বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ স্থল নিম্নচাপে পরিনত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়া স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে প্রবল বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলভাগের জনজীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে গতকাল দুপুরের আগে থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবনতা হৃাস পাবার পাশাপাশি বিকেল থেকে রোদের ঝলকানিতে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবনে অনেকটা স্বস্তি ফিরে আসে। এর আগে রোববার উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা উপক‚লভাগ হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ধেয়ে এসে প্রর্বন বৃষ্টি ঝড়ায়। বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরকে ২নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে অনধীক ৬৫ফুট দৈর্গের সব যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। বরিশালের পায়রাসহ সবগুলো সমুদ্র বন্দরে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক-সংকেত বহাল রয়েছে।
শরতের শেষ সময়ের এ প্রবল বর্ষণ দক্ষিণাঞ্চলের সুস্থ জনজীবনে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি করলেও এ অঞ্চলের প্রধান খাদ্য ফসল আমনের তেমন কোন ক্ষতি করেনি। তবে আগাম শীতকালীন শাক-সবজির বীজতলাসহ উঠতি ফসলের কিছুটা ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। গতকাল ৩টার পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় বরিশাল মহানগরীতে বৃষ্টি হয়েছে ৯০মিলিমিটার। গতকাল সকাল ৯টার পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কুয়াকাটা সংলগ্ন পটুয়াখালীর খেপুপাড়াতে ৮৩মিলিমিটার। এসময়ে পটুয়াখালীতে ৬৭মিলিমিটার এবং ভোলাতে ৪৩মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রোববার রাতের প্রবল বর্ষণে বরিশাল মহানগরীর বেশীরভাগ রাস্তাই প্লাবিত হয়। রাতভর এ বর্ষণে নগরীর অনেক এলাকার বিদ্যুৎ সরবারহও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, মওশুমী বায়ুর অক্ষ বিহার, উরিশ্যা, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল অতিক্রম করে উত্তর-পশ্চিমে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। বৃষ্টি মাথায় করে মওশুমী বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ওপর সক্রিয়, উত্তরাঞ্চলে মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে ।
লঘুচাপের প্রভাবে শরতের বিদায়কালে আশ্বিনের পূর্ণিমা ও অমাবশ্যার মাঝামাঝি সময়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম মওমুমী বায়ু আকষ্মিকভাবেই প্রবল আকার ধারন করায় এ বর্ষণ ছিল এসময়ের জন্য যথেষ্ঠ দূর্যোগপূর্ণ। তবে আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজকের পরে বৃষ্টিপাত প্রবনতা হৃাস পাবার কথা জানালেও গতকাল দুপুরের পর থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের আকাশ আবার শরতের আসল রূপ ধারন করে। নীল আকাশে সাদা মেঘেরে ভেলার সাথে মাঝে মধ্যেই সূর্যের হাসি সবার মন জুড়িয়েছে।
গতমাসে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৯.৫% বেশী বৃষ্টি হলেও বরিশাল অঞ্চলে ছিল তার বিপরিত চিত্র। এসময়ে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮.৪%বৃষ্টি কম হয়েছে বলে আবহায়া বিভাগ জানিয়েছে। অপরদিকে চলতি মাসে আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল অঞ্চলে ১৫৮-১৯৪মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও বরিশাল মহানগরীতে গত ৯দিনে বৃষ্টি হয়েছে ১৮৫.৬ মিলিমিটার। এমনকি চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-২নিম্নচাপ সৃষ্টির কথা জানিয়ে আবহাওয়া বিভাগ থেকে অন্তত একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলেও জানান হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন