে না ভাল ফসলও হবে। একই বক্তব্য ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের সোনামড়ল হাওর পারের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেকের।
কৃষকরা আরো জানান, প্রকৃতি বিরূপ না হলে এবার বোরো বাম্পার ফলন হবে। সুনামগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তর আরো জানায়, এবার জেলায় বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন চাল। তবে এ জেলায় বছরে চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ১০ হাজার ৯শ’ ২৬ মেট্রিক টন চাল । উদ্বৃত্ত থাকবে ৯৯ হাজার ১শ’ ১১ মেট্রিক টন চাল।
জেলার সুনামগঞ্জে সদর উপজেলায় ১৫ হাজার ৩শ’ ৭ হেক্টর বোরো জমি চাষাবাদ করা হয়েছে, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজলায় ২২ হাজার ২শ’ ১৩ হেক্টর, দোয়ারা বাজার উপজেলায় ১২ হাজার ৮শ’ ২৫ হেক্টর, বিশ্বম্ভরপুরে ১০ হাজার ৯শ’ ৮০ হেক্টর, জগন্নাথপুর উপজেলায় ১৯ হাজার ৮শ’ ২০ হেক্টর, জামালগঞ্জ উপজেলায় ২৪ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর, তাহিরপুর উপজেলায় ১৮ হাজার ৯৫ হেক্টর, ধর্মপাশায় ৩০ হাজার ৬শ’ ২৫ হেক্টর, দিরাই উপজেলায় ২৭ হাজার ২শ’ ৫৭ হেক্টর এবং শাল্লা উপজেলায় ২২ হাজার ২শ’ ৪২ হেক্টর, ছাতক উপজেলায় ১২ হজার ১শ’ ৩০ বোরো জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন