সাগর-পাহাড় ঘেরা বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন ২০১৭ সাল ছিল উচ্ছ¡াসে ভরা। গ্যালারি ভরা দর্শক ছিল জহুর আহমদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে। এ বছর টেস্ট প্লেয়িং দেশ অস্ট্রেলিয়া চট্টগ্রামের মাটিতে স্বাগতিক বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলে গেছে। বিশ্ব ক্রিকেটের এই তারকা দলের সফরকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে জমজমাট ছিল ক্রিকেট উন্মাদনা। টিম অস্ট্রেলিয়া ১১ বছর পর চট্টগ্রামের মাটিতে খেলতে আসে। এত দিন তারা নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশ সফর করেননি। নিরাপত্তা নিয়ে করেছিল নানা টালবাহানা। কিন্তু চট্টগ্রামের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখে অভিভূত হয়েছে টিম অস্ট্রেলিয়া। নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে এবং ভেন্যু দেখে প্রশংসাও ঝরেছে তাদের কণ্ঠে। টিম অস্ট্রেলিয়ার এই সফরে চট্টগ্রাম ভেন্যু জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সে বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশি সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এই ভেন্যুতে ২০১১ সালে যখন আইসিসি বিশ্বকাপের দু’টি ম্যাচের আয়োজন করা হয়, সেই সময়ই কেবল এই বিশ্বকাপ ভেন্যুর প্রেসবক্সে একসঙ্গে এত দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
এরপর সর্বশেষ নভেম্বরে এই ভেন্যুতে আয়োজন করা হয় দেশের সবচাইতে বড় ক্রিকেট উৎসব টি-২০ বিপিএল চট্টগ্রাম পর্ব। সাতটি দলের হয়ে এখানে ক্রিস গেইল, বেন্ডন ম্যাককালাম, শহীদ আফ্রিদি, লুক রনকি, রবি বোপারা, এভিন লুইস, কায়রন পোলার্ডদের মতো ৮৮ জন বিদেশি তারকাদের সাথে দেশি তারকা সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিথুনসহ আরো অনেক ক্রিকেটার অংশ নেন। এ কারণে আন্তর্জাতিক ম্যাচের আমেজ ছিল এই বিপিএলেও। এ ভেন্যুতে ১০টি ম্যাচ দেখার জন্য প্রতিদিন গ্যালারি ঠাসা দর্শকদের গগনবিদারী চিৎকারে খেলা শুরুর আগ থেকেই মুখরিত ছিল জহুর আহমদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়াম চত্বর। বঙ্গোপসাগরের সন্নিকটে অবস্থিত এ ভেন্যুতে ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকদের গগনবিদারী চিৎকারে সাগরের ঢেউয়ের শব্দও ¤øান হয়ে গিয়েছিল। বিপিএলকে ঘিরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অফিসপাড়া, গ্রামে-গঞ্জে হয়েছিল নানা আলোচনা। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ির উন্মাদনায় যেমন ছিল মাঠ ঠিক তেমনি গ্যালারি ছাপিয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও চায়ের দোকানের টিভিতেও রসদ ছড়িয়েছে সমানভাবে। এছাড়া এই ভেন্যুতে বছরের শুরুর দিকে হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৯ ইমার্জিং ওয়ার্ল্ড কাপের আসর। জাতীয় ক্রিকেট লীগের খেলাও এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠেও ছিল সরব উপস্থিতি দর্শকের। চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে এলিট পেইন্ট সিরাজ মহানগরী কিশোর ফুটবল লীগ, ইস্পাহানী মহানগরী পাইওনিয়র ফুটবল লীগসহ বিভিন্ন ইভেন্টের খেলাসমূহ।
এ বছর ক্রিকেটের মতো ফুটবলেও সরব ছিল চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন। আরেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিনের আর্থিক সহায়তায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে দেশি-বিদেশি আটটি ক্লাব দল অংশ নেয়। দলগুলো হলো- স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড, ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, নেপালের মানাং মারসিয়াংদি ক্লাব, কিরগিজস্তানের এফসি আলগা ক্লাব, দক্ষিণ কোরিয়ার পচেয়ন সিটিজেন ফুটবল ক্লাব, আফগানিস্তানের শাহীন আসমায়ে এফসি ও মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাব। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দারুণ চমক সৃষ্টি করেছিল স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। দেশের ফুটবল ক্লাবের মধ্যে নতুন পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল তারা। কিন্তু এবার শিরোপা মুকুট ধরে রাখতে পারেনি এই দলটি। শিরোপা মুকুট চলে গেছে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাব দলের কাছে। এরপর প্রথমবারের মতো এই ভেন্যুতে আয়োজন করা হয় মেয়র কাপ আন্তঃওয়ার্ড ফুটবল টুর্নামেন্ট। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৮টি ওয়ার্ড থেকে ফুটবল দল এই মেয়র কাপে অংশ নেয়। বছরের শেষ দিকে এসে এখানে দ্বিতীয় বিভাগ, প্রথম বিভাগ ও প্রিমিয়ার বিভাগ ফুটবল ও ক্রিকেট লীগের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি এই ভেন্যুতে জাতীয় জুনিয়র-সাব জুনিয়র ব্যাডমিন্টন, জাতীয় যুব হ্যান্ডবল ও মাস্টার্স অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতাও হয়েছে। সেই সঙ্গে বøাইন্ড জাতীয় টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়েছে। আইজিপি কাপ জাতীয় যুব কাবাডি চট্টগ্রাম পর্ব, বিজয়মেলা থানা ফুটবল টুর্নামেন্ট, হকি, দাবা, ভলিবল, অ্যাথলেটিক্স, সাঁতার, টেবিল টেনিস নিয়ে একাধিক টুর্নামেন্ট ও লীগ অনুষ্ঠিত হয়েছে এবার। বিওএ এবং সিজেকেএসের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ যুব গেমস চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা হয়েছে এ ভেন্যুতে।
চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন এমন সরব থাকার পেছনে যার অবদান তিনি হলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি মেয়রের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সিজেকেএসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও নিজ দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করেছেন। এ কারণেই আন্তর্জাতিক ম্যাচসমূহের পাশাপাশি চট্টগ্রামের ক্রীড়া ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সব ধরনের খেলাধুলার আয়োজন সম্ভব হয়েছে। সে সুবাদে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে অনন্য অবদান রাখা মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবারও বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। তবে আউটার স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক মানের সুইমিংপুল কমপ্লেক্স নির্মাণকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনার মুখোমুখি হন তিনি। যদিও এই সুইমিংপুল কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, তারপরও সিজেকেএসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আ জ ম নাছিরকে দায়ী করে ছাত্রলীগ সুইমিংপুল কমপ্লেক্স নির্মাণে বাধা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেও রূপ নেয়। এমনকি এই হামলার ঘটনায় মামলার পর এটি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশে ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে পুনরায় সুইমিংপুল কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এসবের মধ্যে কিছু ভুলত্রæটি ও অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনা পেছনে ফেলে পুরো বছর উচ্ছ¡াসে মেতে ছিল চট্টগ্রামের দর্শকরা।
১০ আগস্ট ঘটেছিল কি?. টিম অস্ট্রেলিয়া চট্টগ্রামে আসার পূর্বে বাংলাদেশ দল কয়েক দিনের জন্য কন্ডিশন ক্যাম্পে এসেছিল এখানে। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের তিন দিনের প্র্যাকটিস ম্যাচে সবুজ দলের নেতৃত্বাধীন তামিম ইকবাল মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ঢুকতে গিয়ে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন। নিজের ব্যাটের আঘাতে কাঁচের দরজা ভেঙে যায়। ভাঙা কাঁচের টুকরো তার পেটের দিকে লাগে। এর ফলে তার পেট কেটে রক্ত ঝরে। তার এ আঘাতের ঘটনাটি অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হয় দল এবং সংশ্লিষ্ট সকলে। গোপনে মাঠ থেকে তাকে নগরীর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার পেটে কয়েকটি সেলাই করা হয়। এটি ছিল গত ১০ আগস্টের ঘটনা।
তামিম ইকবালের অনন্য দৃষ্টান্ত. বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্ভরযোগ্য ওপেনার ড্যাসিং হিরো তামিম ইকবাল চট্টগ্রামের ভেন্যুতে এবারের বিপিএলে অন্যন্য এক দৃষ্টান্তও স্থাপন করেন। সেটি হলো- রান আউট হয়ে মাঠ ত্যাগ করা ঢাকা ডায়নামাইটসের অলরাউন্ডার কুপারকে ফিরিয়ে এনে ব্যাট করার সুযোগ করে দেন তামিম। মূলত, রান নিতে গিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বোলার ব্র্যাভোর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান কুপার। এ কারণে রান আউটের শিকার হন তিনি। আম্পায়ার তাকে আউট ঘোষণা করলে কুপার মাঠ ত্যাগ করেন। কিন্তু তামিম ইকবাল উদারতার পরিচয় দিয়ে কুপারকে ব্যাটিংয়ে ফিরিয়ে আনেন, যা ছিল সকলের কাছেই প্রশংসিত।
ক্রিকেট উৎসব হলেই টিকিট চলে যায় কালোবাজারিতে. বন্দর নগরী চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওয়ানডে কিংবা টি-২০ ম্যাচ হলেই দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এমনকি টেস্ট ম্যাচেও মেলে দর্শকদের বিপুল সাড়া। বিপিএলেও এর ব্যতিক্রম নয়। চট্টলার ক্রিকেট পাগল এই দর্শকদের পুঁজি করে এখানকার প্রতিটি ক্রিকেট উৎসবে টিকিট নিয়ে কালোবাজারিতে মেতে ওঠে। কালোবাজারির কারণে ২০০ টাকার টিকিট ৫০০ টাকায় কিনতে বাধ্য হন দর্শকরা। এবারের বিপিএলের টিকিটও কালোবাজারিতে চলে যায়। ম্যাচের দিন চট্টগ্রাম ভেন্যুর আশপাশে রাস্তায় অন্যান্যবারের মতো এবারো কালোবাজারিতে চড়া মূল্যে টিকিট বিক্রির দৃশ্য দেখা গেছে। এ ব্যাপারে কালোবাজারিদের রোধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার সুযোগ পেয়ে তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের কাছে অনেকটাই জিম্মি দর্শকরা। এ নিয়ে দর্শকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই।
তারপরও গ্যালারিতে ছিল উপচে পড়া দর্শক
চট্টগ্রামের দর্শকরা যে ক্রিকেট-পাগল তা এখন আর কারো অজানা নয়। এখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হলেই দর্শকদের ঢল নামে। নগরীর এক প্রান্তে জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম হওয়ায় যাতায়াতসহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় দর্শকদের। নিরাপত্তাজনিত কারণে ভেন্যুর প্রায় দুই কিলোমিটার আগেই বিসিবি অনুমোদিত স্টিকারবিহীন যানবাহন আটকে দেয়া হয়। ফলে এ দুই কিলোমিটার হেঁটে গ্যালারিতে প্রবেশ করতে হয় দর্শকদের। তারপর আবার টিকিট কিনতে হয় চড়া মূল্যে কালোবাজারিদের কাছ থেকে। এত বিড়ম্বনা সত্তে¡ও গ্যালারিতে দর্শকের কমতি থাকে না। কারণ গ্যালারিতে বসে খেলা সরাসরি উপভোগ করার মজাটাই আলাদা। ঘরের মাঠে এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না চট্টগ্রামের দর্শকরা। তাই মাঠে হুমড়ি খেয়ে পড়েন তারা। এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলেছেন তামিম ইকবাল। তাই তার ভক্তরা কুমিল্লার ম্যাচে সমর্থন দিতে ছুটে এসেছেন গ্যালারিতে। শুধু তাই নয়, কুমিল্লা থেকে অর্ধ শতাধিক বাস ও মাইক্রোবাস ভাড়া করে চট্টগ্রাম ভেন্যুতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে সমর্থন দিতে ছুটে আসেন দর্শকরা। প্রতিটি ম্যাচই ছিল তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ। এখানে বেশ কয়েকটি নতুন রেকর্ডও হয়, যা দেখে নির্মল বিনোদন পেয়েছেন গ্যালারির দর্শকরা।
রেকর্ডময় চট্টগ্রাম. এবারের বিপিএলে চট্টগ্রাম ভেন্যুতে যে রেকর্ডগুলো হয়েছে তার মধ্যে দলগত সর্বোচ্চ ২১৩ রানের রেকর্ড গড়ে খুলনা টাইটানস। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করে তারা। অভিষেকে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে ১৭ রানে চার উইকেট নিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন রাজশাহী কিংসের বোলার কাজী অনিক। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পেস অলরাউন্ডার সাইফুদ্দীনের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ব্যাট হাতে টর্নেডো চালিয়ে ৩২ রান নিয়েছেন রাজশাহী কিংস দলপতি ড্যারেন স্যামি। এক ওভারে ৩২ রান দিয়ে ওই বাজে রেকর্ড করেন সাইফুদ্দীন। এছাড়াও এই ভেন্যুতে আম্পায়ারদের ভুলে এক ওভারে সাত বল করার ভিন্নধর্মী রেকর্ডও হয়েছে। সিলেট সিক্সার্সের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বির এক ওভারে আম্পায়াররা একটি অতিরিক্ত বল করান। এছাড়া এবারের বিপিএলে তিনটি ভেন্যুর মধ্যে চট্টগ্রামের উইকেট ছিলও চমৎকার। সিলেটের উইকেট থেকে দলগুলো মোটামুটি রান পেলেও ঢাকায় ছিল রানের খরা। তার মধ্যে ব্যতিক্রম ছিল চট্টগ্রামের উইকেট। দলের খেলোয়াড়দের ব্যাট থেকে যেমন রান এসেছে পাশাপাশি বোলাররাও পেয়েছে তাদের কাক্সিক্ষত উইকেট। তাই দলগুলো বলেছে, চট্টগ্রামের উইকেট ছিল স্পোর্টিং উইকেট। টি-২০ এর মূল আকর্ষণ হচ্ছে ব্যাটিং তান্ডব। দর্শকরা দেখেছে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। চট্টগ্রাম ভেন্যুর দায়িত্বপ্রাপ্ত কিউরেটর মো. জাহেদ রেজা বাবু এ স্পোর্টিং উইকেট তৈরি করেছেন। ১৬ জন মাঠকর্মী নিয়ে চমৎকার এ উইকেট তৈরি করতে কিউরেটর সময় নিয়েছেন পুরো এক মাস। সে জন্য কিউরেটর প্রশংসার দাবিদার।
নতুন বছর শুরুতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ. ক্রিকেটের ভেন্যু জহুর আহমদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে নতুন বছর জানুয়ারির শেষের দিকে আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হবে চট্টগ্রাম ক্রীড়াঙ্গনের পথচলা। এখানে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি টেস্ট ও একটি টি-২০ খেলবে। এ ভেন্যুতে নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চট্টগ্রামে খেলবে একটি টেস্ট ও একটি ওয়ানডে। এছাড়া চট্টগ্রামের দর্শকরা আরো দেখতে পাবেন এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল ও বিপিএলসহ বেশ কিছু বড় টুর্নামেন্ট।
চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন যাদের হারিয়েছে. ট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে এ বছর আমরা হারিয়েছে সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগরী ক্রীড়া সংস্থার úৃষ্ঠপোষক ও উপদেষ্টা এ বি এম মহিউদ্দীন চৌধুরীকে। যিনি জহুর আহমদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনরত সাংবাদিকদের সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছিলেন। আরো হারিয়েছি সিজেকেএসের সাবেক কাউন্সিলর এ টি এম মহিবুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জালাল উদ্দিন আহমেদ, মো. সরওয়ার হোসেন, ফরহাদ মুনির জুয়েল, হাজী রফিক আহমদ, সাবেক ফিফা রেফারি ও কাউন্সিলর আলাউদ্দিন আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন