হামলা, মামলা, গ্রেফতার, গুলি কোন কিছুতেই আর আটকানো যাবে না, সরকার যতকিছুই করুক, যত বাধাই দেয়া হোক নেতাকর্মীরা জীবন বাজী রেখে দলের কর্মসূচি সফল করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। প্রতিটি কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ, আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা, উচ্ছ্বাসে একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করছে দলটির হাইকমান্ড। ইউনিয়ন, থানা/উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় বিক্ষোভ সমাবেশ, গণসমাবেশের পর এবার একইভাবে পদযাত্রা কর্মসূচিতে নিমেছে দলটি। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন ও মহানগরে পদযাত্রার পর গতকাল শনিবার জেলায় জেলায় পদযাত্রা করেছে দলটির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে আগামী ৪ মার্চ দেশব্যাপী সকল মহানগরের থানায় থানায় পদযাত্রার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কর্মসূচি ঘোষণাকালে দলটির নেতারা বলেন, সর্বস্তরের জনগণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ সরকার জোর করে আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। অতি দ্রুত চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে হবে। তারা বলেন, বিএনপির প্রত্যেক কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নেতা-কর্মী ও জনগণ রাজপথ ছেড়ে যাবে না।
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. আক্তারুল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলনে সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হচ্ছে। এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, আমরা হামলা, মামলা, গুলি, গ্রেফতারে আর ভয় পাই না।
যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এড. সাবেরুল হক সাবু বলেন, আর কত হামলা, মামলা করবে? এসবে নেতাকর্মীরা এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে। পুরোনো কায়দায় আমাদের আর দমন করা বা পিছনে হটাতে পারবে না। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকারের দমন, নিপীড়ন, দেশ পরিচালনায় অযোগ্যতা, দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতিসহ নানা কারণে সাধারণ মানুষ এখন ক্ষুব্ধ। বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ মনে করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধা হবে, মানুষ তার ভোটাধিকার ফিরে পাবে এবং পরিবারের মুখে তিনবেলা খাবার তুলে দিতে পারবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলণ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দল এবং জোট। গতকাল শনিবার সারাদেশের জেলায় জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচিগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় প্রতিটি জেলাতেই এই কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। অনেক জায়গায় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও অংশ নিয়ে বিএনিপর এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এ সময় ভোলা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের বাধার সম্মখিন হয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। এদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরের মিছিলে টিয়ারসেল নিক্ষেপের অভিযোগ ওঠেছে পুলিশ বিরুদ্ধে। এতে ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে মানুষের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করবো, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ফিরিয়ে আনবো। মানুষ যেনো সুখে শান্তিতে এই দেশে বসবাস করতে পারে সেজন্য আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। গতকাল শনিবার বিকেলে ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপি ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পদযাত্রায় অংশ নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির প্রথম য্গ্মু আহবায়ক মামুন মাহমুদের সভাপতিত্বে পদযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি ঘোষিত প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে হাজার নেতাকর্মী নদী সাতরিয়ে, পায়ে হেটে, না খেয়ে সমাবেশ অংশ নেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে টাকা দিয়ে ও বিরানি খাইয়ে নেতাকর্মীদের প্রোগ্রামে আনতে পারে না। কারণ বিএনপির সাথে সাধারণ জনগণ আছে। তাই জনগণ নিঃস্বার্থভাবে আসে। বর্তমানে ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগের হাতে সাধারণ মানুষের জানমাল নিরাপদ নই, তাই আ.লীগকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। গতকাল মানিকগঞ্জ পৌরসভার বান্মদুটিয়া মডেল হাই স্কুলের সামনে বিএনপির পদযাত্রা শেষে জেলা বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আমীর খসরু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর, সহ-সভাপতি অ্যাড. আজাদ হোসেন খান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া সাইদসহ অন্যান্যরা।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির উদ্যোগে গতকাল বায়েজিদ লিংক রোডস্থ বাংলা বাজার মোড় থেকে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কোনো স্বৈরশাসক স্বেচ্ছায় ক্ষমতা থেকে সরে আসে না, এই সরকারও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে। তিনি বলেন, সর্বস্তরের জনগণ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ সরকার জোর করে আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। অতি দ্রুত চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, বিএনপির প্রত্যেক কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে বিএনপির নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন জোরদার হতে শুরু করেছে। এই অবৈধ সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নেতা-কর্মী ও জনগণ রাজপথ ছেড়ে যাবে না।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রত্যেক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণেরর ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। জনগণ এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই সরকারের পতন অনিবার্য।
উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উদয় কুসুম বড়ুয়া, বিএনপি নেতা এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সরোয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন, কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার, অ্যাডভোকেট আবু তাহের, আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, আজম খাঁন, ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সেলিম চেয়ারম্যান, অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে জানান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার পদযাত্রা কর্মসূচিতে ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে আমাদের আন্দোলন। এ আন্দোলনের রেশ পৌঁছে গেছে তৃণমূলে। শুধু বিএনপি নেতাকর্মীই নয়, সাধারণ মানুষ চলমান কর্মসূচিতে সতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। সরকার পতনের আন্দোলন আজকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে শুরু করে সরকারি বিরোধী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করছি। দেশের মানুষ বর্তমান সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। অবিলম্বে পদত্যাগ না করেলে আগামীতে কঠোর আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এই সরকারকে বিদায় করা হবে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সেই লক্ষ্যে সকল আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল পদযাত্রা শুরুর আগে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে কুমিল্লা উত্তর জেলায় কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব উন নবী সোহেলের নেতৃত্বে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পদযাত্রায় অংশ নিতে সাবেক এমপি শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের নির্দেশে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির একটি মিছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভানি ইউনিয়নের খাদঘরে পৌঁছলে মিছিলটি পুলিশি বাধার সম্মুখিন হয়। মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন অঞ্জন জানান, তাদের মিছিলে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এঘটনায় উপজেলা বিএনপির খাইরুল, ফারুক খান, জাকির হোসেন, হেলাল ও ইউসুফ মুন্সী নামে ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা থেকে জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ দশ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি নেতা কর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না। গতকাল বিএনপি মাগুরা জেলা শাখা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। জেলা বিএনপির আহবায়ক আলী আহাম্মদ কর্মসুচিতে সভাপতিত্ব করেন।
নিতাই রায় আওয়ামী পুলিশ কর্তৃক ৪১ জন নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা গায়েবী মামলা, বিএনপি নেতা পিকুল খান, অ্যাড শহিদুল ইসলাম রূপক ও ওয়াজেদ আলীকে গ্রেফতার করার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে অবিলম্বে তাদেরসহ অন্যান্য গ্রেফতারকৃত নেতা কর্মীদের মুক্তি ও গায়েবী সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, আগামী ৪ মার্চ দেশের সকল মহানগরের থানায় থানায় পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল শনিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর আগে বিকাল ৪টায় ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ বাজারে পূর্বঘোষিত উত্তর জেলা বিএনপির পদযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এ সময় উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েত কালামের সভাপতিত্বে যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার, বৈদেশিক কমিটির সদস্য ইয়াসের খান চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট নূরুল হক, লুৎফুল্লাহহেল মাজেদ বাবু প্রমুখ।
প্রিন্স বলেন, এই সরকার জনগণের সরকার নয়। দেশের প্রতিটি গ্রামেগঞ্জে সরকার বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। গুলি করে, হামলা মামলা করেও এই আন্দোলন থামানো যাবে না। এই সরকার সুষ্ট নির্বাচনকে ভয় পায়। ভোটের নামে তারা প্রহসন করছে। ভোট কেন্দ্রে এখন ভোটার থাকে না, থাকে কুকুর বিড়াল। এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষের করুণ অবস্থা। অবিলম্বে এই সরকার স্বইচ্ছায় পদত্যাগ না করলে গণঅভ্যুত্থানে তাদের পতন নিশ্চিত করা হবে।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকেলে বিএনপির বিশাল পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। গতকাল বিকেলে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বে শহরের উত্তর প্রান্তের ফুলবাড়ি থেকে একটি মিছিল শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়।
স্টাফ রিপোর্টার, গাইবান্ধা থেকে জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামেও মামলা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর তিনি তার মামলা তুলে নিলেন। অথচ বেগম খালেদা জিয়াকে সেই ভুয়া মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারোভোগ করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পরও তাকে মুক্তি না দেয়ায় দেশেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তাকে বিদেশে চিকিৎসার কোন সুযোগ দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, আজকে দেশে আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের নামে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসে। তারা ভোট চোর। তারা দিনের ভোট রাতে করে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ কোথাও কোন আসন পাবে না। গাইবান্ধা জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিকের সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুলের সঞ্চালনায় পদযাত্রা কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. শহিদুজ্জামান শহীদ প্রমুখ।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, তত্ত্বাধায়ক সরকার গঠন নিয়ে আর কোনো ধানাইফানাই চলবে না বলে আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, অনেক ধানাই ফানাই হয়েছে। এসব আর সহ্য করা হবে না। আওয়ামী লীগ লুটপাট করতে করতে দেশকে সর্বনাশের জায়গায় নিয়ে গেছে। সময় কাছিয়ে আসছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না, নির্বাচন মেনেও নেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে আওয়ামীগকে বাধ্য করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজশাহী মহনগরীর সাগরপাড়া বটতলা মোড়ে জেলা বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রাপূর্ব এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক এমপি হারুন আরো বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা, এমপি ও মন্ত্রীদের শরীর থেকে তেল বেরুচ্ছে। তাদের শরীর চকচক করছে। কিন্তু তেল ছুটে যাবে বলেও সতর্ক করে তিনি। রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, দলের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ইশা, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ^নাথ সরকার প্রমুখ।
সিলেট ব্যুরো জানায়, গতকাল বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, আওয়ামী লীগ মিথ্যা কথায় পারদর্শী। আওয়ামী লীগের নিশিরাতের এক মন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ককে স্বামী-স্ত্রীর সম্পকের সাথে তুলনা করেন, এই একই ব্যাক্তি নিজেই বলছেন ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখতে ভারতের কাছে ধর্না দিয়েছেন। ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। পারমাণবিক বিদুৎ কেন্দ্রের নামে ভয়াবহ লুটপাট করা হয়েছে। তাই দেশে বাঁচাতে হলে এই লুটেরাদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার বিকল্প নেই।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা মামুনুর রশিদ মামুন (চাকসু), সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী প্রমুখ।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচীতে বরিশালে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড, মজিবর রহমান সরোয়ার বলেছেন, আমরা যাতে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে না পারি তারা আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ২০১৪ সালে তারা এককভাবে ভোট করে ১৫৩ সিট জালিয়াতি করে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। ’১৮ সালে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে দিনের ভোট রাতে করে এক নজীর বিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ভোটার বিহীন সরকার আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, এ অবৈধ সরকার আজকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আজকে আমাদের কথা বলার সময় এসেছে ও মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার সময় এসেছে।
শনিবার জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যলয়ের সম্মুখে অস্থায়ী মঞ্চে বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি আবুল হোসেন খানের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপি ও উপজেলা বিএনপি সহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পদযাত্রা পূর্ব সভায় বক্তব্য রাখেন।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালী জেলা বিএনপি পথযাত্রা শুরু করলে মিছিলে পুলিশের বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করে। এতে বিএনপি ৬ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে জেলা বিএনপির সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে বনানী মোড়ে জেলা বিএনপির কার্যলযের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে। প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আকন কুদ্দুসর রহমান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কেন্দ্রীয় বিএনপি।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা জানান, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলন ছেড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না। গতকাল শনিবার সকালে নাটোর জেলা বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুলু এসব কথা বলেন।
এই বছরই আওয়ামী লীগের শেষ বছর উল্লেখ করে দুলু বলেন, পতনের সময় কাছে আসায় সরকার দিশেহারা হয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। জেল জুলুম দিয়ে আন্দোলন থেকে দূরে রাখার চেষ্ঠা করছে।
জেলা বিএনপির সদস্য সজিব রহিম নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র কাজী শাহ আলম ও এমদাদুল হক আল মামুন।
পদযাত্রাটি নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় গেটের সামনে গেলে পুলিশী বাধার কারণে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে সকাল পৌনে আটটার দিকে নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আব্দুল আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাহিনের নেতৃত্বে ১৫-২০টি মোটরসাইকেলের একটি বহর নিয়ে এসে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোড়ন ঘটায়। এসময় রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এই কার্যালয়ের মধ্যেই ছিলেন।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি পুলিশের বাধা এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম ২০-২৫ জন নেতাকর্মীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুর রহমান।
বরগুনা জেলা সংবাদদাতা জানান, এ ফ্যাসিস্ট সরকার যতই বলুক দেশকে তারা সিঙ্গাপুরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, বস্তুত তারা দেশটাকে শ্রীলংকার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা দেশটাকে শ্রীলংকার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকার জনগণের বুকের ওপর জগদ্দল পাথর হয়ে বসে আছে। দেশ ও জনগণকে বাঁচাতে এ সরকারকে হঠাতে হবে। বরগুনা জেলা বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রার পূর্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ চৌধুরী একথা বলেন।
এরআগে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুবুল আলম ফারুক মোল্লার সভাপতিত্বে এক পথসভায় প্রধান অতিথি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বক্তব্য প্রদান করেন। পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা।
স্টার রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুরে বিএনপির বিশাল পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দুপুর ১২টায় চাঁদপুর শহরের হাজী মহসিন রোডে কেন্দ্রীয় বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনের নেতৃত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
চাঁদপুরের ৮ উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম, সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সমন্বয়কারী এম এ হান্নান।
ভোলা জেলা সংবাদদাতা জানান, ভোলায় পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে গেল বিএনপির পদযাত্রা। গতকাল শনিবার সকালে জেলা শহরের সদর রোডের মহাজনপট্টিস্থ জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে পদযাত্রা বের হয়ে সদর রোডে দিকে আসতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দিয়ে বরিশাল দালান এলাকায় আটকে দেয়। এ সময় পুলিশ ও বিএনপি কর্মীদের মাঝে বাগি¦তণ্ড, ধাক্কাধাক্কি করে কর্মসূচি শেষ করা হয়।
এর আগে জেলা বিএনপি আয়োজিত এই কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বক্তব্য রাখেন। এতে ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীরের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, সদস্য সচিব রাইসুল আলম, সাবেক সহ সভাপতি ফজলুর রহমান বাচ্চু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, শহরের কাটপট্টি বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে পদযাত্রা পূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মাসুকুর রহমান মাসুক, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদ শহিদুল ইসলাম বাবুল। সভা শেষে দলীয় কার্যালয় সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে জনতা ব্যাংকের মোড় পৌছে শেষ হয়।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠিতে বিএনপির পদযাত্রা শেষে যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সদর থানার পরিদর্শক ফিরোজ কামালসহ ৬ পুলিশ সদস্য এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিবসহ ৯ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় জেলা যুবদলের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমানসহ ১৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে শহরের আমতলা সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- ঝালকাঠি সদর থানার পরিদর্শক ফিরোজ কামাল, এসআই মো. শফিকুর রহমান, এসআই খোকন হাওলাদার, এসআই নজরুল ইসলাম, এএসআই কুহিন আহম্মেদ শিপন ও কনস্টেবল মতিয়ার রহমান। তাদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রার কর্মসূচি শেষে দলীয় কার্যালয়েল সামনে আসলে নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়।
তবে বিএনপির নেতকর্মীদের দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয়। কর্মসূচি শেষে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিলেন। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা অফিসে হামলা চালায়। এতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেনসহ যুবদল ও ছাত্রদলের ৯ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ঝালকাঠিতে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রায় করে জেলা বিএনপি।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের আমতলা সড়কে জেলা বিএনপির কর্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা বের হয়। পদযাত্রাটি কিছুদূর গেলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়।
পরে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রাটি কালিবাড়ি সড়ক, পোস্ট অফিস সড়ক ঘুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এতে প্লেকার্ড ও ব্যানার নিয়ে শত শত দলীয় নেতাকর্মী অংশ নেয়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষ ভালো নেই। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন আগামীতে দেশে ভয়াভয় অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেবে। দেশের এমন পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দায়ী। এ থেকে উত্তরণ পাওয়ার জন্য বিএনপির বিকল্প নেই। দেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে কঠোর আন্দোলন করে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, তেল আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী পদযাত্রার ডাক দেয় বিএনপি।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, পুলিশি বাধার মুখে পরে টাঙ্গাইলে বিএনপির পদযাত্রা। পরে সেখানে পদযাত্রা শেষ করে নেতাকর্মীরা। এ আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবালের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির অহমেদ টিটো, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, ওবায়দুল হক নাসির প্রমুখ।
রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ী জেলা বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ে বিএনপির পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক, ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির। বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহবায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু।
নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীতে পদযাত্রা করেছে জেলা বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল দুপুরে মাইজদী শহীদ মিনার থেকে একটি গণ মিছিল বের করে দলের নেতাকর্মীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস- চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি।
মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচী পালন করে। সদর উপজেলার মুক্তারপুর ফেরীঘাট এলাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুস সালাম আজাদের নেতৃত্বে নেতা কর্মীরা পদযাত্রা শুরু করে। পদযাত্রায় মহিলা দল, ছাত্রদল, শ্রমিকদলের নেতাকর্মীসহ বিপুল সংখ্যক সাধারণ জনতা অংশ গ্রহন করে।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, গণতন্ত্রকে নিঃশ্বেস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আন্দোলন ছাড়া গণতন্ত্রকে পূনরুদ্ধার করার কোন উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। গতকাল দুপুরে নওগাঁ নওযোয়ান মাঠে ১০ দফা দাবিতে নওগাঁ জেলা বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রার উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় মিজানুর রহমান মিনু বলেন, জনগণ আর আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। চাল, ডাল, আটা,গ্যাস,তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষ আজ অসহায়। এই অসহায় মানুষগুলো এখন আর আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। গণতন্ত্রকে নিঃশ্বেস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান, ১০ দফা দাবিতে কুড়িগ্রামে জেলা বিএনপির আয়োজনে পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুরে কুড়িগ্রাম এন আর প্লাজার সামনে পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীর উল ইসলাম, এ সময় বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহ সভাপতি শফিকুল ইসলাম বেবু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক রুবেলের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক সহ সভাপতি সহিরুজ্জামান সাজু, সহ সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী, মোসলেম উদ্দিন মোল্লা, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন