শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

৭ মার্চের ভাষণের ইউনেস্কো স্বীকৃতিতে সরকারীভাবে দেশব্যাপী আনন্দ র‌্যালী আগামীকাল

সোহরাওয়ার্দীতে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ৭:০৬ পিএম

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া উপলক্ষে সরকারীভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনন্দ র‌্যালী করা হবে আগামীকাল শনিবার। এই শোভাযাত্রায় সবাইকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, ধানমন্ডি ৩২ এর বঙ্গবন্ধু ভবন থেকে আনন্দ র‌্যালী শুরু হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সভায় বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের নির্দেশে এ আনন্দ র‌্যালী সফল করতে ইতোমধ্যেই সরকারি-বেসরকারিভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীসহ সর্বস্তরের জনতার মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। দলীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকলেও ঘরে বসে নেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে, শুক্রবার সচিবালয়ে আনন্দ র‌্যালীর সার্বিক দিক তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীপরিষদ সচিব এই আহ্বান জানান।
সচিব জানান, কেন্দ্রীয়ভাবে আগামীকাল দুপুর ১২টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর র‌্যালী শুরু হবে। এটি কলাবাগান-সায়েন্সল্যাব হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে শেষ হওয়ার পর সভা হবে। ঢাকার বাইরে সব জেলা ও উপজেলায়ও আনন্দ র‌্যালী ও সভা হবে বলেও জানান শফিউল আলম।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, শোভাযাত্রায় মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিশু-কিশোর, ক্রীড়া সংগঠক ও খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ, সাংস্কৃতিককর্মী ও সংগঠক, শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, এনজিও, স্কাউটস ও রোভার সদস্যরা অংশ নেবেন। এছাড়া পুলিশের সুসজ্জিত ঘোড়া, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুসজ্জিত বাদকদল, সুসজ্জিত ঘোড়ার গাড়ি এবং সর্বস্তরের জনগণও আনন্দ র‌্যালীতে থাকবেন।
ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্তের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, সংগঠন নিজ নিজ উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দীতে মিলিত হবেন জানিয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, আনন্দ র‌্যালীর মাধ্যমে ঢাকা শহরকে প্রাণচাঞ্চল্যমুখর করা হবে। সবাই প্রায় একই সময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে রওনা হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসবেন। সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দেশের সব জেলা-উপজেলায় এই কর্মসূচি শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সভায় বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। স্বাগত বক্তব্যের পর ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে ভাষণটি বাজানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। লেজার শো’র মাধ্যমে শেষ হবে আনন্দ র‌্যালী পরবর্তী সভা।
ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শোভাযাত্রা সহকারে উপজেলা পর্যায়ে সবাই মিলিত হবেন। জেলা শহরে বিভিন্ন স্থান থেকে র‌্যালী নিয়ে এক জায়গায় মিলিত হয়ে অনুষ্ঠান হবে বলেও জানান শফিউল আলম।
আনন্দ শোভাযাত্রা ও সভা আয়োজন নিয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, জেলা ও উপজেলাসহ ঢাকা মহানগরে কেন্দ্রীয়ভাবে যে প্রোগ্রাম হচ্ছে তাতে সবাইকে অংশগ্রহণ করার জন্য আমরা দাওয়াত দিচ্ছি, সবাই আসতে পারেন এখানে। অংশগ্রহণ করার জন্য সবাইকে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সরকারিভাবে আয়োজন করা এই আনন্দ র‌্যালীর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক বিষয় জড়িত কি না- জানতে চাইলে শফিউল বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যখন ঘোষণা করা হয়েছিল তখনও রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুষ্ঠান করেছি, একইভাবে এটা করা হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল বড় অর্জন, জাতির জন্য। দলমত নির্বিশেষে সবার জন্যই অর্জন। এখানে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই, এটা বাংলাদেশের অর্জন।
র‌্যালীর সময় রাজধানীতে কোনো রাস্তা বন্ধ থাকবে কি না ঢাকা মহানগর পুলিশ তা জানিয়ে দেবে বলেও জানান মন্ত্রীপরিষদ সচিব।
এ সময় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এনএম জিয়াউল আলম ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, দলীয় কর্মসূচি না হলেও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদযাপনে পিছিয়ে থাকবে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সরকারী এ আনন্দ র‌্যালী সফল করার লক্ষে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারা।
দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ বলেন, আনন্দ র‌্যালীর কর্মসূচিটি সরকারী, আমাদের দলীয় নয়। তারপরও এ কর্মসূচি সফল করতে আমরা বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে সোহরাওয়ার্দীর সভায় যোগ দেব।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সাদেক খান বলেন, সমাবেশটি সরকারীভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তাই দল থেকে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে সমাবেশে ষড়যন্ত্রকারীরা যাতে কোনো নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে আমাদের নজর রাখবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, দলীয়ভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে যোগদান বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। কারণ অনুষ্ঠানটির আওয়ামী লীগের নয়। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল মানুষ এই সমাবেশে উপস্থিত হবে। দলের নেতাকর্মীরাও নিজ নিজ অবস্থান থেকে যোগ দিতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন