আশিক বন্ধু : ভিন্ন ধারার গল্প চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করেন এ সময়ের ব্যস্ততম অভিনেতা শহিদ আলমগীর। সম্প্রতি বিটিভিতে প্রচারিত ধারাবাহিক রাইফেল মফিজ-এ অনবদ্য অভিনয় করে দর্শক মন জয় করেছেন। প্রথাগত চরিত্রের বাইরে মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন চরিত্রে অভিনয় করে ইতোমধ্যে নাট্যাঙ্গণে বেশ আলোচিতও হচ্ছেন। গুণী এই অভিনেতার সঙ্গে কথা হয়।
-বেশিরভাগ নাটকে আপনাকে জীবনঘনিষ্ট চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। এর বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?
আমি অভিনেতা। সব ধরনের চরিত্রেই আমাকে অভিনয় করতে হয়। আমিও তাই চাই। তবে এর মধ্যে জীবনঘনিষ্ট চরিত্রের প্রতি দুর্বলতা একটু বেশি কাজ করে। ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছি। ছাত্রাবাসে বড় হয়েছি। একধরনের কষ্ট মনের ভেতর সবসময়ই কাজ করে। এজন্য জীবনঘনিষ্ট চরিত্রের প্রতি বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে। যাতে মানুষের দুঃখ-কষ্টের বিষয়গুলো আমার যতটুকু সক্ষমতা রয়েছে, ততটুকু দিয়ে তুলে ধরতে পারি। তবে অভিনেতা বলে আমাকে সব ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করতে হয়।
-সংস্কৃতির এতো মাধ্যম থাকতে নাটকে জড়ালেন কেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন পদাতিক থিয়েটারের সাথে জড়িয়ে পড়ি। অভিনয়ের প্রতি দুর্বলতা তখন থেকে শুরু। থিয়েটার ও নাটক করতে করতে একসময় টিভি নাটকে জড়িয়ে গেলাম। এখানেই নিজের জীবনের সুখ দুঃখ খুঁজে পেলাম। এটা অনেকটা হয়ে যাওয়ার মতো।
অভিনয় নিয়ে আপনি কতটুকু সন্তুষ্ট?
আমি মনে করি, শিল্পের ক্ষুধা কখনো মেটে না। একজন শিল্পী প্রতিনিয়ত এই ক্ষুধার পেছনেই ছুটে। ছুটতে ছুটতেই তার কিছু দাগ রেখে যায়। এগুলো কখনো কখনো সন্তুষ্টির কারণ হয়। তবে পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জন হয় না। তাকে আমৃত্যুই এই সন্তুষ্টি অর্জনের পেছনে ছুটতে হয়। তবে কোথাও গেলে দর্শক যখন আমাকে চেনে, তখন কিছুটা তৃপ্তি পাওয়া যায়। যেমন বিটিভিতে প্রচারিত রাইফেল মফিজ নাটকের নাম ভুমিকায় আমি অভিনয় করার পর দর্শকের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। অনেকে দেখলে রাইফেল মফিজ নামে ডাক দেয়। তখন শুনতে ভালো লাগে। দর্শকের মনে এইজায়গা করে নেয়াটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। চরিত্রের সাথে মিশে যেতে পেরেছি বলেই, দর্শক আমাকে এ নামে ডাকে।
-আপনার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো কি?
নজরুল কোরাইশীর পরিচালনায় সঙ্গী, নীল ঘুড়ি, শুভ রাত্রি, সাজ্জাদ হোসেন দোদুলের লাল ঘুড়ি, মোহন খানের নীড় খোঁজে গাংচিল, ইমদাদুল হক মিলনের যুবরাজসহ অনেকগুলো জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করেছি। যা এখনো আমাকে ভালো কাজের অনুপ্রেরণা জোগায়।
-এখন কি কাজ নিয়ে ব্যস্ত?
এম সাখাওয়াত হোসেনের পরিচালনায় চন্দ্র নদীর বাঁকে ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। এ কাজটি আমার জীবনের অন্যতম সেরা কাজ হয়ে থাকবে। জীবনঘনিষ্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এছাড়া শেষ করেছি মাসুম আজিজের পরিচালনায় ঘাটের মাঝি ধারাবাহিকের। এটি আাগামী মাসে বিটিভিতে প্রচার হবে। নজরুল কোরাইশীর গোলমাল, জোসনা করেছি আঁড়ি ধারাবহিকের শুটিং শেষ করেছি।
-আপনার স্বপ্নের চরিত্র কি?
বিপ্লবী মানুষ, খেটে খাওয়া দুঃখী মানুষ, আদর্শবান মানুষ, এই ধরনের চরিত্র সবসময় আমাকে স্পর্শ করে। আমি জীবনমুখী চরিত্র খুঁজে বেড়াই। যেখানে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন ও আশারবাণী আছে। এটি অভিনেতা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকে প্রত্যাশা করি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন