নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় গত রোববার রাতে বিশালকায় মঞ্চ সাজিয়ে রসিক নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী সরফুদ্দীন আহম্মেদ ঝন্টুকে সমর্থন জানিয়ে তারা আওয়ামীলীগে যোগদান করেন এবং তার পক্ষে প্রচারণা চালানোর ঘোষণা দেন। আর এঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেচেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোস্তফার লাঙ্গল প্রতিকের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী বলেছেন, আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিশাল বিশাল মঞ্চ করে প্রকাশ্যে জনসভা করলেও অদৃশ্য শক্তির কারনে প্রশাসন তা দেখতে পাচ্ছে না।
অন্যদিকে, রংপুর মহা নগরীর সকল সমস্যার সমাধানসহ নিজেরা এবং অন্যকে দুর্নীতি করতে না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন মেয়র প্রার্থীরা। গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর উদ্যোগে সিটি নির্বাচন ‘জনগণের মুখোমুখি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারা এ অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, বিএনপির কাওছার জামান বাবলা, সিপিবি ও বাসদের আব্দুল কুদ্দুস, ইসলামী আন্দোলনের এবিএম গোলাম মোস্তফা এবং এনপিপির মেয়র প্রার্থী সেলিম আখতার উপস্থিত ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহামেদ ঝন্টু ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ অংশ নেননি।
এদিকে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে দুই মেয়র প্রার্থীর না আসাকে দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য করে সুজনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অনুষ্ঠানে আসার জন্য তারা লিখিত অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করেছিলেন। কেন আসলেন না তার কোনও ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়নি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বেশ কয়েকবার ফোনও করা হয়েছে। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।
এক মঞ্চে হাত উঁচিয়ে জনগণের সেবার জন্য নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরে সম-উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি দিয়ে মেয়র প্রার্থীবিএনপির কাওছার জামান বাবলা বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার ব্যাপারে আমরা শঙ্কিত। তবে নির্বাচনে জয়ী হলে দুর্নীতি করবো না এবং কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না।
নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে শঙ্কা রয়েছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়ে এখনও জনগণ আতঙ্কে রয়েছে। তারপরেও নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হলে মহানগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করবো। ঐতিহ্যবাহী শ্যামা সুন্দরী খাল পুনঃ খনন করবেন। সেই সঙ্গে নগরীকে যানজট মুক্ত করবেন এবং দুর্নীতি মুক্ত করবেন।
বাসদের আবদুল কুদ্দুস নির্বাচনে কালো টাকা ও প্রভাবমুক্ত করার আহŸান জানিয়ে বলেন, ‘যানজট নিয়ন্ত্রণে অটোরিকশা চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। দলীয় ও সন্ত্রাসমুক্ত সিটি করপোরেশন গড়ে তুলব। মেয়েদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব।’
ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে টাকা দিয়ে যাতে ভোট কিনতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের নজরদারি থাকতে হবে। যানজট নিরসন ও বেকার সমস্যা সমাধানে আমার ব্যাপক কর্মসূচি থাকবে।’
এনপিপির সেলিম আক্তার বলেন, ‘নির্বাচিত হলে শিক্ষা ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা করব সিটিবাসির জন্য। রাস্তা ঘাট সংস্কার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করব।’
এরআগে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে রংপুর মহানগর সুজন এর সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনম বেঞ্জর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা সভাপতি আকবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফতাব হোসেন প্রমুখ। সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় তিন ঘণ্টাব্যাপি জনগণের মুখোমুখি এই অনুষ্ঠানে মেয়র প্রার্থীরা জনগণের বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন। পরে সব প্রার্থী হাতে হাত রেখে নির্বাচনের পরেও রংপুর নগরীর উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গিকার করেন। শেষে উপস্থিত নগরবাসীও সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য হাত তুলে শপথ নেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন