শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আগামীকালও নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত বিএনপি -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন না হলে শুধু আগাম নয় বিএনপি আগামীকালও নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আগাম নির্বাচনের জন্য বিএনপি প্রস্তুত আছে। তবে, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে তার পদ ছাড়তে হবে। গতকাল (বুধবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সিইসির দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
৯০’ গণঅভ্যুত্থান দিবসে বিএনপির কোনো কর্মসূচি নেই কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, নাকি নতুন করে জেগে উঠেছে? হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ করার কথা শোনা গেছে; এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি অতীতে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আন্দোলন করতে পারে, আসন বণ্টন করতে পারে, তাহলে নাথিং ইজ ইমপসিবল ইন পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, মেয়র আনিসুল হকের সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। তিনি নিঃসন্দেহে উন্নয়নের প্রভাব দেখিয়েছেন। তবে তাঁর মৃত্যুর পর এখনো পর্যন্ত আমাদের কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেব কি না। তবে আমরা এটি প্রমাণ করতে সফল হয়েছি এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম, স্বাধীনতার এত বছর পরেও সেই স্বপ্ন সেই লক্ষ্যের প্রতিফলন হচ্ছে না। ক্ষমতাসীন দল সংবিধানে দলীয় অনুচ্ছেদ বসিয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, জোট তৈরি করা হচ্ছে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এ রকম ব্যক্তি-সংগঠনকেও এই জোটে আহŸান জানাই এবং স্বাগত জানাচ্ছি। জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই জোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সকালে যৌথ সভা চলাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ছয় নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান ফখরুল।
এদিকে বিকেলে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ‘সাগর-রুনি’ মিলনায়তনে ‘৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এইচএম এরশাদের পতন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না। সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এতো ভয় পান কেনো? কারণ আপনারা জেনে গেছেন যে, আপনাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, জনগণের সমর্থন নেই। ভোট যদি নিরপেক্ষ হয় তাহলে আপনাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। যতই অত্যাচার করবেন, যতই নির্যাতন করবেন, ততই স্বাধীনতাকামী মানুষ আরো শক্তিশালী হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, কিন্তু সেই নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ ইসির মাধ্যমে। এখানে অন্য কোনো হাঙ্কি-পাঙ্কি করে লাভ হবে না। এই দেশের মানুষ সেটাকে মেনে নেবে না, গ্রহণও করবে না। দেশে এবং দেশের বাইরে কোথায়ও তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। তাই এখনো সময় আছে কথা বলুন, আলোচনা করুন। আলোচনা ছাড়া, কথা বলা ছাড়া গণতন্ত্রকে কখনো সফল করা যায় না। আলোচনার মাধ্যমে আমরা নিশ্চয় একটা পথ বের করতে পারবো, যা জনগণের আকাক্সক্ষাকে পূরণ করবে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আপনারা যখন ‘৯৬-তে তত্ত¡াবধায়ক সরকার চেয়েছেন তখন কি তা সংবিধানে ছিলো? কিন্তু আমরা মেনে নিয়েছিলাম। এই সরকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচনে আমরা দুইবার, আপনারা একবার সরকার গঠন করেছিলেন। তাহলে সমস্যাটা কোথায় ছিলো? আপনারা জেনে গেছেন যে, পায়ের নিচে মাটি নাই, জনসমর্থন নাই। যদি নিরেপক্ষ ভোট হয় তাহলে আপনাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। সেজন্যই নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে এতো ভয়। কিন্তু আমরা সংঘর্ষ সংঘাত চাই না। আমরা জনগণের মতামত প্রকাশের অধিকার চাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের সামনে বিরাট সঙ্কট। এতো বড় সঙ্কট আর আসেনি। আমাদের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব বিপন্ন, গণতন্ত্র বিপন্ন। মানুষের নিরাপত্তা নাই। আজকে যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ না হই, একজোট হয়ে অপশাসন-দু:শাসনকে পরাজিত করতে না পারি, আমাদের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। তাই অুনরোধ জানাতে চাই- আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে, জনগণের দিকে তাকিয়ে সমস্ত দ্বিধা ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করা এবং সরকারকে বাধ্য করা নির্বাচন দিতে। সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কোর্টে নিয়ে হেনস্তা করছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, কাকে ভয় দেখাচ্ছেন? খালেদা জিয়াকে? যিনি ৯ বছর স্বৈরাচারের সাথে কোনো আপোস করেননি। ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের সঙ্গে কোনো আপোস করেন নি। আপোস করলে এতোদিন প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। যতই অত্যাচার নির্যাতন করবেন ততই জনগণের প্রতিরোধ আরো শক্তিশালী হবে। ডাকসুর সাবেক ভিপি বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন সাবেক ছাত্র নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, রফিক সিকদার, খোন্দকার লুৎফর রহমার, আসাদুর রহমান আসাদ, সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন আলম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
নাসির ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:২৫ এএম says : 0
মুখে মুখে না বাস্তবেও ?
Total Reply(0)
মোঃ সালা উদ্দিন ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:১৪ এএম says : 0
সাব্বাস
Total Reply(0)
Mamun Hassan ৭ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:১৫ এএম says : 0
ইয়েস আমরাও প্রস্তুত লিডার।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন