শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

১৩ ঘণ্টা পর কন্টিনেন্টাল মুক্ত কাবুলে জঙ্গি হামলায় নিহত ৬

আফগানিস্তানে তালেবান হামলায় ১৮ মিলিশিয়া নিহত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

১৩ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর জঙ্গিমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কাবুলের বিলাসবহুল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। গত শনিবার রাত নয়টার দিকে ওই হোটেলে হামলাকারী তিন বন্দুকধারীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিরাপত্তা সূত্রকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ওই ঘটনায় কমপক্ষে ছয় জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত ও আরও ছয়জন আহত হয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দেড় শতাধিক অতিথিকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
জিম্মিদশার অবসান ঘটিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী। দ্য ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলটি রাষ্ট্রায়ত্ত হোটেল। এতে বিয়ে, কনফারেন্স আর রাজনৈতিক অনুষ্ঠানও করা হয়ে থাকে। অপরদিকে, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ বালাখে তালেবানের আকস্মিক হামলায় সরকারপন্থী অন্তত ১৮ মিলিশিয়া নিহত হয়েছে। গতকাল রোববার স্থানীয় এক কর্মকর্তা একথা জানান। জেলা প্রধান সারাজুদ্দিন আবিদ বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেন, রোববার রাতে শোলগ্রা জেলার বোজবয় গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
তালেবান জঙ্গিরা একটি নিরাপত্তা চৌকিতে অতর্কিতে এ হামলা চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে লোকাল আপরাইজিং গ্রæপের ১৮ সদস্য প্রাণ হারায়। নিহতদের মধ্যে স্থানীয় নেতা ও তালেবান বিরোধী যোদ্ধাদের কমান্ডার হাজী হামিদুল্লা ও তার ছেলে ওবায়দুল্লাহ্ও রয়েছে। ওবায়দুল্লাহ্ আফগান পুলিশ ছিলেন বলে সূত্রটি জানায়। ঘটনার তদন্ত চলছে। তালেবান এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ টুইটারে জানান, মিলিশিয়াদের মাঝে একজন তালেবান যোদ্ধাদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকায় হামলাটি চালানো সহজ হয়েছে। সংঘর্ষে এক তালেবান যোদ্ধা নিহত ও অপর একজন আহত হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। খবরে বলা হয়, ২০১১ সালেও তালেবান হামলার লক্ষ্য হয় হোটেলটি। সে সময় নয় আক্রমণকারীসহ ২১ জন নিহত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে কাবুলের হোটেলগুলোর বিষয়ে সতর্কতা জারির একদিন পরই এই হামলার ঘটনা ঘটলো। বৃহস্পতিবার মার্কিন দূতাবাসের জারি করা ওই সতর্কতায় কাবুলের আরেকটি হোটেলের দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়, সন্ত্রাসী গ্রæপগুলো কাবুলের হোটেলগুলোতে হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে আমরা সচেতন রয়েছি। বিবিসির খবরে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাতে বলা হয়েছে, হোটেলের এক নিরাপত্তা কর্মীকে গুলি করে গ্রেনেডে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ছয় তলা হোটেলে প্রবেশ করে অতিথি আর কর্মীদের ওপর গুলি বর্ষণ শুরু করে তারা। নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা হামলায় দুই বন্দুকধারী নিহত হলেও অন্যরা হোটেলের ওপরের তলাগুলোতে অবস্থান নেয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, হামলাকারীরা অতিথিদের জিম্মি করে ফেলে। শনিবার জিম্মিদশায় থাকা অবস্থায় হোটেলে থাকা এক অতিথি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, মানুষ নিজেদের কক্ষে আত্মগোপন করে আছে। হোটেলটি জিম্মিমুক্ত হওয়ার আগে তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারছি না হামলাকারীরা হোটেলে আছে কী না। তবে বন্দুকের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, বিশেষ বাহিনী হোটেলটি নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং আটকেপড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করে। কিছু রিপোর্টে বলা হয়েছে, হোটেলটিতে একটি আইটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। ফলে প্রাদেশিক কর্মকর্তারা ওইসময় হোটেলটিতে অবস্থান করছিলেন। বৃহস্পতিবারই কাবুলে মার্কিন দূতাবাস শহরের হোটেলগুলোতে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছিল। সেখানে বলা হয়, শহরের হোটেলগুলোতে চরমপন্থিরা হামলা চালাতে পারে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলাকারীরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা এড়িয়ে কীভাবে হোটেলে প্রবেশ করলো তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন তারা। দুই সপ্তাহ আগে হোটেলটির নিরাপত্তার দায়িত্ব একটি প্রাইভেট কোম্পানিকে হস্তান্তর করা হয়। তিনি জানান, সম্ভবত তারা রান্নাঘরের পিছনের দরজা ব্যবহার করে ভেতরে ঢুকেছে। গত বছরের মে মাসে ট্রাক বোমা হামলায় দেড়শো জন নিহত হওয়ার পরে কাবুলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তারপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে। গত মাসে শিয়া কালচারাল সেন্টারে হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়। সিনহুয়া, এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন