আজ কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহর জন্মদিন। তিনি এখন আর গান না। সঙ্গীত ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় সাত বছর আগে। তবুও তার গাওয়া গানের মাঝেই তার ভক্ত শ্রোতারা তাকে খুঁজে বেড়ান। জন্মদিন উপলক্ষে এই শিল্পীর কোন বিশেষ আয়োজন নেই। অন্যান্য দিনের মতোই কাটবে আজকের দিনটি। শাহনাজ রহমতুল্লাহ বলেন, ‘এখন আসলে জীবনযাপন বদলে গেছে। সারাক্ষণ মহান আল্লাহর ধ্যানেই মগ্ন থাকি, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনেই চেষ্টা থাকে আমার। আমি সবার জন্য দোয়া করি যেন সবাই সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। আজকের দিনে একটি এতিম খানায় এতিমদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’ ছোটবেলার জন্মদিন প্রসঙ্গে শাহনাজ রাহমতুল্লাহ বলেন, ‘ছোটবেলায় আম্মা পোলাও রান্না করতেন। আমরা সব ভাইবোন মিলে বেশ আনন্দ নিয়ে খাওয়া দাওয়া করতাম। সেই স্মৃতি আজ ভীষণ মনেপড়ে।’ শাহনাজ রহমত উল্লাহর জন্ম ১৯৫২ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকায়। তার বাবা এম ফজলুল হক, মা আসিয়া হক। মায়ের হাতেই ছোটবেলায় শাহনাজের গানের হাতেখড়ি। পরিবারের সবার কাছে তিনি ছিলেন আদরের শাহীন। ছোটবেলাতেই তিনি শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। মাত্র ১১ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করেন। সেই থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত নিয়মিত গান করেছেন। টেলিভিশনে গান গাইতে শুরু করেন ১৯৬৪ সাল থেকে। সত্তরের দশকে অনেক উর্দু গীত ও গজল গেয়েছেন। প্রখ্যাত গজলশিল্পী মেহেদী হাসানের কাছে তিনি গজল শিখেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি আবুল বাশার রহমতউল্লার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক মেয়ে নাহিদ রাহমত উল্লাহ এবং এক ছেলে একে এম সায়েফ রহমত উল্লাহ। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার’সহ বহু সম্মানায় ভূষিত হয়েছেন। শাহনাজ রহমতুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়, আর কি কখনো গাইবেন? জবাবে বলেন, ‘যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর কোনদিনই গাইবো না। সুতরাং আর কোনদিনই গান গাইবো না। আমি আমার সিদ্ধান্তেই অটল থাকতে চাই।’ উল্লেখ্য, শাহনাজ রাহমত উল্লাহর ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন এদেশের প্রখ্যাত একজন সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। আরেক ভাই জাফর ইকবাল ছিলেন এদেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমত উল্লাহ’র গাওয়া চারটি গান স্থান পায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন