শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নির্বাচন নিরপেক্ষ হলে ৮০ ভাগ ভোট বিএনপি পাবে -মির্জা ফখরুল

| প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ বিএনপিকে ভোট দিবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে দর্শন দিয়েছিলেন, যে দল গঠন করেছেন সে দল আজও এ দেশের মানুষের বুকের মধ্যে। আজকে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখুন না, শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ এই বিএনপিকে ভোট দিবে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটরিয়মে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, সাংবাদিক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির যুগ্মমহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, শফিউল বারী বাবু, হেলেন জেরিন খান।
বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আইন শৃংখলা বাহিনীকে ব্যবহার করে আমাদের ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট সরকার, যারা গণতন্ত্রকে একবার নয় বহুবার ধ্বংস করেছে। তারা আজকে অত্যান্ত সুপরিকল্পিত ভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে আজকে তারা একটা একদলীয় শাসন ব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের লোকেরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মিথ্যাচার করে। এই মিথ্যাচার গুলো এজন্য করে যে জিয়াউর রহমানকে শুধু তারা ভয় পায় না, তারা মনে করে তার আদর্শ, দর্শন বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে চলে যায় তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা দেখেছি, এই আওয়ামী লীগ ছিল না বাকশাল ছিল। তাদের দলের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সে দলকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়ে।
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কস্ট দিচ্ছে। আজকে আমরা সবাই জানি এই মামলা একটা মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এই মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে সাপ্তাহে আজ ৫ দিন প্রায় আদালতে আটকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা আজকের এই দিনে শপথ গ্রহণ করি যে আগামী দিনে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বাধ্য করে বলবো পদত্যাগ করুণ, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দিন। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করুন, তারপর নির্বাচন অতি শীঘ্রই দিন। এবং জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত করুন। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ যারা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছে, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করেছে তারা অবশ্যই এই ফ্যাসিস্ট, অত্যাচারী, নির্যাতনকারী সরকারকে বাধ্য করবে গ্রহণযোগ্য জন্য।
খাল খনন কর্মসূচি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দেয়াসহ জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি যেদিন শহীদ হলেন ঢাকা’র মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে সমগ্র ঢাকায় মানুষ দিয়ে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল। সেদিন কৃষক তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল। এক রিক্সাওয়ালা কালো পতাকা নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে এখান থেকে ওখানে চলে গিয়েছিল। এটা আমার কথা নয়, টাইমস পত্রিকায় খবর এসেছিল। তার জানাজায় লাখ লাখ মানুষ সেদিন উপস্থিত হয়েছিলেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ হয়েছে সেখানেই জিয়াউর রহমান সফল হয়েছেন বলেই তারা শহীদ জিয়াউর রহমান, তার পরিবার এবং বিএনপিকে ভয় পায়। সেজন্য তারা আমাদের সভা-সমাবেশ করতে দেয় না। তারা নয় বছর ধরে নিপীড়ন-নির্যাতন করে যাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, যত নির্যাতন করুক না কেনো, বিএনপির পেছনে এদেশের জনগণ আছে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দিতে হবে।
বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি না দেয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে এই ছোট পরিসরে আমাদের এখানে সভা করতে হচ্ছে। আমাদের এক ঘরে করে ফেলেছে। কোথাও তারা আমাদেরকে সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেয় না। আমরা এই অনুমতি নির্ভর রাজনীতি বর্জন করি, এটা আমরা প্রতিহত করবো। আমরা এই অনুমতির জন্য আর বসে থাকবো না। যে বাঁধ তারা সৃষ্টি করেছেন। তারা মনে করেছে যে, এই বাঁধ চিরদিন থাকবে। আমাদেরকে ঘরের মধ্যে রেখে দেবে। আমি বলতে চাই, এই বাঁধ ভাঙবে, এই বাঁধ ভেঙে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে। আবার দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন