স্টাফ রিপোর্টার : শামসুল উলামা হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব (রহ.)-এর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকা রোববার সকাল ১০টায় ঢাকাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হযরত আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী বড় ছাহেব ফুলতলী। সম্মেলন উদ্বোধন করেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা ইমাদ চৌধুরী ফুলতলী বলেন, আমার নিবাস বাংলাদেশের এক সীমান্ত এলাকায়। সেখানো হাজারো এতীমের সাথে মায়ামাখা পরিবেশে নিরবে নিভৃতে জীবন অতিবাহিত করি। আর হাজারো শহীদের রক্তমাখা পথ মাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যেসব মজলুম মানুষ আমাদের দেশে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছে মাঝে মাঝে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। একবার গিয়ে দেখি দূরে কিছু যুবক রোহিঙ্গাদের জন্য বোঝা বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞেস করে জানতে পারি এরা তালামীযে ইসলামিয়ার কর্মী। মনে মনে বলি, যদি আমিও যুবক হতাম তাহলে এই কাফেলায় গিয়ে শরীক হতাম। এদের দেখে আবার যুবক হয়েছি, মনে শক্তি খুঁজে পেয়েছি। যুবকরা মানুষের মনে আগুন জ্বালাতে পারে, বৃদ্ধদেরও যুবক বানাতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। লেখাপাড়ার পাশাপাশি তাযকিয়া নাফস তথা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। প্রিয়নবী (সা.)-এর সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করতে হবে।
তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি রেদওয়ান আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মুহিবুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসাইন জাহেদ-এর যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্জ সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা একেএম মনোওর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ.আর.এম. আলী হায়দার মুর্শিদী, দর্শন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, আরবি বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল কাদির, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ফয়জুল মুনির চৌধুরী। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, আমেরিকা আল ইসলাহ ইসলামিক সেন্টারের প্রিন্সিপাল মাওলানা আ ন ম কুতুবুজ্জামান, আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকের জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা এমএ কাদির আল হাসান, চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, দিনাজপুর ভবানীপুর কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হাসান মাসুদ, আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মোঃ কুতবুল আলম, তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নজমুল হুদা খান, মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সাবেক সহ-সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান, আনজুমানে আল ইসলাহ ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসেন সালেহী ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজের লেকচারার মাওলানা নোমান আহমদ।
সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূনূর রহমান লেখনের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. ঈসা শাহেদী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রাকিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক প্রকাশনা ড. সৈয়দ শাহ এমরান, ফেনী ছাগলনাইয়া আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা হোসাইন আহমদ ভূইয়া, ঢাকা মদীনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, কুমিল্লা লাকসাম গাজীমুরা কামিল মাদরাসা প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ তাজুল ইসলাম, ঢাকা নয়াটুলা কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ রেজাউল করিম, ঢাকা মহাখালী গাউসিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ এজহারুল হক, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা মোঃ ফখরুল ইসলাম, কুমিল্লা লাকসাম আহমদিয়া ফাযিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, চান্দ্রগ্রাম সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, হবিবপুর সিনিয়র মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাকীম, আনজুমানে আল ইসলাহ সিলেট জেলা সহ-সভাপতি হাফিয তরিকুল ইসলাম তোফা, ঢাকা মহানগর সহ সাধারণ সম্পাদক ড. মোর্শেদ আলম ছালেহী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ হবে শান্তির দেশ। সহীহ ঈমান আকিদা ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রেখে সারা বিশ্বে বিশেষ করে মুসলিম উম্মার মধ্যে এদেশের বিশেষ অবস্থান ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, জাতি, ঈমান ও উন্নত চরিত্রের প্রয়োজনে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সাম্য, সম্প্রীতির শিক্ষা ধরে রেখে সংকীর্ণ ও হিংসাত্মক মনোভাব থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের মাতৃভূমিতে একটি গোষ্ঠী আছে এরা ইসলামের নামে সংকীর্ণ মনোভাব দেখিয়ে হিংসাত্মক ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে থাকে। এদের সম্পর্কে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেন, তালামীযে ইসলামিয়া সময়ে সময়ে নানা বাতিল আকীদা ও বিভ্রান্ত মতাদর্শের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, মূর্তি অপসারণ, নাস্তিক-মুরতাদদের প্রতিহতকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে তালামীযে ইসলামিয়া সফল ভূমিকা রেখেছে। আদর্শের কারণে তালামীযে ইসলামিয়া সকলের কাছে সমাদৃত। এ ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে তালামীয কর্মীদের কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, বাতিলরা বোমাবাজি করে, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এদের বিরুদ্ধে সরকারকে সোচ্চার করতে হবে। মাদরাসা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আদর্শ মানুষ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে হবে। নতুবা নৈতিকতাবিবর্জিত জাতিগোষ্ঠী তৈরী হবে।
দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক কবি মাওলানা রূহুল আমীন খান বলেন, দ্বীনের জন্য, সত্যের জন্য, আদর্শের জন্য রক্ত দিতে পারে এমন একটি সংগঠনের নাম বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া। মহানবী (সা.)-এর আদর্শের জন্য, সাহাবায়ে কেরাম ও আউলিয়ায়ে কেরামের প্রদর্শিত পথে প্রাণোৎসর্গ করতে তালামীযের কর্মীরা প্রস্তুত থাকে। সঠিক আদর্শ পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত থামবে না এ কাফেলা।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দুলাল আহমদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাছুম আহমদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হা. কাওছার আহমদ, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ উসমান গনী, অর্থ সম্পাদক ওয়ালীউর রহমান, সানী, অফিস সম্পাদক মোজতবা হাসান চৌধুরী নুমান, সহ অফিস সম্পাদক লিয়াকত আলী তালুকদার, শিক্ষা সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আহমদ আল জামিল, সহ-শিক্ষা সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার অজিউর রহমান আসাদ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মুহিত রাসেল, ঢাকা মহানগরী সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, শাবিপ্রবি সভাপতি নিজামুল ইসলাম আব্বাসী, ঢাবি সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসাইন, সিলেট পশ্চিম জেলা সভাপতি ফয়েজ আহমদ তাজির, সিলেট পূর্ব জেলা সভাপতি আব্দুল খালিক রুহিল শাহ, সিলেট মহানগরী সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, মৌলভী বাজার জেলা সভাপতি নিলুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম তালুকদার, হবিগজ জেলা সভাপতি সৈয়দ শাহেদুল হক, সিলেট প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি জোন সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আহবায়ক নাসির উদ্দিন খান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন