শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ধর্মশালায় চাটগাঁর ছেলে

প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী, ধর্মশালা (ভারত) থেকে : ধর্মশালায় টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে হোটেল কুনাল খÐকালীন মিডিয়া সেন্টারে পরিণত হয়েছিল। সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড, ম্যাচ টিকিটÑসব এখান থেকেই করা হয়েছে বিতরণ। বাংলাদেশ থেকে টি-২০ বিশ্বকাপ কভার করতে আসা সাংবাদিকদের অধিকাংশই উঠেছিল এখানে। এখান থেকেই ট্যাক্সিতে হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যাওয়া-আসা, বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পটের গন্তব্যেও এখান থেকেই। হোটেল কুনালের সকল স্টাফ এ ক’দিন ছিলেন অতি আপনজন। হোটেলের রেস্টুরেন্টও দারুণ, শুধু সমস্যাÑএখানে নেই কোন ইন্টারনেট সুবিধা। ওয়াইফাই কিংবা ব্রডব্যান্ডÑকোনটাই নেই। বাধ্য হয়ে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে চলা সড়ক পথ ধরে ইন্টারনেট ক্যাফের সন্ধানে বেরুতে হলো। এখানেই মিলল এক বাংলাদেশির সন্ধান। বিনোদ দাস, চাঁটগার ছেলে। চৌদ্দ পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে বাবার সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে এখানে এসেছেন সেই ভারত বিভক্তির পর পর। ধর্মশালার আদালতের কাছাকাছি একটি মুদির দোকানই তার আয়ের উৎস। চাঁটগার ছেলে, ধর্মশালায় বসে দেখেছেন চাঁটগার কৃতি সন্তান তামীমের সেঞ্চুরি। তামীমের ওই সেঞ্চুরিতে বুকটা ভরে গেছেন বিনোদের। আদালতে আসা উকিলরা তাকে ভালই চেনেন, জানেন তারা বিনোদ বাংলাদেশি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল মাতিয়েছে ধর্মশালা, তাতে বিনোদকে ঘিরেই তাদের আনন্দ। যখনই একদল স্থানীয় আইনজীবী শুনলেন তামীমের জন্মস্থানেই বিনোদের জন্মÑ তখন বিনোদও কিছুক্ষণের জন্য হয়ে গেল হিরো!
বিনোদকে নিয়ে বিনোদন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যের কারণেই। এই ক’দিন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ধর্মশালা জয় করায় বাংলাদেশি মিডিয়াম্যান হিসেবে কদরও পেয়েছি যথেষ্ট। ট্যুরিস্ট স্পট ডাল লেক এ এসে নিজের উপর একটু রাগই হয়েছিল। এ কি! ট্যাক্সি ভাড়া করে পাহাড়ের উপরে এমন লেক তো দেখতে চাইনি। লেক বললে ভুল হবে, এটাকে বরং পুকুর বলাই ভাল। তবে এই বিরক্তি কেটে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে ক’কিশোরের আগ্রহ দেখে। তামীম, মাশরাফি, সাকিব, সাব্বিরÑ সবাইকে জানেন তারা। প্রিয় ক্রিকেটারও তারাই। টোটা রানি গ্রামের কিশোর-কিশোরীদের কাছে বাংলাদেশের নামটা পরিচিত ক্রিকেটের কারণেই। কারও প্রিয় ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা, কারও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, কারো আবার হালের মুস্তাফিজুর রহমান ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। স্থানীয় বিভিন্ন স্কুলে পড়াশুনা করে এরা সবাই। টোটা রানি সরকারি বয়েজ স্কুল, হিমাচল সরকারি স্কুলের ছাত্রই বেশি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলটা তাদের সবার পছন্দ। টি-২০ বিশ্বকাপে টাইগারদের খেলার খবর সবই তাদের জানা। এই দলে কিশোরীর নাম অনন্যা। ছেলে বন্ধুদের সঙ্গেই বীরদর্পে ক্রিকেট খেলছে। ফিল্ডিং, বোলিং, ব্যাটিং করছে সমানতালে। অনন্যার প্রিয় ক্রিকেটার মাশরাফি। খুব পছন্দ মাশরাফিকে। জীবনের কোনো একসময় সাক্ষাতের সুযোগ পেলে, অনন্যার প্রথম চাওয়া মাশরাফির অটোগ্রাফ। অংশু নামক কিশোরের প্রিয় ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশি এ ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং খুব ভালো লাগে অংশুর। মাহমুদউল্লাহর অটোগ্রাফ তার চাই চাই। বাংলাদেশ সুপার টেন পর্বেও খুব ভালো করবে, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। সমস্বরে ‘বাংলাদেশ’ বলে শ্লোগান দিয়ে গ্রæপ ছবিতে অংশ নিয়েছে ক্ষুদে ক্রিকেটারদের এ দলটা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন