গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ইংরেজি বিভাগের সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসফর!!! গিয়েছিলাম বিশ্বের প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যখ্যাত সুন্দরবন। ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা ট্যুরের কাহিনী বর্ণনা করছিল এভাবেই। দিনটা ১৪ মার্চ সোমবার। এক বুক সুন্দর স্মৃতিময় মুহূর্তের খোঁজে যাচ্ছি সুন্দরবন। মাইনুল ভাইয়ের পরিচালিত খেয়াপাড় ট্যুরিজম থেকে আমাদের ভ্রমণযাত্রা টিম যাত্রা শুরু করবে সুন্দরবন।
চারদিনের এই ট্যুরে ১৪৬ জন শিক্ষার্থী এবং ইংরেজি পরিবরের সকল শিক্ষক সুন্দরবন সফরে এই অপার আনন্দকে ভাগ করে নেবার মানসে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগদান করেন।
দুপুর ১২টায় সবাই রিজার্ভ জাহাজে উঠলাম। প্রয়োজন মতো খাবার-দাবার ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র মাইনুল ভাই আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। সাগর পাড় করে রওনা দিলাম পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনের দিকে। জাহাজ এগোচ্ছে, চারদিকে সবুজ গাছ, মাঝখানে ছুটে চলা নদী। সত্যিই সে এক অপরূপ দৃশ্য। চোখ দুটোকে যেন ফেরানো যাচ্ছে না।
কিছুক্ষণের মধ্যে জাহাজ পৌঁছে গেল ‘করম-জাল’। দেরি না করে ক্যামেরা কাঁধে নেমে পড়লাম। রাস্তা ধরে সারিবদ্ধভাবে জুয়েল ভাইয়ের নেতৃত্বে হাঁটতেই হরিণ প্রজনন কেন্দ্র, কুমির প্রজনন কেন্দ্র। সামনে তাকাতেই সুন্দরবনের সুন্দরী, গেওয়া, কাকড়া, গোলপাতার সারি সারি গাছ। এসব দেখা শেষ হলে কবির ভাই বলল, চল জাহাজে যাই। আমাদের যেতে হবে আরও অনেক দূরে। করমজাল থেকে শেলা নদী হয়ে জাহাজ ছুটছিল বালেশ্বর নদীর মোহনার দিকে।
সকাল ১০টার দিকে আমরা পৌঁছে গেলাম কঁচিখালী অভয়ারণ্যে। সবাই নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। ফরেস্ট অফিস নির্দিষ্ট সীমানা বেঁধে দিল। সঙ্গে গার্ড, সাবধান মামারা (বাঘ) আছে। গার্ডের সঙ্গে তারেক ভাই, আমিরুল ভাই। ভয়ে গলাটা শুকিয়ে এলো। বনের ফাঁকে ঝাঁকে ঝাঁকে মায়াবি হরিণ। হরিণগুলো দল বেঁধে মাঠের মধ্যে ঘুরছে। ব্যাস, অনবরত ক্যামেরা ক্লিক করেই যাচ্ছি।
কিছুদূর এগুতেই প্রবল শো শো আওয়াজ কানে এলো। সারি সারি গাছের মাঝ দিয়ে একটু এগুতেই চোখ পড়লো বিশাল সৈকত। ফয়জুল ইসলাম, ছন্দা ঢালী, কাদের শেখ, তমা খানম, ফয়সাল, শিউলী ঠাকুর, লিখন ও মেহেদিসহ সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ল উত্তাল ঢেউয়ে ।
রাতে সৈকতে অবস্থান করলাম। সন্ধ্যা থেকে শুরু হলো সে কি আনন্দ সবার পারফরমেন্সে সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হলো জাহাজে। জাহাজে আমাদের অবস্থান তিন রাত আর যার দুই দিনই ছিল নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার আর অনুষ্ঠানমালা। ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রুম্পা দত্ত বলেন, সুন্দরবন ভ্রমণে আমাদের সব চেয়ে বড় অর্জন সুন্দরবনের বসবাস করা বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ যেমন, জেলে, মাঝি, মোওয়ালী ও ভাওয়লীদের জীবন প্রণালী ও তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সুন্দরবন নিয়ে তাদের বিচিত্র অভিজ্ঞতার কথা জানা।
ষ তন্ময় বিশ্বাস
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন