ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে যানজট নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের প্রথম ৬ লেনের ফ্লাইওভার।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা এই ফ্লাইওভার আগামীকাল ৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্ভোধন করবেন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ফেনীর জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায় জানান, ৪ জানুয়ারী সকাল সাড়ে ১০টায় ফেনী জেলা প্রসাশকের সম্মেলন কক্ষ ও মহিপালের ফ্লাইওভারের কাছ থেকে একযোগে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে সাজসজ্জা। মহিপালের রেপলিকা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রদর্শিত হবে।
সূত্র জানায়, দেশের প্রথম ছয় লেইন ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্ক অর্গানাইজেশনের আওতায় ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল আবদুল মোনেম লিমিটেড। নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালর ১ এপ্রিল। ২০১৮ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথাছিলো। সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও সেনাবাহিনীর নিরলস পরিশ্রমের কারণে নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস আগেই নির্মাণ কাজ হওয়ায় ৪ জানুয়ারী থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ফ্লাইওভারের উপরে ৬ লেইন নিচে ৪ লেইন সার্ভিসসহ মোট ১০ লেইনে যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই ছয় লেন ফ্লাইওভারটি। যা চালু হলে মহাসড়কের মহিপাল অংশ সহ বিভিন্ন স্থানের যানজট কমে যাবে।
ফেনীর মহিপালের চৌরাস্তা দিয়ে ফেনী-নোয়াখালীর আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচল করায় এখানে যানজট নিত্যদিনের দৃশ্য ছিলো। এ বিষয়গুলা বিবেচনা করে ফ্লাইওভারটি সিক্স লেন করা হয়েছে। আগের প্রাক্কলন অনুসারে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১৫৮ কোটি টাকা। পরবর্তীতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। মূল ফ্লইওভারের দৈর্ঘ্য ৬৬০ মিটার, প্রস্থ ২৪ দশমিক ৬২ মিটার, সার্ভিস রোডের দৈর্ঘ্য ১৩৭০ মিটার প্রস্থ ৭ দশমিক ৫ মিটার, এপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য ১১৬০ মিটার, সাইড ড্রেনের দৈর্ঘ্য ২২১০ মিটার। ড্রেনের উপর নির্মিত ফুটপাতের দৈর্ঘ্য ২২১০ মিটার। এই ফ্লাইওভারে পিসি গার্ডার ১৩২টি, ষ্টেন ১১ টি, পিলার ২০ টি এবং ফ্লাইওভারটিতে ১১টি স্পেনে র্যাম্প রয়েছে ২৯০ মিটার।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপালের উত্তর প্রান্তের দেবীপুরের বাখরাবাদ গ্যাস অফিসের কাছ খেকে ঢাকা থেকে আসা গাড়ী গুলো ফ্লাইওভারে উঠে দক্ষিন প্রান্তের চাড়িপুর স্কুলের কাছে গিয়ে নেমে আবার সমতল মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম অভিমুখে যাবে। যে সকল যানবাহন ঢাকা থেকে এসে ফেনী শহর বা নোয়াখালী সড়কে যাবে তারা উত্তর প্রান্তের পয়েন্টের ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে অপর সাইড রোড দিয়ে যাবে। একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে আসা যানবাহন গুলো ঢাকাগামী হলে ফ্লাইওভার দিয়ে যাবে। যারা ফেনী শহর বা নোয়াখালী যাবে তার ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে অপর সাইড রোড দিয়ে যাতায়ত করবে। যাকে লিংক রোড বলা হচ্ছে।
ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী জানান, সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে নির্মান কাজ চলাকালে কাজের মান কাজের ধরন ছিলো লক্ষনীয়। এ ফ্লাইওবার হওয়ায় মহাসড়কের যানজন অনেকাংশে কমে যাবে। এটা ফেনীবাসীর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নতুন বছরের উপহার। এজন্য ফেনীবাসী প্রধানমন্ত্রী ও সড়ক মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন