মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচালিত নিষ্ঠুরতার নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, এ জন্য যারা দায়ী, সম্ভবত সে দেশের সামরিক বাহিনীকে এর জবাবদিহি করতে হবে।
টিলারসন বলেন, রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিবরণ হৃদয় ভেঙ্গে দেয়। যদি এ সব খবর সত্য হয় তাহলে এর জন্য কেউ না কেউ দায়ী হবে।
আগামী সপ্তাহে টিলারসনের দক্ষিণ এশিয়া সফর করার কথা। তিনি পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন স্টেটের জনগণের কাছে মানবিক সাহায্য পৌছানোর জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানান।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রোহিঙ্গাদের দেশ থেকে বিতাড়নের জন্য ধারাবাহিক অভিযানে শত শত পুরুষ ,নারী ও শিশুকে হত্যার জন্য মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে। জানা যায়, গত আগস্ট থেকে ৫ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি উদ্বাস্তু বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
টিলারসন ১৮ অক্টোবর ওয়াাশিংটনের থিংকট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজে এক বক্তৃতায় বলেন, যা ঘটছে তার জন্য আমরা আসলে সামরিক নেতৃত্বকে দায়ী করতে পারি। আমাদের কাছে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তাহল আমরা এ অঞ্চলে সংঘটিত নিষ্ঠুরতার ক্ষেত্রে চুপ করে থেকে তা দেখতে পারি মানবাধিকার লঘঘনের জন্য না।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে সখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচারের ক্রমবর্ধমান ঘটনা মিয়ানমারের প্রতি কয়েক দশক পর যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গীর উপর ছায়া ফেলেছে।
টিলারসন বলেন, এটা হচ্ছে মিয়ানমারের বেসামরিক নেতা অং সান সু কি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির সরকারের একটি পরীক্ষা। তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দমনের ব্যাপারে সংযম অবলম্বনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আহবান জানিয়েছে। মিয়ানমার সরকার ও সামরিক বাহিনী দমন ও জাতিগত নির্মূলের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাখাইনে কি ঘটেছে তার পূর্ণ বিবরণ পাওয়ার জন্য হিংস্রতা কবলিত এলাকায় প্রবেশাধিকার দেয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, দু’জন মার্কিন কূটনীতিক সেখানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সাহায্য সংস্থা, রেডক্রস, রেডক্রিসেন্ট, জাতিসংঘ সংস্থাসমূহকে রাখাইনে প্রবেশাধিকার দিতে উৎসাহিত করছি যাতে আমরা ন্যূনতমভাবে অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা দিতে পারি। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা যে সেখানে কি ঘটছে সে ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ ধারণা প্রয়োজন।
অপরাধকারীদের কিভাবে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে সে বিষয়ে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক কিছু বলেননি। তবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সাথে কাজ করবে। কিছু মার্কিন আইন প্রণেতা রাখাইনে মানবাধিকার লংঘনের জন্য মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের উপর নিজে থেকে মার্কিন লক্ষবস্তু ভিত্তিক আর্থিক অবরোধ আরোপের আহবান জানান।
অ্যামনেস্টি বলেছে, পলায়মান রোহিঙ্গারা তাদের উপর হামলাকারীদের মিানমারের সামরিক বাহিনীর পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের ৩৩ তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের ইউনিফরম পরিহিত সদস্য্র এবং সীমান্ত পুলিশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। মানবাধিকার গ্রুপটি দেশটির উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং অপরাধীদের ফৌজদারি বিচারের জন্য আহবান জানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন