শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাকশালী -বিএনপি

| প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে বাকশালী আইন হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপি নেতারা। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে খসড়া অনুমোদন করেছে, তাতে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীতে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে দলের নেতারা এই আশঙ্কার কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোটের এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাকশালী কায়দায় অতীতে যেভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়েছিল, আজও এ আইনের মাধ্যমে তা করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার চেয়েও ‘ভয়ঙ্কর’, কেননা যে যে কাজের কারণে ৫৭ ধারায় অভিযুক্ত করা যেত, সেসব কাজকে এই আইনে স¤প্রসারিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এটি বাকশালের ধ্যান-ধারণায় সংবাদপত্র এবং মুক্তমনের ব্যক্তিদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য করা হয়েছে। আমরা মন্ত্রিসভায় এই আইনের খসড়া অনুমোদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সমালোচিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা তথ্য প্রযুক্তি আইন থেকে সরিয়ে সেগুলো আরও বিশদ আকারে যুক্ত করে সোমবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
এ আইন পাস হলে হ্যাকিং; ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে অপপ্রচার; রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করতে বা ভয়ভীতি সৃষ্টির জন্য কম্পিউটার বা ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং ডিজিটাল উপায়ে গুপ্তচরবৃত্তির মত অপরাধে ১৪ বছরের কারাদান্ডের পাশাপাশি কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড দেওয়া যাবে।
এদিকে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ‘একটি কালো আইন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এটি পাস হলে মানুষের বাক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলেও কিছুই থাকবে না। সরকারের দুর্নীতি যাতে প্রকাশ না পায় বা কেউ প্রকাশ করতে না পারে সেজন্য এই আইন করা হয়েছে। ৫৭ ধারার মত এ আইনেও সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হবেন। রিজভীর মতে প্রস্তাবিত ওই আইনে বাক স্বাধীনতাকে অপরাধে পরিণত করা হয়েছে। গণতন্ত্রকামীরাই ক্রিমিনাল হিসেবে চিহ্নিত হবে এই আইনে। ফিরে যাওয়া হবে মধ্যযুগের অন্ধকারে। আমরা এই আইন সংসদে পাস করা থেকে বিরত থাকার আহŸান জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, এই আইন পাস হলে কোনো বিরূপ মন্তব্য করা যাবে না, প্রশ্ন করা যাবে না, সমালোচনা করলে সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদন্ড হবে। আমেরিকার সংবিধানে ১৭৯১ সালে তারা বলেছিল, সংসদ বাকস্বাধীনতা খর্ব করে কোনো আইন পাস করতে পারবে না। ওটা হল গণতন্ত্র। এটা পনেরশ’, ষোলশ’ এবং সতেরশ’ সালে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানিতে বড় বড় রাজারা করতেন। তারা তখন আইন করতেন রাজার ব্যাপারে, তাদের পুত্র, কন্যা, তাদের ড্রেস ও মুকুটের ব্যাপারে- কোনো বিরূপ মন্তব্য করলে শূলে চড়ানো হবে। হাজার হাজার লোককে মধ্যযুগে শূলে চড়ানো হয়েছে। মধ্যযুগ আর গণতন্ত্রের পার্থক্য হল- গণতন্ত্রে সবাই কথা বলতে পারবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, বহুল আলোচিত নিপীড়নমূলক আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭সহ ৫টি ধারা বিলুপ্ত করে ২৯ জানুয়ারি ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’র খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। যা আরও একটি কালো আইন হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, তাইফুল ইসলাম টিপু ও মুনির হোসেন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন