মহানগর জেলা উপজেলায় কালো পতাকা মিছিল
স্টাফ রিপোর্টার : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি পায়নি বিএনপি। সমাবেশের অনুমতি চাওয়ার পর ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ (ডিএমপি) সমাবেশের পরিবর্তে ঘরোয়া সভা করার নির্দেশনা দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিএনপি চাইলে ইনডোরে (ঘরের ভেতর) যেকোনো সময় কর্মসূচি পালন করতে পারবে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কর্মসূচি পালন করতে হলে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত বিএনপিকে অপেক্ষা করতে হবে। অনুমতি না পাওয়ায় আজ রাজধানীতে কোন সমাবেশ হচ্ছে না বিএনপির। তবে রাজধানীর বাইরে সারাদেশের সকল মহানগর, জেলা ও উপজেলায় কালো পতাকা মিছিল করার কথা জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, পুলিশ সমাবেশের অনুমতি দেয়নি তবে ইনডোর প্রোগ্রাম করার কথা বলেছে। বিএনপি ইনডোর কোন সভা করবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো ইনডোর সভা করতে চাইনি, সমাবেশ করতে চেয়েছি।
এরআগে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টায় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সাথে ডিএমপির বৈঠক হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া ও আব্দুস সালাম। সেই বৈঠকে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার কথা জানানো হয়। বৈঠক শেষে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী জানান, ডিএমপি কমিশনারের সাথে আমাদের সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত কথা হয়েছে। আমরা চাইলে যে কোনো দিন সমাবেশ করতে কোনো সমস্যা নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে সেটা ইনডোরে করতে হবে। এই মুহুর্তে বাইরে কর্মসূচি করা যাবে না। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইলে আমরা জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে করতে পারবো। এখন আমরা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ডিএমপিকে জানানোর কথা বলে এসেছি। আজ শুক্রবার নয়াপল্টনে সমাবেশ করার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এ্যানী বলেন, আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করার কথা বলেছিলাম। তবে রাস্তায় এই মুহুর্তে সমাবেশ না করতে ডিএমপি কমিশনার আমাদের অনুরোধ করেছেন। সমাবেশের বিষয়ে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ সকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি।
এরআগে গতকাল সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন এ দলের প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বিএনপি সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উপায়ে সম্পন্ন করে থাকে। অতীতে বিএনপির কর্মসুচীতে বিশৃঙ্খলার নজির নেই। ৫ জানুয়ারির গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচীও বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে-তারাই পরিকল্পিতভাবে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ কর্মসূচির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে একটা অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে চাচ্ছেন। তারা রাজনীতিকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ দেশব্যাপী সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার নির্যাতনসহ নানাভাবে হয়রানি শুরু করেছে।
সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে শুক্রবার সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে সেখানে একটি নাম না জানা সংগঠনকে অনুমতি দিয়ে যে নাটক করেছে সেটি আসলে গণতন্ত্রের সাথে, জনগণের সাথে মশ্করা করা। তবু আমরা এখনো আশা করবো সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেবে। সমাবেশ সফল করতে বিএনপি ঢাকা মহানগর এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সংগঠনগুলো ঢাকা মহানগরীর জনগণকে সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রচার চালাচ্ছে। সভা-সমাবেশ করা রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি অবিলম্বে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে অনুমতি দেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আবারো আহবান জানাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন